• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

দেখে আসুন দুধপাথরি, ওজুর পানি জোগাতে অলৌকিক জন্ম এই নদীর!

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২২  

নীলাভ বরফে ঢাকা সুউচ্চ পাহাড়ে বেড়াতে যেতে চাইছেন? এমন এক পাহাড়ের খোঁজ দিতে পারি আপনাকে, পাহাড়ের গায়ে দেবদারু পাইন ফার, ওক গাছের সারি। ঝিরঝির করে বয়ে চলা নদী। যা উপত্যকার বুক চিরে শুয়ে আছে। এ এক স্বচ্ছতোয়া নদী। ছোট বড় পাথরে জলতরঙ্গের সুর তুলে উচ্ছল কিশোরীর মতো ছুটে চলেছে সারাদিন রাত।
সেখানে গেলে চোখে পড়বে পাহাড়ের ফাঁকে কোথাও একটু সমতলে জমিতে ছোট্ট ছোট্ট ঘরবাড়ি, ফল আর ফুলের বাগান, পাকা ফসলের মাঠ। যেন মনে হয় রঙের উপর রয় চাপিতে একটু একটু করে একটা রঙিন ক্যানভাস। এই সৌন্দর্য্য দেখতেই প্রতি বছর পর্যটকেরা দলে দলে ছুটে আসেন কাশ্মীরে। প্রকৃতির নির্মলতা আর আরামদায়ক জলবায়ু আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে ভূস্বর্গের পরিবেশ।

কাশ্মীরের পরিচিত ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশনগুলোর কথা কে না জানে! তবে সেই সমস্ত জায়গা ছাড়াও কাশ্মীরের প্রকৃতির বুকে লুকিয়ে আছে আরো বেশ কিছু অচেনা অজানা জায়গা। ভিড় এড়িয়ে কয়েকটা দিন প্রকৃতির সঙ্গে নিরিবিলিতে কাটাতে চাইলে ঘুরে আসাই যায় সেই অজানা কাশ্মীর থেকে।

‘দুধপাথরি’ শব্দটার অর্থ দুধ ভর্তি পাথর বা দুধের উপত্যকা। এই নামের পিছনে লুকিয়ে আছে একটা মজার গল্প। স্থানীয় ফোকলোর বা উপকথা মতে, অনেককাল আগে এই কাশ্মীর উপত্যকায় বাস করতেন এক ধর্মপ্রাণ মানুষ। একাধারে কবি, গীতিকার ও সুফি সাধক সেই মানুষটার নাম শেখ নূর-উদ্দিন নূরানী।

নামাজের সময় হয়ে যাওয়ায় পথের মধ্যে ঘাসেঢাকা এক অজানা মাঠে থামতে বাধ্য হন তিনি। নামাজের আগে অজু করতে পানি দরকার। এদিকে আশেপাশে নদী বা ঝরনা কিছু নেই। ভারি বিপদে পড়লেন ঋষি নূর। পানি খুঁজতে গিয়ে মাঠের শক্ত মাটিতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন তিনি। সেই আঘাতে আশ্চর্যভাবে মাটি ফেটে বেরিয়ে আসে দুধের ধারা।

কথিত আছে যে, দুধ বেরোতে দেখে বিস্মিত হয়ে বলে ওঠেন শেখ নূর, বলেন, এ দুধ দিয়ে কী করব আমি! দুধ পান করা যেতে পারে, কিন্তু তা দিয়ে অজু করা তো যাবে না। সাধকের মুখে এ কথা শোনামাত্র দুধের সেই ধারাই বদলে যায় স্বচ্ছতোয়া পানি। এই ঘটনার পরই এই ঘাসেঢাকা উপত্যকার নাম হয়ে যায় দুধপাথরি।

বিদেশী পর্যটকদের অনেকেই দুধপাথরীকে ‘মিনি কাশ্মীর’ হিসেবে বর্ণনা করেন। সেখানে গেলে আরো দেখতে পারবেন, কাশ্মীরের বিখ্যাত মার্তণ্ড মন্দির। ৮ম শতাব্দীতে কারকোটা বংশের রাজারা এই মন্দির তৈরি করেন। এই মন্দিরে ইওরোপীয় দেশেগুলির আর্কিটেকচার ধরা পড়ে। যা সচারচর ভারতের কোনো মন্দিরে সেভাবে দেখতে পাওয়া যায় না।

যেভাবে যাবেন
প্রথমে যেতে হবে ভারতের কলকাতা। সেখান থেকে শ্রীনগরের দূরত্ব ২৩৭১ কিলোমিটার। শ্রীনগর যাওয়ার দুইটি ট্রেন আছে। হিমগিরি ও জম্মু তাওয়াই। হিমগিরি সপ্তাহে তিন দিন, রাত ১১টা ৫০ মিনিটে হাওড়া থেকে জম্মুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সময় লাগে ৩৫ ঘন্টা ৩৫ মিনিট। আর জম্মু তাওয়াই প্রতিদিন চললেও সময় একটু বেশি সময় লাগে যেমন ৪৫ থেকে ৪৬ ঘণ্টা। কলকাতা থেকে ফ্লাইটে শ্রীনগরের শেখ উল আলম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যেতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘণ্টা। এছাড়া কলকাতা থেকে ফ্লাইটে ভায়া দিল্লি হয়েও শ্রীনগর যাওয়া যায়।