• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:

আজান পর্যন্ত সেহরি খেলে কি রোজা হবে?

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২০  

 


আজান পর্যন্ত সেহরি খাওয়ার বিধান : পাঠকের বুঝার সুবিধার্থে প্রসিদ্ধ ফতোয়ার কিতাব- আহসানুল ফতোয়া থেকে এ প্রসঙ্গে পুরো প্রশ্ন ও উত্তরটি তুলে ধরা হলো।
প্রশ্ন : আজানের সঙ্গে সঙ্গে সেহরি খাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু দু-এক লোকমা, যা মুখের ভেতর ছিলো তা বের করে পানি পান করা হয়েছে। উক্ত সুরতে রোজা রাখা কি বৈধ হবে? নাকি এ রোজার কাযা করতে হবে? কোনো কোনো লোক মাইকে সাইলেন বাজানো, সেহরি বন্ধ করার ঘোষণা চলা অবস্থায়ও চা পান করে, তারপর কুলি করে নেয়। শরীয়তের দৃষ্টিতে এদের রোজার বিধান কি?

উত্তর : যদি প্রবল ধারণা হয় যে, সুবহে সাদেক হওয়ার পর মসজিদে আজান দেয়া হচ্ছে তাহলে যারা আজান পর্যন্ত খেয়েছে তাদের রোজা হবে না। (আজান সাধারণত সুবহে সাদিক হওয়ার পরই দেয়া হয়। কারণ সুবহে সাদিকের আগে আজানের ওয়াক্ত আসে না। তবে কোথাও ভুলে হলে ভিন্ন কথা। তাই আজান পর্যন্ত যারা খায় সাধারণত তাদের রোজা হয় না)। সুবহে সাদিক হওয়া এবং সেহরির ওয়াক্ত বাকি থাকার ব্যাপারে সংশয়যুক্ত সময়ে পানাহার করা মাকরূহ (আমাদের দেশের ক্যালেন্ডারগুলোতে আজান ও সেহরির মাঝে কয়েক মিনিট বিরতি দেয়া হয়। সংশয়যুক্ত সময় বলতে ওই সময়টাকে ধরা যায়)। তবে এ সময়ে খাওয়া দ্বারা রোজা সহিহ হয়ে যাবে। (আহসানুল ফতোয়া, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৪৩২. আল ফিকহুল হানাফি ফি ছাওবিহিল জাদিদ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৩৩)।
 
সুবহে সাদিক হয়নি ভেবে সেহরি খাওয়ার পর সুবহে সাদিক হয়েছিলো প্রমাণিত হলে করণীয় : রাত আছে মনে করে যদি কেউ সেহরি খায়। অতঃপর জানা যায় যে, তখন সেহরির সময় শেষ হয়ে গিয়েছিলো। তাহলে সে রোজার শুধু কাযা আদায় করতে হবে। কাফফারা আদায় করতে হবে না। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-৩য়, পৃষ্ঠা-৪৩৬)।

সেহরির সময় ও মুস্তাহাব সময় : সেহরি বলা হয়, রোজা রাখার উদ্দেশ্যে শেষ রাতে যে খাবার খাওয়া হয়। ফকিহদের মতে, সূর্যাস্তের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত সময়কে ছয় ভাগ করে, শেষ ভাগে খাওয়াকে সেহরি বলে। তাই কোনো লোক যদি এশার পর, রোজার নিয়তে খেয়ে নেয় তাহলে ওই খাবারকে সেহরি বলা যাবে না। এবং এতে সেহরির সওয়াবও সে পাবে না। তবে কেউ যদি সেহরির সময় হওয়ার আগেই খেয়ে নেয়। এরপর শেষ সময় পর্যন্ত চা পান ইত্যাদি করে তাহলেও সেহরির সওয়াব পেয়ে যাবে (আল ফিকহুল হানাফি ফি ছাওবিহিল জাদিদ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৩৩. বেহেশতি জেওর, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩২১)। 

সুবহে সাদিকের কাছাকাছি সময়ে সেহরি খাওয়া মুস্তাহাব। তবে এত দেরি করবে না যে, সুবহে সাদিক হওয়ার ব্যাপারে আশঙ্কা হয় এবং রোজার ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। (মারাকিহুল ফালাহ-৩৭৩)। 

মুসলমান ও অন্যান্য জাতির রোজার মাঝে পার্থক্য হচ্ছে সেহরি খাওয়া :

عن عمرو بن العاص ان رسول الله صلي الله عليه وسلم فصل ما بين صيامنا وصيام اهل الكتاب اكلة السحر

হজরত আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমাদের ও ইহুদি-নাসারাদের রোজার মাঝে পার্থক্য হলো, সেহরি খাওয়া। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নম্বর-(১০৯৬)।