• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

রাসূল (সা.) যেভাবে খাবার খেতেন

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০১৯  


প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ  (সা.) প্রতিদিন কমবেশি পানাহার করতেন। তিনি কীভাবে খাওয়া-দাওয়া করতেন এ বিষয়ে বিখ্যাত হাদিসগ্রন্থ শামায়েলে তিরমিজিতে অনেক হাদিস এসেছে। 

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) কখনো টেবিলে আহার করেননি এবং ছোট পেয়ালা বিশিষ্ট খাঞ্চায়ও খানা খাননি। আর তার জন্য কখনো চাপাতি রুটিও (চিকন পাতলা রুটি) তৈরি করা হয়নি। ইউনুস বলেন, আমি কাতাদাহকে জিজ্ঞাসা করলাম, তাহলে কোন জিনিসের ওপর তাঁরা খানা খেতেন? (অর্থাৎ খাওয়ার সময় কী বিছিয়ে খানা খেতেন?) তিনি বললেন এ (চামড়ার) দস্তরখানার ওপর। এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, দস্তরখানা বিছিয়ে খাবার খাওয়া সুন্নত। 

বর্তমানে যে কোনো কাপড় বা রেক্সিন বিছিয়ে তার ওপর খাবারের প্লেট রেখে খেলে দস্তরখানা বিছানোর সুন্নত আদায় হবে। দস্তরখানা বিছানো সুন্নত এ কারণে যে, কোনো খাবার পড়ে গেলে তা যেন আবার তুলে খাওয়া যায়। এতে খাবারের অপচয় থেকে বাঁচা যায়। উপরের হাদিস থেকে আরো একটি বিষয় জানা গেল যে, নবী করিম (সা.) টেবিলে বসে খাবার খেতেন না। অপর হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) ফ্লোরে বা বিছানায় বসে খাবার খাওয়ার কারণ বর্ণনা করে বলেছেন, ‘আল্লাহ আমাকে বিনয়ী বান্দা বানিয়েছেন। তিনি আমাকে অহংকারী নাফরমান বানাননি।’ (আবু দাউদ)। 

রাসূলে আকরাম (সা.) কখনো একা একা খাবার খেতেন না। বরং সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে খেতেন। এ বিষয়ে হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : তোমরা একত্রে খানা খাও, পৃথক পৃথক খেও না। কেননা জামাতের সঙ্গে (খাওয়ার মধ্যে) বরকত হয়ে থাকে। (ইবনে মাজাহ : ২৪৪, মেশকাত : ৩৭০)।

মেহমানের যারা আপ্যায়ন করে তাদের মর্যাদা সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেন, উটের চোটের দিকে ছুরি যত দ্রুত অগ্রসর হয় তার চেয়ও দ্রুত অগ্রসর হয় কল্যাণ (বরকত) ওই গৃহের দিকে যাতে (মেহমানদের অনর্গল) খানা খাওয়ানো হয়। অর্থাৎ বেশি মেহমানদারি করা হয়। (ইবনে মাজাহ : ২৪৮-৪৯, মেশকাত : ৩৭০)। 

প্রিয় নবী (সা.) কখনো রান্না করা মাংস ছুরি বা কাঁটাচামচ দিয়ে কেটে খেতেন না। তিনি বলেছেন, তোমরা ছুরি দ্বারা গোশত কেটো না। কেননা তা আজমী (অনারব)-দের আচরণ-অভ্যাস। বরং তোমরা তা দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে খাও। কারণ এটা অতি সুস্বাদু এবং বেশি হজমদার। (আবু দাউদ ২ : ১৭৪, মেশকাত পৃ. ৩৬৬)। 

খাদ্যপাত্রের তলচাট (নিচে লেগে থাকা অংশ) রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে মোহিত করত। অর্থাৎ রাসূল (সা.) পাত্রের অবশিষ্ট খাদ্য যা তার গায়ে লেগে থাকত তা খেতে খুব পছন্দ করতেন। (তিরমিজি, মেশকাত : ৩৬৬)। 

হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম (সা.) আঙ্গুলগুলো এবং খাদ্যপাত্র চেটে খেতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন : তোমরা জান না যে, কোন আঙ্গুল বা কোন লোকমায় বরকত নিহিত রয়েছে। (মুসলিম ২ : ১৭৫, মেশকাত পৃ. ৩৬৩)। 

হজরত নুবায়শা (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন : যে ব্যক্তি কোনো পেয়ালাতে খাবার খায় এবং খাবারের শেষে তা চেটে খায়, পাত্রটি তার জন্য আল্লাহর কাছে মাগফেরাত কামনা করে। (আহমাদ, তিরমিজি, মেশকাত : ৩৬৬)।