• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

আমাকে গালি দিলে আমিও গালি দেব: সুজন

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২  

সাম্প্রতিক সময়ে নানা কারণে আলোচনায় বিসিবি পরিচালক ও টাইগারদের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। শ্রীলঙ্কান বোলারদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য কিংবা আফিফ হোসেনকে বিরাট কোহলির সঙ্গে তুলনা, সাবেক টাইগার অধিনায়ক এ সবকিছুতেই দায় দেখছেন গণমাধ্যমের। দেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে, বোর্ড ও ক্রিকেটারদের সমালোচনা না করে পরামর্শ দিলেন ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের। সুজন মনে করেন, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণেই ভালো ক্রিকেট খেলতে পারছেন না টাইগাররা।

এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদমাধ্যমের সামনে বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছিলেন, তিনি শ্রীলঙ্কা দলে কোনো বোলার দেখেন না। মূলত শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক শানাকার কথার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেন তিনি। আফগানদের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারার পর শানাকা বলেছিলেন, আফগানদের চেয়ে টাইগারদের মোকাবিলা করা সহজ। কারণ টাইগার শিবিরে সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান ছাড়া ভালো বোলার নেই।

সুজনের এমন মন্তব্যের পরেই বদলে গেছে লঙ্কানরা। বিশ্বসেরা বোলার ছাড়াই এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন তারা। সুজনকে নিয়ে তাই ট্রল-সমালোচনার ঝড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

কেবল লঙ্কান বোলার বিতর্ক নয়, সাম্প্রতিক সময়ে এক সাক্ষাৎকার নিয়েও বিপাকে টাইগারদের টিম ডিরেক্টর। যদিও বা এসব কিছুতেই গণমাধ্যমের দায় দেখছেন সুজন। তার অভিযোগ, বক্তব্য বিকৃতি করে রোষানলে ফেলা হচ্ছে তাকে।

বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর সুজন বলেন, ' আমি এমনি ইন্টারভিউ দিতে চাই না কারণ আমাদের কথার অনেক টুইস্ট হয়। যেমন, সেদিন আমি বলেছিলাম যে, বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা যে রকম শট খেলেন, আমরা যদি আফিফদের ফুল ফ্রিডম দেই, তারাও ওর চেয়ে বেটার শট খেলতে পারবে। কিন্তু সেটা মিডিয়াতে আসল যে, আফিফ বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার চেয়ে ভালো শট  খেলে। এর মানে কী! এরপর আমি গাল খেলাম একশ! এটা তো আপনাদের রাইট না আমাকে মানুষের গালি খাওয়ানোর। এখন তো রিকশাওয়ালার হাতেও মোবাইল ফোন আছে। তারা তো আর পড়তে পারে না। তারা শুধু হেডিংটা পড়ে। যেহেতু আমি বাঙালি, আর বাঙালিকে কেউ গালি দিলে আমিও গালি দেব। আমি এই টাইপের ছেলে। আমি মনে করি, আমার গায়ে পুরো বাংলাদেশি রক্ত চলে। আমি বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দিয়ে...বাংলাদেশের লোগো লাগানো। সুতরাং বাংলাদেশকে নিয়ে কেউ বলে আমার থেকে পার পেয়ে যাবে, এটা হবে না।'

বারবার ভয়ডরহীন ক্রিকেটের কথা বলা হলেও মাঠের খেলায় তার প্রয়োগের অভাব। সুজন মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সমালোচনা, মানসিক চাপে ফেলে ক্রিকেটারদের। দেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে তাই, ইতিবাচক সমর্থন চান সাবেক এই অধিনায়ক।

সুজন বলেন, 'আপনাদের প্রফেশন যেমন সাংবাদিকতা, আমাদের প্রফেশন মাঠে। ক্রিকেটের সঙ্গে আছি আমরা। তবে আমরা সবাই কিন্তু বাঙালি। আমরা যদি মনে করি, বাংলাদেশ টিমকে জিততে হবে, ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে, সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখা দরকার আপনাদের। কারণ আপনাদের ম্যাসেজগুলো সারা দেশের মানুষ পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে সবাই ফেসবুক ইউজ করে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের লেখা ওদের চোখে পড়ে। সেটা চিন্তা করে ওদের ক্যারিয়ারের জন্য, যে বলটা ওরা ছয় মারতে পারে, ওই বলটায় আস্তে করে এক রান নিয়ে ওপারে চলে যাচ্ছে।'

তিনি যোগ করেন, 'আমার ম্যাসেজটা আপনাদের কাছে ক্লিয়ার যে, আমাদের এই ফরম্যাটে জিততে হলে এক্সট্রাঅর্ডিনারি কিছু করতে হবে। যার জন্য সাপোর্টটা আমরা আপনাদের কাছে সবসময় চাই। শুধু এটা আমরা ড্রেসিংরুমে বললাম, ফ্রিডম দিলাম, আমরা বললাম যে, ফিয়ারলেস ক্রিকেট খেলতে কিন্তু মিডিয়াতে যখন এই কথাগুলো আসে তারা কীভাবে ফিয়ারলেস খেলবে।'

গণমাধ্যমের কাজ যেমন সমালোচনা করা, তেমনি পেশাদার ক্রিকেটারদের কাজ ভালো ক্রিকেট খেলা। তবে নিজেদের ব্যর্থতা কাটাতে সমালোচনা বন্ধের পরামর্শ যে কতটা কাজে দেবে, সে উত্তর হয়তো কেবল খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছেই আছে।