• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে করণীয়

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯  

প্রতিদিন আমাদের যা কিছু দরকার হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো বিদ্যুৎ। ফ্যান, বাতি, এসি, ওভেন, টিভি, কম্পিউটার- কীসে লাগে না এই বিদ্যুৎ! একদিন বিদ্যুৎ না থাকলেই বোঝা যায় এর অপরিহার্যতা ঠিক কতটুকু। বিদ্যুতের নানা কাজে অংশ নিতেই হয় আমাদের। তাই সাবধানতা না মানলে অনেক সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

মানবদেহ তড়িতের সুপরিবাহী। তাই বিদ্যুৎপ্রবাহ আছে এমন কোনও খোলা তার বা বোর্ডের সংস্পর্শে এলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে থাকেন অনেকেই। বিদ্যুতের প্রাবল্যের ওপর মানুষের বেঁচে থাকাও নির্ভর করে। খুব কম সময়ে শরীরে অনেকটা বিদ্যুৎ চলে গেলে সেই মানুষের তৎক্ষণাৎ মৃত্যুও অসম্ভব নয়।

যিনি বিদ্যুৎপৃষ্ট হন তার তো কিছুই করার থাকে না। তখন আশেপাশে যারা থাকেন তারা কিছু করণীয় মেনে চললে বেঁচে ফিরতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তিটি।

তাই হঠাৎ কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে তাকে বাঁচাতে করণীয় কি সে বিষয়েই লিখছি।

**করণীয় গুলো হচ্ছেঃ 
#*কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে কোনোভাবেই তার গায়ে হাত দেবেন না। গায়ে পানিও দেবেন না। বরং ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিন। ধাক্কা দেওয়ার সময় শুকনো উলের পোশাক, কাঠের টুকরো, খবরের কাগজ অথবা রাবার জাতীয় তড়িৎ অপরিবাহী বস্তু দিয়ে সজোরে আঘাত করে সরান। তাতে বিদ্যুতের উৎস থেকে সেই ব্যক্তির ছিটকে যাওয়া সম্ভব হবে।

#দ্রুত কাউকে মেইন সুইচ বন্ধ করতে বলুন। অনেক সময় এই মেইন সুইচ বন্ধ করতে গিয়ে যে সময় নষ্ট হয়, তাতেই প্রাণ চলে যায় বিদ্যুস্পৃষ্ট ব্যক্তির। তাই সামনে থাকলে তাকে বিদ্যুতের উৎস থেকে সরানোর চেষ্টাই প্রথম করুন, সঙ্গে অন্য কাউকে নির্দেশ দিন মেইন সুইচ বন্ধ করার। একান্ত সে উপায় না থাকলে বা হাতের কাছে তড়িৎ অপরিবাহী কিছু না মিললে দ্রুত মেইন সুইচ বন্ধের দায়িত্ব নিন।

#বিদ্যুৎ থেকে মুক্তি পেলেও অনেক সময় ব্যক্তির শ্বাসপ্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। তেমন হলে বুকের উপর জোরে চাপ দিয়ে হৃদযন্ত্র চালু করুন।

#রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।

**সাবধানতাঃ 
#বিদ্যুতের কাজ করার সময় মেইন সুইচ বন্ধ করে নিন আগেই।

#পায়ে রাবারের জুতা দিয়ে বিদ্যুতের কাজ করুন, খালি পায়ে এমন কাজে না হাত দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

#কোনোভাবেই ভেজা হাতে বাড়ির বৈদ্যুতিক সুইচে হাত দেবেন না।

#খোলা তার এড়িয়ে চলুন, রাস্তায় কোনো কারণে পানি জমে থাকলে সেখানে খালি পায়ে বা রাবার, স্পঞ্জ ভিন্ন অন্য উপাদানের জুতা পরে হাঁটাচলা করবেন না।

#বাড়ির সব কটি বৈদ্যুতিক তার ও আর্থিং ঠিক আছে কি না দেখে নিন।

প্রযুক্তির উৎকর্ষ হওয়ার সাথে সাথে এই প্রযুক্তির যে একটি বিরুপ প্রভাব আছে তাও আমাদের উপলব্ধি করা উচিত।আজকের বিশ্বে যতধরনের প্রযুক্তি আছে তার অধিকাংশ ই বিদ্যুৎ চালিত। তাই বিদ্যুৎ নিয়ে দূর্ঘটনা হর হামেশা ঘটছে। যদি।আমরা সচেতন না হই তবে এটি ঘটতাই থাকবে।শিশুরা এক্ষেত্রে অনেক বড় ঝুকিতে থাকে কৌতুহল বশত শিশু অনেক কিছু স্পর্শ করে। এতে দেখা যায় কারেন্টের তার স্পর্শ করার ফলে অথবা নীচে থাকা মাল্টিপ্লাগে আংগুল ঢুকিয়ে দেয়ার ফলে অনেক শিশু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। কোনো শিশু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে সাথে সাথে যেকোন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।আর যারা বিদ্যুৎ এর কাজ করেন তাদের কেও সচেতন হয়ে কাজ করতে হবে, নিয়ম মানতে হবে। নতুবা বিদ্যুৎ নামক আশীর্বাদ প্রাণনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।



মোঃশাকিল আহমেদ 
শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ 
বরিশাল