• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

কলকাতায় ২ বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় নতুন মোড়

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২২ আগস্ট ২০১৯  

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় মার্সিডিজে জাগুয়ারের ধাক্কায় দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার চার দিনের মাথায় ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। এতদিন যাকে দুর্ঘটনায় দায়ী মনে করা হচ্ছিল, আসলে তিনি নয়, ওই সময় জাগুয়ারের চালকের আসনে ছিলেন তারই বড় ভাই। 

বুধবার (২১ আগস্ট) অভিযুক্ত আরসালান পারভেজের বড় ভাই রাগিব পারভেজকে আটক করেছে পুলিশ।

গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) কলকাতায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান দুই বাংলাদেশি নাগরিক কাজী মইনুল আলম (৩৬) ও ফারহানা ইসলাম তানিয়া (৩০)। এসময় আহত হন আরও এক বাংলাদেশিসহ তিন জন।

শনিবার (১৭ আগস্ট) এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে আরসালান পারভেজকে (২১) গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বাবা কলকাতার একটি অভিজাত বিরিয়ানি শপের মালিক।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বড় ভাইকে বাঁচাতেই পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছিলেন আরসালান। দুর্ঘটনার সময় নিজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন দাবি করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।

আরসালানের বড় ভাই রাগিব পারভেজ (২৫) দুর্ঘটনার পরপরই দুবাই পালিয়ে যান। বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে দুর্ঘটনায় তার জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। বুধবার (২১ আগস্ট) কলকাতায় ফিরে আসলে একটি নার্সিংহোম থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে।

পুলিশ জানায়, আত্মসমর্পণকারী আরসালানের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। দুর্ঘটনায় এয়ারব্যাগ খুলে গেলেও চালকের মুখে এর প্রভাব পড়ে, যাকে সিলিকন বাইট বা এয়ারব্যাগ স্ক্র্যাপ বলা হয়। ডাক্তারি পরীক্ষাতে আরসালানের শরীরে এধরনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটি তিনি নয়, অন্য কেউ চালাচ্ছিলেন।

ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করায় দুই ভাইয়ের সঙ্গে তাদের চাচাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যায় গাড়ি দু’টি। ছবি: সংগৃহীত

জানা যায়, শুক্রবার (১৬ আগস্ট) গভীর রাতে কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি ও লাউডন স্ট্রিটের সংযোগস্থলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শেক্সপিয়র সরণি ধরে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের দিক থেকে কলামন্দিরের দিকে যাওয়ার সময় জাগুয়ার গাড়িটি সজোরে ধাক্কা মারে ওই মার্সিডিজকে। তখন সেখানে থাকা পথচারী কাজী মইনুল ও ফারহানা ইসলাম প্রায় পিষ্ট হয়ে যান। আহত হন সঙ্গে থাকা মইনুলের বন্ধু জিয়াদও। 

পুলিশ জানায়, বৃষ্টির মধ্যে প্রায় ১১০ কিলোমিটার গতিতে জাগুয়ারটি গিয়ে ধাক্কা মারে মার্সিডিজের মাঝামাঝি জায়গায়। এ সংঘর্ষের সময় জাগুয়ারটি চাপায় পিষ্ট হন রাস্তার পাশে পুলিশ কিয়স্কের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা দুই পথচারীও। গুরুতর জখম দু’জনকে নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন সূত্র জানায়, চোখের চিকিৎসার জন্য ১৫ দিন আগে কলকাতায় এসেছিলেন মইনুল, তার সঙ্গে অন্য দু’জনও। মইনুল চোখ দেখিয়েছিলেনও শঙ্কর নেত্রালয়ে। তিনজনেই উঠেছিলেন মারক্যুই স্ট্রিটের ভিআইপি হোটেলে।

ঝিনাইদহের বাসিন্দা মইনুল একটি মোবাইল অপারেটরে চাকরি করতেন। আর কুষ্টিয়ার বাসিন্দা তানিয়া একটি ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে চাকরিরত ছিলেন।