• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

পিরোজপুর সংবাদ

ঘরে বউ আনলেন ‘৩৮ ইঞ্চি’ উচ্চতার আব্বাস

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২৩  

শারীরিক প্রতিবন্ধিতা জয় করে ঘরে নতুন বউ এনেছেন বাগেরহাটের বাসিন্দা ৩৮ ইঞ্চি উচ্চতার আব্বাস শেখ (২৫)।  শুক্রবার বিকেলে ৩৭ ইঞ্চি উচ্চতার সোনিয়া খাতুনকে (২০) বিয়ে করেন তিনি। দুই পরিবারের সম্মতিতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়।
নববিবাহিত আব্বাস শেখ রামপাল উপজেলার শ্রিফলতলা গ্রামের আজমল শেখের ছেলে। তার স্ত্রী সোনিয়া খুলনার ডাকবাংলো এলাকার সেলিম গাজীর মেয়ে।

জানা গেছে, রামপাল সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আব্বাস। তার নববিবাহিত স্ত্রী সোনিয়া খাতুন খুলনার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে তার পড়ালেখা বিলম্বিত হয়।

শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে ছোটবেলা থেকেই বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী, সহপাঠী ও আত্মীয়স্বজনের কাছে হাসিঠাট্টার পাত্র ছিলেন আব্বাস। কিন্তু সেসবের তোয়াক্কা না করে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন তিনি। স্নাতক শেষে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার ইচ্ছা রয়েছে তার। সেই সঙ্গে স্ত্রীকেও উচ্চশিক্ষিত করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন আব্বাস শেখ।

নিজের নতুন জীবন নিয়ে আব্বাস বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় অনেকে আমাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করত। তবে আমি কারো কথা নিয়ে মাথা ঘামাইনি। বন্ধুরা বলত, আমি কখনো বিয়ে করতে পারব না। আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না। আল্লাহর রহমতে বিয়ে করেছি। শান্তিতে সংসারও করব।’

আব্বাস আরো বলেন, ‘বছর দেড়েক আগে পরিবারের পক্ষ থেকে পাত্রী পছন্দ করে রাখা হয়েছিল। গত ২০ অক্টোবর দুই বোনজামাইসহ আমি দেখতে গিয়ে সোনিয়াকে পছন্দ করি। আজ শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আমি তাকে বাড়ি নিয়ে এসেছি। পরিবারের পছন্দে বিয়ে করেছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেন সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারি।’

আব্বাসের মা নাজমা বেগম বলেন, ছোটবেলায় এক হাতে বই আর এক হাতে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছি। অনেক কষ্টে মানুষের কথা শুনে ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। আমার দুই মেয়ে এবং একমাত্র ছেলে আব্বাস। অনেক কষ্টের ধন আমার, ওর জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন।

আব্বাসের বিষয়ে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ‘শারীরিকভাবে কিছুটা খাটো হলেও আব্বাস বেশ সামাজিক মানুষ। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাঁকে অংশগ্রহণ করতে দেখেছি। বিয়েতে আমাকে দাওয়াত করেছিলেন। তাঁর গায়েহলুদে উপস্থিত ছিলাম। নবদম্পতিকে আমি শুভেচ্ছা জানাই।’