• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

কৃষি খাতের প্রতি আমার আলাদা আগ্রহ আছে: সাকিব

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১২ মে ২০২০  

‘খুব ছোটবেলা থেকে কৃষি কাজের প্রতি আমার প্রবল আগ্রহ। নানার বাড়িতে থাকতে সূর্য ওঠার আগে মাঠে যেতাম। মরিচ কুঁড়ানো দেখতাম, ধান কাটা দেখতাম। আমি নিজেই ধান কাটতে গিয়ে রক্ত ঝরিয়েছি। এছাড়াও ধান মাড়ানো, ঢেঁকি ভাঙা এই বিষয়গুলো কৃষির প্রতি আমার আলাদা টানের সৃষ্টি করেছে। আর তাই আমি ছোট আকারে অনেকগুলো ব্যবসা করার চেষ্টা করেছি কৃষিকে ঘিরে।’-ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে অবসরের পরে কী করতে পারেন তাঁরই যেন একটা ধারণা দিলেন বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান।

তবে কেবল কৃষিকাজ নয় সাকিবের বড় আগ্রহ নিজের চ্যারিটি ফাউন্ডেশন ‘দ্য সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন’ কে ঘিরেও আছে। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ক্রিকেট একাডেমি ছাড়াও দেশের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে অবদান রাখতে চান সাকিব। এছাড়াও আলাপকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভবিষ্যতে থাকবেন কিনা ও নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় ম্যাচের কথা তুলে এনেছেন বাংলাদেশের পোস্টার বয় সাকিব।

ডয়চে ভেলের সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন সাকিবের কাছে জানতে চান, ক্রিকেট থেকে অবসরের পর কী করে সময় কাটাবে সাকিব? ধারাভাষ্যে আসবেন কি এর উত্তরে সাকিব বলেন, ‘বাংলায় ধারাভাষ্য হলে এতোদিনে শুরু করে দিতাম। তবে ইংরেজি ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য আরও দক্ষ হওয়া লাগবে। তবে চেষ্টা করলে সম্ভব।’

এরপরে আরও যোগ করেন, ‘এই মুহূর্তে ভেবে বললে বলতে হয় আমার টার্গেট দুইটা। আমার ফাউন্ডেশন থেকে একটা ক্রিকেট একাডেমি চালু করতে চাই। যেটা করবো বলে ফাউন্ডেশন চালু করেছি। তবে আমার দেশের স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা এই দুইটা খাতেও কাজ করার ইচ্ছা আছে। এই তিনটা জিনিস আমি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে করতে চাই।’

তবে কৃষির প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে জানিয়ে সাকিব আরও যোগ করেন, ‘আমার কৃষি খাতের প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে। আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন, আমার ছোট ছোট ব্যবসাগুলো কৃষিকেন্দ্রিক। যদিও আমি এগুলোতে তেমন নজর দেয়নি। কিন্তু আমি চেয়েছি আমার খেলা শেষ হতে হতে যেন এগুলা দাঁড়িয়ে যায়। যাতে আমি অবসরের শেষে এসবে মনযোগ দিতে পারি।’

এরপরে নিজের কিছু চেষ্টা নিয়ে আরও যোগ করেন, ‘আমি ভবিষ্যতে গরু, ছাগলের ফার্ম, মাছ বা কাঁকড়ার হ্যাচারি দিয়ে হলেও কৃষিখাতে অবদান রাখতে চাই। আসলে কৃষির যে কোনো শাখা হতে পারে। যেমন ফুলও হতে পারে। আমি এজন্য ৪০-৫০ শতক জায়গা জুড়ে ফুল চাষ শুরুও করেছিলাম। ভালোই চলছিল। যদিও করোনার কারনে তা এখন বন্ধ হয়ে আছে।’

এদিকে মেয়ে হওয়ার সুবাদে গত দেড় মাসের বেশি আমেরিকাতে অবস্থান করছেন সাকিব। ভবিষ্যতে সেখানে স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে কিনা, আলাপকালে তা জানতে চাওয়া হয় সাকিবের কাছে। কিন্তু নিজের দেশের বাইরে কিছু ভাবছেন না জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতটা অনেক বড়। ওইটার পরে আর অন্য কোনো জাতীয় সংগীত মুখস্ত করা যাবে বলে আমার মনে হয় না। তাই আমেরিকাতে থাকার কোনো মানেই হয় না। তবে ভবিষ্যত বলা যায় না।’

‘আমি এখন বাংলাদেশে সুখে আছি, ভালো আছি। ওইখানে থাকার জন্য যত রকম সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন, সব আছে আমার। তাহলে আমি কেন আরেক জায়গায় গিয়ে থাকবো? আমার তাই আমেরিকায় থাকার সুযোগ এখনো নেই। আমার মনে হয় না ভবিষ্যতেও এর সুযোগ আছে।’

এরপর নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বাংলাদেশ ও নিজের কিছু স্মরণীয় জয় নিয়ে সাকিব বলেন, ‘২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় আমার স্মরণীয় জয়ের মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারত ও ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ও আমার কাছে অনেক স্মরণীয়।’

এরপর ব্যক্তিগত প্রিয় ম্যাচের মধ্য থেকে বলতে গিয়ে আরও যোগ করেন, ‘২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটা ম্যাচে খুব কঠিন অবস্থা থেকে আমি ম্যাচ জিতিয়েছিলাম। সেই ম্যাচটা আমার অনেক প্রিয়। এছাড়াও গেল বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ আমার প্রিয়দের তালিকায় অন্যতম। হয়তো এমন আরও অনেক আছে, তবে এখন ঠিক মনে পড়ছে না।’