• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

ছয় দফাই বাঙালির মুক্তির দলিল: আমু

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২৩  

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ। ১৯৬৬ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণায় ছয় দফা দাবির পক্ষে দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র আন্দোলন। সেই আন্দোলনে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে নিহত হন ১১ জন। এরপরও থেমে যায়নি বাঙালির মুক্তির লড়াই। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এবং ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু সম্প্রতি সময় সংবাদকে বলেন, এই ছয় দফাই বাঙালির মুক্তির দলিল।

অর্থনৈতিক শোষণ-বঞ্চনা, বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর সীমাহীন নিপীড়ন। সামরিক শাসনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ভেঙেচুরে দেশের মানুষকে ক্রীতদাসে পরিণত করা–এমনটাই ছিল ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক আইয়ুব খানের নির্মমতার চিত্র।

আইয়ুব খানের অপশাসনে বাঙালি যখন দিগ্‌ভ্রান্ত, তখন মুক্তির পথ খুঁজতে থাকেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের লাহোরে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত হয় সর্বদলীয় জাতীয় সংহতি সম্মেলন। সেখানেই বাঙালি জাতির ওপর দীর্ঘদিনের অন্যায়-অবিচার ও বৈষম্য নিয়ে ছয় দফা দাবি পেশ করেন বঙ্গবন্ধু। তবে বাঙালির মুক্তির এ সনদকে প্রত্যাখ্যান করে ন্যাপসহ প্রতিটি দল। এ ঘটনা মেনে নেননি শেখ মুজিবও। দলবল নিয়ে ত্যাগ করেন সম্মেলন। দেশে ফিরে শুরু করেন দুর্বার আন্দোলন।
 
১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকেই স্বায়ত্তশাসনের কথা বলেছে, অনেক রাজনৈতিক দল, অনেক রাজনৈতিক নেতা স্বায়ত্তশাসনের কথা বলেছে। কিন্তু স্বায়ত্তশাসনের রূপরেখা কি এটা কেউ কোনোদিন পরিষ্কার করে বলেননি। বাঙালিদের ওপর যে নির্যাতন-নিষ্পেষণ চলছিল, সেটার থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিল বঙ্গবন্ধু ছয় দফা।

ছয় দফার পক্ষে জনগণের সাড়াও পান শেখ মুজিব, ৭ জুন ঘোষণা করা হয় হরতাল। পরিস্থিতি যখন আইয়ুব খানের হাতের মুঠোর বাইরে, তখনই বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার জবাব অস্ত্রের মুখেই দেয়া হবে বলে হুমকি দেন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান। ৭ জুনের পূর্বঘোষিত হরতালে চালানো হয় গুলি, ঝরে যায় ১১টি তাজা প্রাণ, গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু।
 
তিনি আরও বলেন, ঝটিকা সফরের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু সারা দেশে ছয় দফার পক্ষে ঝড় তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ ছয় দফাই বাঙালির মুক্তির দলিল।
 
গ্রেফতার করেই থেমে যায়নি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে দেয়া হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। তবে জনগণ এবার হয়ে ওঠে আরও সোচ্চার। উনসত্তরের গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে জেল থেকে বের করে আনা হয় শেখ মুজিবকে। এর পর থেকেই বঙ্গবন্ধু মজবুত করেন স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত, আর ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে উপহার দেন সোনার বাংলাদেশ।