• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

বিশ্বকাপ ফুটবলের মাঠের আদলে ৮ স্টেডিয়াম বানালেন মাসুদ

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২২  

কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবলের পর্দা উঠছে আগামীকাল রোববার। এরইমধ্যে দেশজুড়ে বাড়ছে বিশ্বকাপ ফুটবলের উত্তাপ-উত্তেজনার পারদ। দেশের নানা জায়গায় ভক্ত-সমর্থকদের নানা আয়োজন চোখে পরার মত। এবার ফরিদপুরে দেখা একটু ব্যতিক্রমী আয়োজন। কাতারের মাঠে বসেই এই বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার আয়োজন চলছে। বিশাল ব্যয়ে সেখানে নির্মিত হচ্ছে কাতারের মাঠের আদলেই ৮টি স্টেডিয়াম।

আর্জেন্টিনার তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসির কাতার প্রবাসী একজন ভক্ত পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছেন এই মাঠের নমুনা। এলাকার ফুটবলপ্রেমীদের নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে ফুটবলের এই সর্ববৃহৎ আসর উপভোগ করাই তার উদ্দেশ্য। এরমধ্যে সেখানে উৎসবমুখর আমেজও তৈরি হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এলাকাবাসীকে নিয়ে খিঁচুড়ি ভোজের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যার পর প্রতিটি মাঠ ঘিরে ব্যবস্থা করা হয় আলোকসজ্জার। অনেকের কাছে পাগলামি হলেও প্রিয় খেলোয়াড়ের ভালোবাসায় সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তার কাছে এটি ভক্তি-শ্রদ্ধারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র।

বিশ্বকাপ ফুটবলের মাঠের আদলে স্টেডিয়াম

শহরের বর্ধিত পৌর এলাকার ৮ নম্বর ভাজনডাঙ্গায় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল সংলগ্ন মাঠে এই বিশ্বকাপ ফুটবলের আদলে ৮টি মাঠ তৈরি করা হচ্ছে।  স্থানীয়রা জানায়, ভাজনডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ও কাতার প্রবাসী মাসুদুর রহমান আর্জেন্টিনা দল ও সেই দলের খেলোয়াড় মেসির ভক্ত। তিনিই এসব নির্মাণ করছেন নিজ খরচে। এলাকার তরুণদের মাঝে এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের চতুর্পাশে গোলাকৃতির আটটি স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে বাঁশ ও পলিপেপার দিয়ে। সেগুলো বর্ণিল রঙের বাল্ব দিয়ে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। এসব মাঠে বসে বড় পর্দায় খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হবে। রাত দুপুরে দূর-দূরান্ত হতে খেলা দেখতে আসা ভক্তদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে। মাঠে বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণকারী ৩২টি দলের পতাকা স্থাপন করা হয়েছে।

বিশ্বকাপ ফুটবলের মাঠের আদলে স্টেডিয়াম
জানা গেছে, মাসুদুর রহমানের বাবা মো. আব্দুর রব ফরিদপুরের বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চাকরি করতেন। পাশাপাশি টিউশনি করতেন। এ জন্য এলাকায় তিনি রব মাস্টার নামে পরিচিত। এই রব মাস্টারের দুই ছেলে ও তিন মেয়ের একজন এই মাসুদ। ২০০৮ সালে কাতারে যান ভাগ্যের অন্বেষণে। মাঝখানে চার বছর দেশে থেকে ২০১৫ সালে আবার সেখানে যান। কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হলে তিনি নিজে প্রত্যেকটি মাঠ ঘুরে ছবি তুলে আনেন। এরপর দেশে নিজের মহল্লায় সেসবের আদলে মাঠ তৈরি করে সবাইকে একটু চমকে দেয়ার ভূত চাপে তার মাথায়। ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে আসেন।মাসুদুর রহমান জানান, তিনি মাস্টার্স পাস করে কম্পিউটারের ওপর তিন মাসের ডিপ্লোমা করেন। দেশে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে আইটি সেক্টরে চাকরিও করেছেন। এরপর তিনি কাতারে যান। মাসুদ বলেন, আমি আর্জেন্টিনা দলের সাপোর্টার। আমার প্রিয় খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। প্রিয় দল ও খেলোয়াড়ের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এই চেষ্টা। একটু ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা করছি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন কাতারে অবস্থান করছি আমি। এখন ছুটিতে দেশে এসে এই উদ্যোগ নেই। কাতারের ফুটবল স্টেডিয়ামগুলো স্বচক্ষে দেখে এসেছি। এখন এখানে সেভাবেই ৮টি মাঠ তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও দর্শণার্থীদের ফ্রি থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ রয়েছে আরো বিভিন্ন পরিকল্পনা।

 

বিশ্বকাপ ফুটবলের মাঠের আদলে স্টেডিয়াম

স্থানীয় বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার রিয়াদ হোসেন বলেন, অনেকের কাছে পাগলামি মনে হলেও এলাকার ফুটবল ভক্তদের মাঝে দারুণ উম্মাদনা তৈরি হয়েছে। আশেপাশের মানুষও সেখানে যাচ্ছেন। এতে এই এলাকার নাম ছড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি মানুষ এই কাতার প্রবাসী মাসুদকেও চিনছেন।

এস এম রুবেল নামে আরেক তরুণ বলেন, আমাদের কাছে সত্যিই এটি বিস্ময়কর। সারা দেশের কোথাও আপনি এমন আয়োজন পাবেন না। এটি সারা দেশের ব্যতিক্রমী আয়োজন। এলাকায় এ নিয়ে বেশ সাড়া পড়ে গেছে।