• সোমবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ||

  • অগ্রহায়ণ ২৫ ১৪৩০

  • || ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
যুক্তরাষ্ট্র যেন বাংলাদেশকে আর মানবাধিকার শেখাতে না আসে: রাষ্ট্রপতি মার্চের দিকে দুর্ভিক্ষ ঘটাতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বিএনপির পরবর্তী পরিকল্পনা দেশে দুর্ভিক্ষ ঘটানো : প্রধানমন্ত্রী আজ কালকিনি হানাদার মুক্ত দিবস বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিডিপিতে বস্ত্র খাতের অবদান ১৩ শতাংশ : প্রধানমন্ত্রী নিউজউইকে নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী প্রথমবার যাত্রী নিয়ে পর্যটন নগরীতে পৌঁছাল ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহায়তার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

হঠাৎ আঘাত পেলে কী করবেন

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

কথায় আছে, বিপদ কখনো বলে কয়ে আসে না। যেকোনো মুহূর্তেই আসতে পারে বিপদ। হঠাৎ এইসব বিপদের মধ্যে আপনার বা আপনজনের দেহের কোথাও কেটে যাওয়া, আঘাত পাওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়া, খিঁচুনি ওঠা, আগুনে বা গরম পানিতে পোড়া, পানিতে ডুবে যাওয়া ও সাপের কামড় অন্যতম। এছাড়া অন্যান্য শারীরিক জরুরি অবস্থা, যেমন হঠাৎ করেই যে কোনো সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়া, নাক দিয়ে হঠাৎ রক্তপাত, হাঁপানির টান বা আকস্মিক অজ্ঞান হয়ে গেলে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।
আর এসব সমস্যা যদি রাতের দিকে হয় তাহলে বিভিন্ন কিছুর দুষ্প্রাপ্যতায় পাল্লা দিয়ে জটিলতাও বাড়ে। এছাড়াও রাস্তায় হঠাৎ দুর্ঘটনায় পড়লে কিছু চিকিৎসা সাথে সাথে প্রয়োজন। নিত্যদিনের এরকম আকস্মিক দুর্ঘটনায় ঘরোয়াভাবে প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ঘরোয়াভাবে এইসব উটকো দুর্ঘটনার প্রাথমিক চিকিৎসা কীভাবে করবেন সেটিই বুঝে উঠতে পারি না অনেকে। কিন্তু ওই প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুই অনেকসময় অনেকের প্রাণ বাঁচিয়ে দেয়। হঠাৎ অসুস্থতায় ঘরেই প্রাথমিকভাবে কী করবেন সেই উপায়গুলো জানিয়েছেন ডা. মো. বখতিয়ার।

লক্ষণ ও উপসর্গ

ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা সংবেদনশীলতা, শারীরিক কার্যকলাপ চালাতে অসমর্থতা, রক্তপাতপূর্ণ  ক্ষত, হেমাটোমা, বমি, মাথা ঘোরা, জ্ঞান হারিয়ে ফেলা, প্রচণ্ড ব্যথায় কাতর হওয়া।

কারণ

দুর্ঘটনা, পুড়ে যাওয়া, শারীরিক নির্যাতন, আত্মহত্যার প্রচেষ্টা, খেলতে গিয়ে আঘাত লাগা, যুদ্ধ করা বা ঝগড়া করা প্রভৃতি।

করণীয়

ভোঁতা আঘাত পেলে করণীয়:

কম ধারালো বস্তু দিয়ে আঘাত পেলে সেই স্থানটি ফুলে যায়, ব্যথা হয়, লাল বা কালো হয়, নড়াচড়ায় অসুবিধা হয়। অনেক সময় আঘাতের কারণে নার্ভ ইনজুরি হয়। এটি কিন্তু মারাত্মক একটি সমস্যা।
* আঘাতের স্থানে কোনো কিছু মালিশ না করা।
* প্রথম অবস্থায় ঠান্ডা বা বরফ দেওয়া।
* আঘাদের অংশ বিশ্রামে রাখা।
* প্রচুর পানি পান করা।
* স্বল্পমাত্রায় ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার করা।
* বুকে বা মাথায় অথবা পেটে আঘাত পেলে অনতিবিলম্বে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া। হাতে বা পায়ে ছুলে যায়নি এমন লোক খুব কম পাওয়া যাবে। রাস্তাঘাট বা খেলার মাঠে পড়ে গিয়ে বা যানবাহনের দুর্ঘটনায় প্রায়ই এমনি ঘটে। ছুলে গেলে সাধারণত চামড়া উঠে বা ছিঁড়ে যায়। তবে খুব বেশি গভীর হয় না। ময়লা বা ধুলাবালু আটকানো থাকে। অল্প অল্প রক্তপাত হতে পারে, বিশেষ করে প্রেসার পয়েন্ট বা হাড়ের উপরের অংশে।
* প্রথমে নরমাল স্যালাইন দিয়ে পরিষ্কার করা ভালো। তবে নরমাল স্যালাইন না থাকলে ট্যাপের ঠান্ডা পানি দিয়ে ছুলে যাওয়া স্থানটি পরিষ্কার করে ভালো কোনো অ্যান্টিসেপটিক সলিউশন লাগাতে হবে।
* ছুলে যাওয়ার স্থানটি খুব বেশি গভীর না হলে অ্যান্টিসেপটিক সলিউশন ক্রিম দিনে তিন-চারবার লাগানো যেতে পারে। আর গভীরতা বেশি হলে প্রথম এক-দুইদিন ড্রেসিং দিয়ে ঢেকে রাখা ভালো। তবে কখনোই ড্রেসিং বেশিদিন দেয়া ঠিক নয়। এ জাতীয় সমস্যা খোলা রেখে চিকিৎসা করাই ভালো। অনেক সময় ক্ষতের গভীরে চামড়ার নিচে রক্ত জমাট বাঁধে, যা ড্রেসিং তৈরির মাধ্যমে চামড়ার পচন ধরায়। সে ক্ষেত্রে ছোট করে কেটে রক্ত বের করে দেওয়া ভালো।
* যদি টিটেনাসের টিকা নেয়া না থাকে, সে ক্ষেত্রে টিকা নিয়ে নেয়া উচিত।

সুচ বা পিনজাতীয় বস্তুর আঘাত:

সাধারণত যারা সেলাইয়ের কাজ করেন, তাদের এ ধরনের আঘাত বেশি হয়, যাকে বলে নিডলস্টিক ইনজুরি। আঘাতটি অতি সামান্য হলেও একে অবহেলা করা উচিত নয়। ছোট সমস্যা অনেক সময় জটিল আকার ধারণ করে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের জন্য নিডলস্টিক ইনজুরি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। যা করণীয়-

প্রথমে চাপ দিয়ে রক্ত বের করে দেওয়ার চেষ্টা করুন।
ভালো কোনো অ্যান্টিসেপটিক সলিউশন দিয়ে ড্রেসিং করানো।
প্রয়োজনে টিটেনাসের টিকা নিন।
প্রথম তিন-চার দিন লক্ষ্য রাখুন, আক্রান্ত স্থানটি লাল হয়ে ফুলে যায় কিনা। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
হঠাৎ অঘাত পেলে

হঠাৎ আঘাত পেলে শরীরের ওই নির্দিষ্ট জায়গায় অতিরিক্ত চাপ পড়লে ফুলে যায়। এ ধরনের আঘাতে যে সমস্যা হয়, তাকে সাধারণত সফট বা নরম টিস্যু ইনজুরি বলে। আঘাত হাত-পায়ের, কোমরের বা শরীরের অন্য জায়গার মাংসপেশিতে, হাড়ে, জয়েন্টে নার্ভ, লিগামেন্টের অবস্থানগত পরিবর্তনের জন্য ব্যথা হয়। আবার কেউ মাথায়ও আঘাত পেতে পারে, যার ফলে বাহ্যিক-অভ্যন্তরীণ দুই ধরনেরই ক্ষতি হতে পারে। একেক জায়গার আঘাতে চিকিৎসার ধরন পরিবর্তিত হয়ে থাকে। সব আঘাতই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কিন্তু মাথায় আঘাত সব সময় বেশি গুরুত্ব বহন করে।

হাতেপায়ে আঘাত পেলে

হঠাৎ যেসব আঘাতগুলো পেয়ে থাকে- কোনো দুর্ঘটনায় আঘাত, খেলাধুলার সময় আঘাত, মাংসপেশিতে হঠাৎ টান কিংবা পা পিছলে পড়ে গেলে। এসব কারণে সফট টিস্যু ইনজুরি হয়। আঘাতের তীব্রতা বেশি হলে হাড় ভেঙে যেতে পারে। হাড় ভেঙে গেছে সন্দেহ হলে অবশ্যই তা এক্সরে করে দেখতে হবে এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসা নিতে হবে।