• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

এশিয়ার উন্নতির জন্য প্রয়োজন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৯  

‘এ অঞ্চলের টেকসই উন্নতির জন্য শান্তি ও সম্প্রীতিপূর্ণ স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এজন্য এখানে ভূ-কৌশলগত বা রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, বরং সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা প্রয়োজন।’ বুধবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগের সমাপনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন একথা বলেন। গত সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে শুরু হওয়া এ আয়োজনে দেশি-বিদেশি প্রায় ১৫০ জন অংশ নেন।

ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগে তিন দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ, ডিজিটাল পরিবর্তন, ব্লু ইকোনমি, নারী নেতৃত্ব ও অর্থনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে ২০টির অধিক সেশন আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে এশিয়াতে আঞ্চলিক সহযোগিতার যে ধারণাগুলো নিয়ে বিভিন্ন বড় শক্তি কাজ করছে তাদের নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। সে সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, অর্থনৈতিক কারণে আমরা সব বিষয়ে সহযোগিতা করতে চাই।

এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘গত ৪৮ ঘণ্টায় আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এই অঞ্চল নিয়ে কথা বলেছি। সব বিষয়ে আমরা সবাই যে একমত হয়েছি তা নয়।’  তিনি বলেন, ‘আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি এবং অন্য সহযোগিতা ধারণাগুলো বিবেচনা করছি।’

সমাপনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানের ওপর ভিত্তি করে এক দেশ অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করবে এবং তখনই আমাদের সম্পদের সমবণ্টন হবে।’

বাণিজ্যিক বা নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে এই অঞ্চলকে না দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়ই শুধু কয়েকটি বড় অর্থনীতির সক্ষমতা বা প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি লক্ষ করি। কিন্তু সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলতে গেলে আমাদেরকে ছোট অর্থনীতির সমস্যাগুলোর সমাধানে ভূমিকা রাখতে হবে। এই অঞ্চলে যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো সবাই একসঙ্গে কাজ করলেই কেবল সমাধান করা সম্ভব।’

বর্তমান শতককে এশিয়া শতক হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলে সাপটা, বিমসটেক, বিআরআই, বিসিআইএমসহ বিভিন্ন ধারণা আছে। এর বাইরে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি ধারণা রূপ পেতে শুরু করেছে।’

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে অনেক ধারণা নিয়ে কাজ হচ্ছে; যেমন– সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান কোয়াড হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত এর উদ্দেশ্য সৎ এবং পরিষ্কার করে ব্যক্ত করা হচ্ছে।’ এই অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য আইনের শাসনকাঠামোসহ অন্যান্য প্রতিশ্রুতিকে আমাদের সমর্থন জানানো দরকার বলেও তিনি জানান।

২০১৭ সালের আগস্টের পরে রোহিঙ্গা সমস্যা যখন প্রকট আকার ধারণ করেছিল তখন দুজন মন্ত্রীকে মিয়ানমারে আলোচনার জন্য পাঠিয়ে সরকার অনেক বড় রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়েছিল বলে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা সেই সময়ে দুজন মন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলাম সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনার জন্য চুক্তি সই করতে।’

তিনি জানান, তাদের পাঠানো নিয়ে তখন অনেক সমালোচনা হয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করলে ভবিষ্যতে সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি হবে– এটি বুঝতে পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে তিনি বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করছি কিন্তু পরিস্থিতি আরও ভালো হতো যদি মিয়ানমার আরও বেশি সহযোগিতা করতো।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এবং ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই আয়োজন করে।  আগামী বছর নভেম্বরে দ্বিতীয় ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হবে বলে আয়োজনকারীরা অনুষ্ঠান শেষে জানান।