• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

উচ্চরক্তচাপ কে অবহেলা নয়!

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০১৯  

উচ্চ রক্তচাপ খুব সাধারণ সমস্যা হলেও জীবনের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক অবস্থা নিয়ে আসতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে থাকে মাথা ঘোরা এবং পেট ব্যথা। এই প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলেই আপনাকে প্রতিদিন রক্তচাপ পরীক্ষা করতে হবে। যখন রক্তচাপ দ্রুত এবং গুরুতরভাবে বেড়ে যায় হৃদস্পন্দনের ক্ষতি, স্ট্রোক, চোখের ক্ষতি এবং কিডনি ফাংশন হ্রাসের মতো নানা জটিলতারও সৃষ্টি হয়।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে, উচ্চ রক্তচাপের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে গুরুতর উদ্বেগ, নাল দিয়ে রক্ত পড়া, গুরুতর মাথাব্যাথা এবং শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা অন্তর্ভুক্ত। উচ্চ রক্তচাপ বা রক্তচাপের মাত্রা হঠাৎ বৃদ্ধি পায় এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন।

হাইপারসেন্সিটিভ সংকটের সাধারণত দুটি বিভাগ। যথা- জরুরি এবং অত্যধিক জরুরি। জরুরি উচ্চ রক্তচাপ সংকটে শরীরের অঙ্গের কোনও ক্ষতি হয় না। কিন্তু অত্যধিক জরুরি হাইপারটেনসিভ সংকট পরিস্থিতির ক্ষেত্রে শারীরিক অঙ্গগুলোরও ক্ষতি হয়।

কিছু সহজ কিন্তু কার্যকরী জীবনধারা সংশোধনের উপায়ের মধ্য দিয়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চাবি। অ্যালকোহল গ্রহণ কমান এই মুহূর্তেই। এছাড়াও, উচ্চ রক্তচাপের ব্যক্তিদের খাবারে কম লবণ যোগ করা উচিত এবং প্রসেসড এবং প্যাকেজযুক্ত খাবার যাতে সোডিয়ামের মাত্রা বেশি তা এড়িয়ে চলতে হবে। আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার অন্যান্য কার্যকরি উপায় হলো-

*ওজন কমান

আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ওজন কমাতেই হবে। নিজের কোমরের মাপ খেয়াল রাখুন। কোমর অঞ্চলের ওজন বেশি হলে তা রক্তচাপ বাড়ায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪০ ইঞ্চির বেশি কোমর হলে আর নারীদের ক্ষেত্রে ৩৫ ইঞ্চির বেশি হলে তা উচ্চ রক্তচাপ বাড়ায়।

*নিয়মিত ব্যায়াম করুন

আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৫০ মিনিটের ব্যায়াম অবশ্যই প্রয়োজন। হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং, সাঁতার ও নাচের মতো অ্যারোবিক ব্যায়ামগুলো আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

*সুস্থ খাদ্য খান

আপনার খাদ্যে প্রচুর তাজা ফল এবং সবজি যোগ করুন। পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। কারণ এটি রক্তচাপের উপর সোডিয়ামের প্রভাবকে হ্রাস করতে সহায়তা করে। পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ খাবারগুলো হল কলা, অ্যাভোকাডো, পালং শাক, মাশরুম, শশা, ব্রোকলি, কমলালেবু এবং মিষ্টি আলু।

*ধূমপান বন্ধ করুন

ধূমপান শেষ করার পরেও বেশ কিছু মিনিট ধূমপান আপনার রক্তচাপ বাড়ায়। আপনার শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রা পুনরুদ্ধার করতে ধূমপান ছাড়ুন।

*ক্যাফেইন ছাড়ুন

ক্যাফেইন আপনার রক্তচাপ মাত্রা বাড়তে পারে। আপনার রক্তচাপ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনার ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া সীমিত করুন।চা, কফি তে এটি বেশি মাত্রায় পাওয়া যায়।

*কম চাপ নিন

চাপ উচ্চ রক্তচাপ মাত্রা বাড়ানোর অন্যতম প্রধান কারণ। স্ট্রেস বা মানসিক চাপের প্রতি আপনার মনোভাব পরিবর্তন করে কম চাপ নিন। যোগ এবং ধ্যানও চাপ হ্রাস করার ভাল উপায়।


অনেকে উচ্চরক্তচাপ কে শুধুমাত্র তখনই আমলে নেন যখন কোনো প্রকার কমপ্লিকেশন দেখা দেয় বা শারীরিক অসস্থি দেখা দেয়। কিন্তু আসলে উচ্চরক্তচাপ ঠিক মত চিকিৎসা করা না হলে বিপদ ঘটা খুবই স্বাভাবিক। হার্ট, চোখ, কিডনী ছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গের স্বাভাবিক কাজে প্রভাব ফেলে,দীর্ঘদিন চিকিৎসা না করা হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এসব অঙ্গ। তাই জীবনযাপন নিয়ন্ত্রন এর পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসক এর পরামর্শ নিতে হবে, উচ্চরক্তচাপ এর চিকিৎসা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ,  নেফ্রলজিস্ট (কিডনী রোগ বিশেষজ্ঞ)  দ্বারা হয়ে থাকে।



মোঃশাকিল আহমেদ 
শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ
বরিশাল