• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

শি’র মস্কো সফরে দক্ষিণ চীন সাগরে আতঙ্ক

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৩  

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মস্কো সফর আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দক্ষিণ চীন সাগরে। এ সফরে ইউক্রেন ইস্যু সর্বাধিক গুরুত্ব পেলেও, ধারণা করা হচ্ছে তাইওয়ানে চীনের সম্ভাব্য সেনা অভিযানে ঘনিষ্ঠ বন্ধু পুতিনের সমর্থন চাইতে পারেন শি।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর ধারণা ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানে অনুপ্রাণিত হয়ে তাইওয়ানে সামরিক অভিযান চালাতে পারে চীন। গেলো বছর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে তারা। এ অবস্থায় ইউক্রেনে মস্কোর অভিযানে নড়েচড়ে বসে পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে পরিচিত চীনবিরোধী দেশগুলো। এর আগে তাইওয়ানে বেইজিংয়ের সম্ভাব্য হামলার বিষয়টি নিয়ে ততটা মাথা ঘামায়নি তারা।

তবে ইউক্রেনে রুশ অভিযান হঠাৎ করেই অস্বস্তি বয়ে আনে দক্ষিণ চীন সাগরে। পশ্চিমা দেশগুলোর মনোযোগ ইউক্রেনে থাকার সুযোগে তাইওয়ানে হামলা চালিয়ে বসতে পারে চীন, এমন আশঙ্কা প্রবল হয়ে ওঠে এই অঞ্চলের মার্কিন মিত্রদের মধ্যে।

যুগ যুগ ধরেই তাইওয়ানকে নিজেদের ‘রেডলাইন’ হিসেবে মনে করে চীন। বেইজিং বারবার হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে একীভূত না হলে তাইপের ওপর বল প্রয়োগ ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না তাদের সামনে। এ অবস্থায় সত্যিকারের চীনা সেনা অভিযানের আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে তাইওয়ানকে।

বিশেষ করে তাইওয়ান প্রশ্নে পূর্বসূরিদের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রাসী অবস্থান নিয়েছেন চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর তার মূল এজেন্ডায় রয়েছে তাইওয়ানের একত্রীকরণ। আর এ ব্যাপারে তাকে অনুপ্রাণিত করছে তার মিত্র রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বলা হচ্ছে, ঘনিষ্ঠ বন্ধু পুতিনের ইউক্রেন অ্যাডভেঞ্চার একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে উৎসাহী করছে জিনপিংকে।

তাইওয়ান ঘিরে বেড়ে যাওয়া চীনা সামরিক তৎপরতায় ফুটে উঠছে বিষয়টি। অঞ্চলটিতে নিয়মিত সেনা মহড়া চালাচ্ছে বেইজিং; প্রায় নিয়মিতই তাইপের আকাশসীমায় আনাগোনা চলে চীনা যুদ্ধবিমানের। এ অবস্থায় ২০২৬ সালের মধ্যেই তাইওয়ানে হামলা চালাতে পারে চীনা বাহিনী - এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা।

এদিকে এ পরিস্থিতিতে শি জিনপিংয়ের রাশিয়া সফরকে কেন্দ্র করে তাইওয়ান ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন সমীকরণ। চীনা প্রেসিডেন্টের মস্কো সফরে ইউক্রেন ইস্যুই গুরুত্ব পাচ্ছে বলে মনে করা হলেও, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সমর্থন দেয়ার বিনিময়ে তাইওয়ান প্রশ্নে সহযোগিতা চাইতে পারেন শি জিনপিং, ধারণা করা হচ্ছে এমনটাও।

পাশাপাশি বেইজিংয়ের সঙ্গে ইউক্রেন অভিযানের সামরিক অভিজ্ঞতাও বিনিময় করতে পারে মস্কো। এছাড়া ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত চীনা প্রযুক্তি ও অস্ত্র সামগ্রীর কার্যকারিতার ব্যাপারেও মস্কোর কাছ থেকে অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে চীন, যা কাজে দেবে তাইওয়ানে তাদের সম্ভাব্য অভিযানে।

সব মিলিয়ে বিশ্লেষকদের ধারণা, চীনা প্রেসিডেন্টের এ মস্কো সফরে ইউক্রেনের পাশাপাশি নির্ধারিত হতে পারে তাইওয়ানের ভাগ্যও।