• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

মসজিদে, গাছের তলায় শিশুদের ফেলে যাচ্ছেন সিরিয়ান মায়েরা

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৩  

এক শীতের রাতে ফরজের নামাজ পড়তে বের হন ইব্রাহিম ওথমান। নামাজ পড়ে তিনি আর একা বাড়ি ফিরতে পারেননি। সঙ্গে এনেছিলেন সদ্য জন্ম নেওয়া এক মেয়েশিশুকে।
৫৯ বছর বয়সী ইব্রাহিম বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে বলেন, মসজিদের সামনে কেউ এই নবজাতককে কেউ ফেলে গেছে। তাই তিনি সেখান থেকে শিশুটিকে কুড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। স্ত্রীর জন্য তিনি শিশুটিকে উপহার হিসেবে এনেছেন।

শিশুটির নাম রাখা হয়েছে হিবাতুল্লাহ। এর অর্থ ‘ঈশ্বরের উপহার’। পরিবারের সদস্য হিসেবে শিশুটিকে বড় করার সিদ্ধান্ত নেন ইব্রাহিম দম্পতি।

এমন অনেক নবজাতকের দেখা পাওয়া যায় সিরিয়ার মসজিদের সামনে, হাসপাতাল এমনকি জলপাইবাগানে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে এসব নবজাতকের ঠাঁই হয় না পরিবারে। ফেলে দেওয়া হয় তাদের।


দীর্ঘ ১২ বছর ধরে দেশটিতে যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার মানুষ আরও দরিদ্র হয়েছে। হতাশা জেঁকে বসেছে তাদের। ফলে অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের লালনপালন করতে পারে না। তাই ছোট অবস্থায়ই মসজিদ কিংবা হাসপাতালের সামনে ফেলে যায়।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংগঠন সিরিয়ানস ফর ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের শুরুর দিক থেকে গত বছরের শেষ দিক পর্যন্ত সিরিয়ায় শতাধিক শিশুকে ফেলে দেওয়ার ঘটনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬২টি মেয়ে শিশু। তবে এই সংখ্যা পূর্ণাঙ্গ নয়। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।

বাশার আল-আসাদের ডিক্রিতে বলা হয়েছে, ফেলে যাওয়া এসব শিশু আরব, মুসলিম ও সিরিয়ান হিসেবে পরিচিত হবে। এই পরিচয়ে তাদের সরকারিভাবে নথিবদ্ধ করতে হবে।


যুদ্ধের কারণে সিরিয়ায় একদিকে অস্থিতিশীলতা ও মানুষের নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে, অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দারিদ্র, বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি এবং বিয়ে ছাড়াই গর্ভধারণের ঘটনা। এসব কারণে অনেকেই নবজাতককে নিজের সঙ্গে রাখতে পারেন না।

এক দশকের বেশি সময় ধরে চলমান সিরিয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ধ্বংস হয়ে গেছে দেশটির অসংখ্য অবকাঠামো।

সিরিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা জাহের হাজ্জো বলেন, গত বছরের প্রথম ১০ মাসে দেশটির সরকার–নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় ৫৩ নবজাতকে ফেলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৮টি ছেলেশিশু ও ২৫টি মেয়েশিশু।