• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

মঠবাড়িয়ায় কুল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২৪  

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় কুল চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ দিন-দিন বেড়েই চলছে। প্রতি বছর বানিজ্যিকভাবে কুল উৎপাদনের জন্য উপজেলায় নতুন নতুন কুল বাগান করা হচ্ছে। এ বছর প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার কুল উৎপাদন হয়েছে। কৃষি দপ্তর থেকে চাষিদের সার্বিক সহযোগীতা করা হলে উৎপাদন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। সম্ভাবনাময় কুল চাষের জন্য উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে কোন প্রনোদনা না থাকায় হতাশ প্রকাশ করছেন কৃষকরা।
জানাযায়, এক সময় উপজেলায় শুধু বাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা বাড়ির পাশে শখের বশে কুল গাছের চাষ করা হত। স্থানীয় জাতের এ কুল পরিবারের চাহিদাও মেটাতে পারত না। উন্নত জাতের কুল চাষ উপজেলায় ছিল না বললেই চলে। গত এক দশক ধরে ধরে উপজেলায় উন্নত জাতের কুল চাষে কৃষকদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে উপজেলায় বানিজ্যিকভাবে কুল উৎপাদনের জন্য কুল বাগান করছে কৃষকরা।
উপজেলার ছোটহারজী গ্রামে ডা. এ কে হাওলাদার উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার থেকে অবসর নিয়ে প্রায় ৪ একর জমিতে কুল বাগান করেছেন। ডা. এ কে হাওলাদার জানান, এক হাজার বল সুন্দরী কুল চারা রোপন ও পরিচর্যায় তার লক্ষাধিক টাকা ব্যায় হয়েছে। এবছর কুল বিক্রি করে আয় হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা। প্রথম বছর অভিজ্ঞতার অভাবে ব্যবস্থা না নেয়ায় পাখিতে অনেক কুল খেয়ে নষ্ট করাসহ বিভিন্ন কারনে আশানুরুপ আয় হয়নি বলে ডা. এ কে হাওলাদার জানান।
উপজেলার বড় শৌলা গ্রামের কৃষক মো. রুহুল আমিন হাওলাদারের প্রায় আড়াই একরের কুল বাগান তৃতীয় বছরে সাফল্যের মুখ দেখেছে। এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক টাকার কুল বিক্রি করেছেন। আরও প্রায় লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান। রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, যশোর কৃষি দপ্তরের সহযোগীতায় তিনি কুল বাগান করেছেন। উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে পোকা মাকর নিধনের কিছু পরামর্শ ছাড়া আর কোন সহযোগীতা না থাকায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি উপজেলা পর্যায় কৃষকদের প্রশিক্ষণের দাবী করেন।
উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে প্রাপ্ততথ্যে জানাযায়, এ বছর উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা প্রায় ৯ শত মেট্রিক টন যার আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা। বল সুন্দরী কুল, আপেল কুল, কাশ্মীরি আপেল কুল, বারি কুল ১-২-৩, ও বাউকুল ১-২ এর চাষ বেশী হয়েছে। সবচেয়ে বেশী চাষ হয়েছে উপজেলার গুলিশাখালী, টিকিকাটা, মিরুখালী ও দাউদখালী ইউনিয়নে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, বানিজ্যিকভাবে লাভজনক কুল চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ায় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের যথাসাধ্য পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, উপজেলা পর্যায়ে ফলদ বাগানের কোন প্রজেক্ট না থাকায় কৃষকদের কোন সহযোগীতা আমরা করতে পারি না। তারপরও মঠবাড়িয়ায় কুল চাষে কৃষকদের আগ্রহ উৎসাহ ব্যাঞ্জক। কৃষকরা চাইলে বরিশাল হর্টিকালচার সেন্টারে কুল চাষে প্রশিক্ষণ গ্রহনের ব্যবস্থা করবেন বলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান।