• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

আজ আবরার হত্যা মামলার চার্জশীট জমা দেয়া হবে

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০১৯  

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার তদন্ত শেষে আজ মঙ্গলবার চার্জশীট দেবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগ নেতাসহ বুয়েটের ২৫ ছাত্রকে চার্জশীটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে ৩০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে এ মামলার তদন্ত শেষ করল ডিবি পুলিশ।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জানান, আবরার হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করে চার্জশীট প্রস্তুত করা হয়েছে। মঙ্গলবার চার্জশীট জমা দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, এত বড় চাঞ্চল্যকর এই খুনের ঘটনার চার্জশীট দেয়ার আগে তদন্ত তদারকি কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর অনুমতি নিয়েছেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ, আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী ও তদন্ত করে তথ্যানুযায়ী চার্জশীটে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শিবিরকর্মী সন্দেহে আবরারকে খুন করা হয়েছে। আসামিরা ওই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নিয়েছেন। চার্জশীটে যে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২১ আসামি কারাগারে রয়েছেন। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৬ জন এবং এজাহারের বাইরে পাঁচজন আসামি রয়েছেন। এজাহারভুক্ত তিন আসামি এখনও পলাতক।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আট জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দীতে হত্যাকাণ্ডে অপর আসামিদের সম্পৃক্ততাও উঠে এসেছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দু’জন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন। এর বাইরে তদন্ত কর্মকর্তারা বুয়েটের শিক্ষক, শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট, চিকিৎসক, নিরাপত্তাকর্মীসহ ৩০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন। চার্জশীটে তাদের সাক্ষী হিসেবে রাখা হচ্ছে। চার্জশীটে আবরারের রক্তমাখা জামা-কাপড়, মেসেঞ্জারে আসামিদের লিখিত যোগাযোগ, প্রযুক্তিগত অন্যান্য যোগাযোগ, শেরেবাংলা হলের সিসিটিভি ফুটেজসহ ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা আলামত জমা দেয়া হচ্ছে। আসামিদের অন্তত ১১ জন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে ছিলেন। তবে আবরার হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগ থেকে পদধারীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার পর বুয়েটে ছাত্র রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু মামলার তদন্তের সময়ে রাজনৈতিক পরিচয় বাদ দিয়ে তাদের অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করা হয়েছে। চার্জশীটে তার প্রতিফলন ঘটেছে। কার কী অপরাধ, কতটুকু অপরাধ তা চার্জশীটে উল্লেখ করা হচ্ছে।

চার্জশীটভুক্ত আসামিরা হচ্ছেন যারাঃ মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অমিত সাহা, মাজেদুল ইসলাম, মোঃ মুজাহিদুল, মোঃ তানভীর আহমেদ, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মোঃ জিসান, মোঃ আকাশ, শামীম বিল্লাহ, মোঃ সাদাত, মোঃ তানিম, মোঃ মোর্শেদ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, মুনতাসির আল জেমি, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, এস এম মাহমুদ সেতু প্রমুখ। তাদের মধ্যে মুন্না, অমিত সাহা, মিজান, রাফাত ও সেতুর নাম এজাহারে ছিল না। আসামিদের মধ্যে রাসেল ছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক, ফুয়াদ সহসভাপতি, অনিক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, রবিন সাংগঠনিক সম্পাদক, সকাল উপসমাজসেবা সম্পাদক, মনির সাহিত্য সম্পাদক, জিয়ন ক্রীড়া সম্পাদক, রাফিদ উপদফতর সম্পাদক, অমিত সাহা উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং তানিম, মুজাহিদুর ও জেমি সদস্য। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামি মোঃ জিসান, মোর্শেদ ও এহতেশামুল তানিম এখনও পলাতক। এ মামলায় এজাহারভুক্ত আট আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তারা হচ্ছে, নাজমুস সাদাত, ইফতি মোশাররফ, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর ও মনিরুজ্জামান মনির।

উল্লেখ্য, ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলে নিজের কক্ষ থেকে আবরারকে ডেকে নিয়ে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরের দিন তার বাবা বরকতুল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।