• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

দেড় বছর পর দেশে ফিরে গেলেন ভারতীয় প্রতিবন্ধী যুবক

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৩  

অবশেষে স্বজনদের কাছে ফিরতে পারলেন মানসিক ভারসাম্যহীন সুবাস নন্দী (২২) নামের এক ভারতীয় প্রতিবন্ধী যুবক। দু’বছর আগে তিনি নিখোঁজ হন ভারতের উত্তর প্রদেশের বাহরাইচ জেলার রামনগর কান্ডা থেকে। দেড় বছর আগে তাকে উদ্ধার করা হয় বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলা থেকে। 

তার সন্ধান পেয়ে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে মাঠে নামেন অ্যামেচার ভিডিও সোসাইটি বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল হুদা। তারই প্রচেষ্টায় অবশেষে মঙ্গলবার বিকালে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হলো তাকে। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসের কর্মকর্তার। মানসিক ভারসাম্যহীন সুবাস নন্দীকে ফিরে পেয়ে আবেগাল্পুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার স্বজনরা।

জানা যায়, ‘রামনগর কান্ডা’ এই শব্দের সূত্র ধরেই প্রযুক্তির সাহায্যে কার্যত অসাধ্য সাধন করেন বাংলাদেশের চিত্র সাংবাদিক শামসুল হুদা। তার তৎপরতায় বাংলাদেশের একটি আশ্রমে আশ্রয় পাওয়া ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ভারতীয়ের বাড়ির খোঁজ পাওয়া যায়।

অ্যামেচার ভিডিও সোসাইটি বাংলাদেশ-এর সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল হুদা জানান, গত বছরের জুনে নীলফামারী জেলার ডিমলায় এক রিকশা চালক ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ডিমলা থানায় পৌঁছে দেন। ওই যুবকের কোমরের হাড় ভাঙা ছিল। তাই তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হয়ে ওঠার পরে তার স্থান হয় রংপুরের একটি আশ্রমে। গত বছর ওই আশ্রমে তাকে দেখেন তিনি। 

শামসুল হুদা জানান, হিন্দিভাষী ওই ব্যক্তির কথা থেকে ‘রামনগর কান্ডা’ কথাটি বুঝতে পারি। কিন্তু ভারতের বাসিন্দা বুঝতে পারলেও কোথায় তার বাড়ি, তা বুঝতে পারিনি। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি।

রামনগর কান্ডা শব্দটি দিয়ে গুগল ম্যাপে সার্চ করেন। সেখান থেকে জানতে পারেন, রামনগর কান্ডা উত্তর প্রদেশের বাহরাইচ জেলায় অবস্থিত। কিন্তু রামনগর কান্ডার কোথায় ওই ব্যক্তির বাড়ি, তা জানার জন্য শামসুল হুদা ফোন করেন লখনউ রেডিয়ো ক্লাবের সেক্রেটারি দীনেশচন্দ্র শর্মাকে। ভারত থেকে জানা যায়, ওই ব্যক্তির বাড়ি রামনগর কান্ডার নিধি পুরওয়া গ্রামে।

দীনেশ বলেন, আমি খোঁজখবর করে শামসুলকে নিধি পুরওয়া গ্রামের প্রধানের নম্বর দেই। সেই প্রধানকে ফোন করে ওই ব্যক্তির পরিবারের খোঁজ পান শামসুল হুদা। ভিডিও কলের মাধ্যমে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির সঙ্গে তার বাবা-মা-বোনের কথাও বলিয়ে দেন তিনি। 

প্রায় দেড় বছর পরে বাংলাদেশে ছেলেকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার আপনজনেরা।

এরপর বিষয়টি অবহিত করা হয় বাংলাদেশের ভারতীয় দূতাবাসকে। একটি টেলিভিশনের সহযোগিতায় প্রায় ছয় মাস পর অবশেষে তাকে মঙ্গলবার বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা ও বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান।