• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

আটক হেফাজত নেতাদের মুক্তি আমাদের হাতে নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২১  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, হেফাজতের আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়া আমাদের হাতে নেই, বিচার বিভাগের হাতে। সেটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন ঘটনায় অনেকেই আটক হয়েছে। ঘটনা সত্যিকারে যারা ঘটিয়েছে তাদের ছাড়া বাকিদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

শনিবার (২৭ নভেম্বর) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আল্লাহ, রাসুল (স.) ও কোরআন-সুন্নাহ তথা ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান রেখে আইন পাস করার জন্য সরকারের নিকট আহ্বান জানিয়ে এই সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা বলেছেন হেফাজত অরাজনৈতিক দল, হেফাজত রাজনীতি করে না, নির্বাচনে যায় না। বাইরে থেকে দুষ্কৃতকারীরা এসে আপনাদের অপবাদ অথবা কুমন্ত্রণা দিচ্ছে। সেখানে আপনারা ভুল করছেন অথবা ভুল করে ফেলেছেন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা বারবার বলতে চাই আপনারা আধ্যাত্মিক লাইনের চর্চা করেন, কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী চলেন। আপনারা যেহেতু অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, সেহেতু কেন আপনাদের মাঝে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঘটে? আপনাদের আরও সাবধান হওয়া উচিত।

প্রধানমন্ত্রী হেফাজত নিয়ে ভাবেন মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, যিনি (শেখ হাসিনা) রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন তিনি একজন পাকা মুসলিম। তিনি সকালে কোরআন তিলাওয়াত করে কাজ শুরু করেন। আলেম-ওলামাদের প্রতি তার যথেষ্ট শ্রদ্ধা-ভক্তি রয়েছে। আপনাদের মতো আমাদের প্রধানমন্ত্রী শফী সাহেবকে (আল্লামা শাহ আহমদ শফী) অত্যন্ত ভালোবাসতেন। আপনাদের নিয়ে চিন্তা করেন। আপনাদের যে ভুল ধারণা আছে, আপনারা উপলব্ধি করতে পারবেন আসলেই এগুলো ভুল ধারণা।

এর আগে ওলামা সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম কোনো রাজনৈতিক দল নয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক নির্বাচনে হেফাজতের কোনো প্রার্থী নেই। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হেফাজতের সংশ্লিষ্টতা নেই। আমরা বারবার বলেছি, এখনো বলছি, কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা ক্ষমতা থেকে নামানো আমাদের এজেন্ডা নয়। হেফাজতের ব্যানারে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করার কোনো সুযোগও নেই।

তিনি বলেন, আমরা শুধু ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও তাহজিবের বিকাশ এবং নাস্তিক্যবাদের প্রতিরোধে কাজ করে যাবো। মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে ধর্ম অবমাননা ও কটূক্তির সব প্রয়াস বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা সর্বদা অব্যাহত থাকবে। হেফাজত তার সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তথা ১৩ দফা দাবি সুন্দর ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাবে। আমরা সরকারের শত্রু নই, সরকারের কাজ সরকার করুক, আমাদের কাজ আমরা করবো।

হেফাজতের আমির আরও বলেন, বর্তমানে আমরা ইতিহাসের কঠিন সময় পার করছি, আমাদের চতুর্দিকে কান রাখতে হবে। প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে কেউ বা কোনো গোষ্ঠী ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করছে কিনা সে বিষয়ে সম্পূর্ণ সতর্ক থাকতে হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, যেন কেউ না কেউ প্রতিহিংসা এবং সহিংসতায় জড়িয়ে দিয়ে আমাদের মধ্যকার শান্তি, নিরাপত্তা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করতে চাচ্ছে। তাই সরকারের কাছে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, সরকার যেন আল্লাহ, রাসুল (স.), কোরআন-সুন্নাহ তথা ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরূদ্ধে জাতীয় সংসদে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আইন পাস করে।

সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জিসহ অন্যদের মধ্যে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, আল্লামা সাজিদুর রহমান, আল্লামা ইয়াহইয়া, আল্লামা তাজুল ইসলাম, আল্লামা আব্দুল আওয়াল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।