• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

উচ্চ তাপ সহনশীল ধানের নতুন জাত উদ্ভাবন, দেখতে ছুটলেন মন্ত্রী

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০২১  

সম্প্রতি দেশজুড়ে উচ্চ তাপমাত্রা বা হিট শকে ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্রির উচ্চ তাপ সহনশীল ধানের নতুন জাত উদ্ভাবন হয়েছে।

জাত হিসেবে অনুমোদিত হলে ফুল ফোটা পর্যায়ে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলেও এ জাতটি ভালো ফলন দিতে পারবে।

এ সংক্রান্ত গবেষণার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য রোববার (১৮ এপ্রিল ২০২১) বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা মাঠে ছুটে আসেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। ভবিষ্যতে উচ্চ তাপমাত্রাজনিত বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য বিজ্ঞানীরা কী ধরনের গবেষণা করছেন মূলত সে সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভের জন্য তিনি অনেকটা আকস্মিকভাবেই ব্রির গবেষণা মাঠ পরিদর্শন করেন। প্রায় ঘণ্টাখানিক তিনি গাজীপুরে ব্রির গবেষণা মাঠে উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল ধানের গবেষণা প্লটসহ ব্লাস্ট ও বিএলবি প্রতিরোধী ধানের অগ্রগামী জাত, ব্রি উদ্ভাবিত বাসমতি টাইপ ধান, হাইব্রিড ধানের গবেষণা এবং ব্ল্যাক রাইসসহ বিভিন্ন উন্নত গুণ সম্পন্ন জাতের প্লটসমূহ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। পরিদর্শনকালে ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর মন্ত্রীকে বিভিন্ন গবেষণা প্লট সর্ম্পকে ব্রিফ করেন।  

বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বুঝতে পেরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০১৩ সাল থেকে উচ্চ তাপমাত্রা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনের গবেষণা শুরু করে। উচ্চ তাপমাত্রা সহিষ্ণু এন২২ (N22) জাতের সঙ্গে বোরো মৌসুমের জনপ্রিয় আধুনিক জাত ব্রি ধান২৮ এর সংকরায়ন করে মার্কার এসিসটেড ব্যাকক্রসিং পদ্ধতির মাধ্যমে একটি অগ্রগামী সারি নির্বাচন করেছে, যা মধ্যম মাত্রার উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল। এ সারিটি বর্তমানে আঞ্চলিক ফলন পরীক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে। ফলন ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হলে এটিকে জাত হিসেবে অনুমোদনের জন্য জাতীয় বীজ বোর্ডে আবেদন করা হবে।  

পরিদর্শনকালে তিনি সুপার হাইব্রিড ইউএস৮৮ (US-8) এবং ব্রি উদ্ভাবিত বোরো মৌসুমের ব্রি হাইব্রিড ধান৩, ব্রি হাইব্রিড ধান৫, ব্রি হাইব্রিড ধান৮ (প্রস্তাবিত) এবং বহুল প্রচলিত হাইব্রিড SL-8 ও তেজ গোল্ডের ফলনের তুলনামূলক পরীক্ষণ এবং ব্রি হাইব্রিড ধান৫-এর বীজ উৎপাদন প্লট পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি খাদ্য নিরাপত্তায় ব্রির বিজ্ঞানীদের প্রস্তুতি ও গবেষণা অগ্রগতি দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং ব্রি বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান।  

বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, ব্রি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. কৃষ্ণপদ হালদার, পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মো. আবু বকর ছিদ্দিক ও বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শনকালে কৃষিমন্ত্রী ড. মো, আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশজুড়ে হিট শকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার জন্য সরকার ইতোমধ্যে ৪২ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ও সহায়তা কর্মসূচিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে দেশের মেহনতি কৃষক ভাইদের এমন বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে না হয় সেজন্যই উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল এবং রোগ ও পোকামাকড় প্রতিরোধক উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনের বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে।  

মন্ত্রী বর্তমানে বৈরী পরিবেশ উপযোগী বিভিন্ন সহনশীল, পুষ্টিগুণ সম্পন্ন জাত উদ্ভাবনের গবেষণা অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দেখে ব্রির বিজ্ঞানীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।  

এ সময় ব্রিতে বহুল প্রত্যাশিত পেনশন স্কিম চালু করায় ব্রির সর্বস্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারী-শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

এর আগে সকালে কৃষিমন্ত্রী গাজীপুরের নীলের পাড়ায় কম্বাইন হার্ভেস্টারের মাধ্যমে স্কয়ার হসপিটালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. সানোয়ার হোসেনের আবাদকৃত ব্রি ধান৫০ (বাংলামতি) এর শস্য কর্তন প্রত্যক্ষ করেন।