• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

শীতে শিশুর ডায়রিয়া হলে যা করবেন, যা করবেন না

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২২  

শীতে বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। বিশেষ করে শীতে শিশুদের সবচেয়ে বেশি ডায়রিয়ার সমস্যা হতে দেখা যায়। যাকে বলে কোল্ড ডায়রিয়া। শিশুর এই সমস্যা মা-বাবাকে বেশ চিন্তায় ফেলে দেয়। কারণ ডায়রিয়ায় শিশু অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতে কি করবেন আর কি করবেন না তা অনেক মা-বাবাই বুঝে উঠতে পারেন না। 

এই বিষয়ে জেড এইচ শিকদার স্পেশালাইজড হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মারিয়া কিবতিয়া বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক-  

তিনি বলেন, সাধারণত বুকের দুধ পান করার পর বা ছয় মাস বয়সী শিশু থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের এ ধরনের ডায়রিয়া বেশি হয়। ডায়রিয়া হলে শিশুর পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তবে সব সময়ই যে শিশুর পানিশূন্যতা হবে এ রকম নয়। 

যদি শিশুর পানিশূন্যতা দেখা দেয় তবে শিশুর মুখ ও জিভ শুকিয়ে যায়। পেটের চামড়া ধরে টান দিয়ে ছেড়ে দিলে ধীরে ধীরে আগের জায়গায় ফিরে যাবে। এ সময় পানিশূন্যতা দেখা দেয় এবং শিশুর পানি পানের প্রতি কোনো আগ্রহ থাকে না। মারাত্মক পানিশূন্য হয়ে শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। রক্তচাপ বেশ কমে যায়। এ সময় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে শিশুকে শিরায় স্যালাইন দিতে হয়।

কারণ

কোল্ড ডায়রিয়ার জন্য ‘এডিনো’ ভাইরাসকে দায়ী করা হয়। এই ভাইরাস শিশুর শরীরে ঠান্ডা যেমন বাড়ায়, তেমনি ডায়রিয়াও হয়।

লক্ষণ

** দিনে দুবার, তিনবার, পাঁচবার বা তার অধিকবার পানির মতো পায়খানা।

** শিশুকে যে পাত্রে বা কনটেইনারে মলত্যাগ করানো হবে, মলত্যাগ সেই পাত্রের আকার ধারণ করবে। পায়খানা স্থির থাকলে বা পাত্রের আকার ধারণ না করলে, তাকে ডায়রিয়া বলা যাবে না।

** এ ধরনের ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত শিশুর মলের সঙ্গে কোনো রক্ত দেখা যায় না বা আমাশয় হয় না। তবে মলে পানি বা জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি থাকে।

** স্বাভাবিকের চেয়ে পায়খানার পরিমাণ বেশি হয়।

** জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া বা সর্দি, হাঁচি, কাশি ইত্যাদি থাকতে পারে।

** বারবার বমিও হতে পারে।

চিকিৎসা

কোল্ড ডায়রিয়ার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তেমন কোনো চিকিৎসার দরকার হয় না। এর চিকিৎসা খুবই সাধারণ এবং তা হলো, মুখে খাওয়ার স্যালাইন ও জিংক খাওয়ানো। ছয় মাসের কম বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে শুধু মায়ের বুকের দুধ ও অল্প অল্প খাবার স্যালাইন খেতে দিতে হবে। এতেই ডায়রিয়া ভালো হয়ে যায়, অন্য কোনো ওষুধ দেওয়া লাগে না। ডায়রিয়া সেরে যেতে সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিন এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুই সপ্তাহের মতো সময় লাগে।

এ সময় সম্ভব হলে খাওয়ার স্যালাইনের পাশাপাশি ভাতের মাড়, চিড়ার পানি, ডাবের পানি, ফলের রস, কাঁচা কলার ভর্তা ইত্যাদি খেতে দিন। খাবার স্যালাইন ঘরে না থাকলে হাতে তৈরি স্যালাইন বানিয়ে পান করান। জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল-জাতীয় জ্বরের সিরাপ, ঠাণ্ডার জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন সিরাপও দেওয়া যেতে পারে। শুরুতেই খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ালে পানিশূন্যতা দেখা দেয় না।

যা করবেন না

অনেকে স্যালাইনের কিছু অংশ পানির সঙ্গে গুলিয়ে পান করায়, যা মোটেও ঠিক নয়। এতে স্যালাইনে লবণের পরিমাণ বেশি হয়ে শিশুর ব্রেইনে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। বরং শিশু যতটুকুই পান করুক না কেন, স্যালাইনের পুরো অংশ পরিমাণমতো পানির সঙ্গে মিশিয়ে সেই পানি বারবার খাওয়াতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পর স্যালাইন মেশানো বাকি পানি ফেলে দিতে হবে। শিশুর ডায়রিয়া হলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করা যাবে না। মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না। বমি হলেও স্যালাইন বন্ধ করা যাবে না। বরং বমি বন্ধ হলে বা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে অল্প অল্প করে খাওয়ার স্যালাইন দিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ দেওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে, ভাইরাসজনিত কোল্ড ডায়রিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিকের কিন্তু কোনো ভূমিকা নেই।