• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

মঠবাড়িয়ায় গ্রেপ্তারকৃত আসামির বাড়িতে পুলিশের খাদ্য সহায়তা

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০২১  

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি:

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ওয়ারেন্টভূক্ত মরিয়ম বেগম (৩৮) নামে এক আসামীকে গ্রেপ্তারের পর তারা বাড়িতে খাদ্য সহায়তা দিলো মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে মঠবাড়িয়া থানার এএসআই জাহিদ এ খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন। মরিয়ম বেগম উপজেলার পশ্চিম সেনের টিকিকাটা গ্রামের জাকির হোসেন ওরফে সুতা জাকিরের স্ত্রী।

জানা গেছে, জাকির হোসেন চালাকি করে ব্যবসার জন্য স্ত্রীকে জামিনদার করে মঠবাড়িয়া ব্রাক ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ নেয়। একে একে বিভিন্ন এনজিও থেকে আরও ৩০ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করেন সুচতুর জাকির। গোপনে বিক্রি করে দেয় সব জমিজমা। পরে ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করে মঠবাড়িয়া থেকে পালিয়ে যায়। পরে জাকির ও তার প্রথম স্ত্রী মরিয়মের বিরুদ্ধে পিরোজপুর অর্থ ঋণ আদালতে এনজিওর পক্ষ থেকে মামলা রুজু করা হয়। 

সেই সময়ে মরিয়ম বেগম মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে সাজানো সংসার ছেড়ে ৩ জন সন্তান নিয়ে নানা বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানে থেকে অন্য মানুষের ঘরে ঘরে ঝিয়ের কাজ করে ও কাঁথা সেলাই করে সংসার চালাতে থাকেন। তিনিসহ বড় মেয়ে শারমিন আক্তার (১৮), ছেলে রুম্মান (১১) ও ছোট মেয়ে জান্নাতি আক্তার সংসারের এ অবস্থায় কোনমতে বেঁচে আছেন। বেশির ভাগ দিনই মা এবং বড় মেয়ে ক্ষুধা নেই বলে ঘরে যে খাবার থাকে তা রুম্মান ও জান্নাতিকে খাইয়ে দিয়ে তারা দু’জন অনাহারে থাকেন।

এদিকে ওই এনজিও‘র মামলায় আদালত থেকে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয় স্বামী-স্ত্রীর নামে। স্বামী দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। মরিয়ম বেগম আছেন এলাকাতেই। সোমবার মঠবাড়িয়া থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক জেন্নাত আলী, উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও লাবনী আক্তার ওয়ারেন্টের আসামি মরিয়ম বেগমের বাড়িতে যান।

তার বাড়িতে তাকে পেয়ে যান পুলিশের ওই টিম। তবে মরিয়ম বেগমের সংসারের অবস্থা দেখে মনের মানবিকতার ভিতরটায় নাড়া দেয় এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদের। মরিয়ম বেগমকে থানায় নিয়ে যাবার সময় তার সন্তানরা যখন কান্নারত অবস্থায় বলতে ছিলো ‘আমরা এখন থাকবো কিভাবে, খাবো কি, ঘরেতো কিছুই নেই। আমাদের মাকে ছেড়ে দেন। মা কিছু করে নাই।’ এই কথাগুলো তখন এএসআই জাহিদের কানে বিষাদের সুরের মতো বাজতে ছিলো। কি আর করার ওয়ারেন্টের আসামি। আদালতের আদেশ তামিল করতেই হবে।
থানায় মরিয়ম বেগমকে রেখে মঠবাড়িয়া বাজার থেকে ওই পরিবারের জন্য এক মাসের চাল, ডাল, তেল, আলু, লবন, সাবান, পেয়াজ, মরিচ, হলুদ, চিনি, চাসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা নিয়ে মরিয়ম বেগমের সন্তানদেও সামনে হাজির হন এএসআই জাহিদ।

এ বিষয়ে এএসআই জাহিদ জানান, মরিয়ম বেগম এতো অসহায় না দেখলে কেউ বুঝতেই পারবেনা। তার অবর্তমানে এই সংসারের আহার জোগার করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই যতদিন মরিয়ম বেগম জেল হাজতে থাকবেন, ততদিন তার রেশন দিয়ে এই পরিবারকে তিনি সহায়তা করে যাবেন।

উল্লেখ্য- পুলিশের এই অফিসার এর আগে বরিশালের বানারীপাড়া থানায় কর্মরত থাকার সময়ও বিভিন্ন সামাজিক কাজ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশ বাহিনীকে সাধারণ মানুষের কাছে সেবার ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে রেখেছিলেন।