• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:

কিছু নিয়ম মেনে চলুন, হবে না জরায়ুমুখের ক্যান্সার

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

ভিলেনের নাম হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা 'এইচপিভি'। তবে সবাই নয়। এর মধ্যে নির্দিষ্ট দুটি থেকেই কেবল ক্যান্সার হতে পারে। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির সমীক্ষা অনুসারে, নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখেন এমন নারীদের শতকরা ৮০ জন ৫০ বছর বয়সের মধ্যে তাঁর সঙ্গীর যৌনাঙ্গে থাকা এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হন। ৩০-৩৪ বছর বয়স থেকে সে আশঙ্কা শুরু হয়। ৫৫–৬৫ বছর বয়সে তা সবচেয়ে বাড়ে।

শরীরে ঢোকার পর এই ভাইরাস দীর্ঘদিন চুপ করে থাকে। তার পর কোনো ইন্ধন পেলে বা কখনও হঠাৎই তা ক্ষত তৈরি করে জরায়ুমুখের ক্যান্সার ডেকে আনে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ যতজন সংক্রমিত হন, তার মধ্যে খুব কম সংখ্যকই আক্রান্ত হন ক্যান্সারে।

ক্যান্সারের ইন্ধন?
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, দীর্ঘদিন গর্ভনিরোধক পিল খাওয়া, বেশিসংখ্যক বার নরমাল ডেলিভারি বা গর্ভপাত হয়ে জরায়ুমুখে বার বার ঘষা লাগা, ১৭ বছর বয়সের আগে থেকে সহবাসের অভ্যাস, বেশি যৌনসঙ্গী থাকা, এইচআইভি জাতীয় যৌন সংক্রমণ, কোনো কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়া, যৌনাঙ্গের পরিচ্ছন্নতার অভাব, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত খাবার ও রঙিন শাকসবজি-ফল কম খাওয়া, ধূমপান করা ইত্যাদিই উসকে দিতে পারে এই ক্যান্সারকে।

সতর্কতা ঠেকাবে 
তবে কিছুটা সাবধান হলে ও সতর্ক থাকলে এই অসুখ থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়। কী কী নিয়মে ঠেকাবেন অসুখ? নিন চিকিৎসকের পরামর্শ।

১. বিপদ এড়াতে ভ্যাকসিন নেওয়া ভালো। তিনটি ইনজেকশন নিতে হয়। প্রথমটি নেওয়ার এক–দু মাসের মাথায় দ্বিতীয়টি, আর তৃতীয়টি দেওয়া হয় প্রথমটি নেওয়ার ৬ মাস পর। ৯-১২ বছর বয়সে ভ্যাকসিন নিলে প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে জরায়ুমুখের ক্যান্সার ঠেকানো যায়। ঠেকানো যায় ভালভা, ভ্যাজাইনা, অ্যানাল ক্যান্সারও।

২. যৌন জীবন শুরু হয়ে গেলেও, যদি ওই সংক্রমণ না হয়ে থাকে, ২৬ বছর বয়সের মধ্যে ভ্যাকসিন দিলে কাজ হয়। পুরুষের থেকে রোগ আসে বলে তাঁদেরও দেওয়া উচিত।

৩. ভ্যাকসিন নিলেও সামান্য কিছু ক্ষেত্রে রোগ হতে পারে। কাজেই যৌন জীবন শুরু হওয়ার পর প্রতিবছর বা এক বছর পর পর নিয়ম করে 'প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট' করতে হয়।

৪. যে যে উপসর্গ হলে সতর্ক হতে হবে তা হলো : পিরিয়ডের সময় ও ধরনের পরিবর্তন বা পিরিয়ডের সময় ছাড়া অন্য সময় রক্তপাত, বেদনাদায়ক সহবাস বা সহবাসের পর রক্তপাত, ঋতুবন্ধের পর রক্তপাত হওয়া, সাদা স্রাবের সঙ্গে অল্প রক্তের ছিটে বা দুর্গন্ধযুক্ত সাদা স্রাব। রোগ বেড়ে গেলে এর পাশাপাশি তলপেট ও কোমরে খুব ব্যথা, প্রস্রাবের সময় অসুবিধা, প্রস্রাব আটকে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি হতে পারে।

চিকিৎসা ও সেরে ওঠা
কলপোস্কোপ দিয়ে জরায়ুমুখ পরীক্ষা করে টিস্যু বায়োপসিতে পাঠানো হয়। রিপোর্ট পজিটিভ হলে সোনোগ্রাফি, রক্ত পরীক্ষা, বুকের এক্স রে ও স্ক্যান করতে হতে পারে। প্রথম পর্যায়ে অস্ত্রোপচার করে জরায়ুমুখ বাদ দিলেই চলে। অনেক সময় রে দিলেও হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে জরায়ু, টিউব, ওভারি এবং কিছু গ্ল্যান্ড বাদ দিয়ে রে দেওয়া হয়। পরের ধাপে লাগতে পারে কেমো–রেডিয়েশন। অ্যাডভান্স স্টেজে কেমোথেরাপি দিতে হয়। টার্গেটেড কেমোথেরাপিও দেওয়া যেতে পারে।

ক্যান্সার হওয়ার আগের পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে ছোট সার্জারিতে কাজ হয়। স্টেজ ১ ও ২–তেও রোগ সারে। রোগ এগিয়ে গেলে চিকিৎসায় অনেক দিন ভালোও থাকেন রোগী।