• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

কোভিড-১৯ সারাবে `সেবোটিরাম`!

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০২০  

করোনার ভয়াল আঘাতে মৃত্যুপুরী হয়ে উঠছে বিশ্বের একের পর এক দেশ। এরই মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬১ হাজার। আক্রান্ত প্রায় ১২ লাখ। যেন ভেঙেচুরে তছনছ করে দিচ্ছে পৃথিবী। একে রুখার উপায় অজানা। মহামারির মৃত্যুগ্রাসে অসহায় বন্দি মানুষ। যেন মৃত্যুর অপেক্ষায় বেঁচে থাকা। এর শেষ কোথায়? এমন প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশ্বের বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীদেরও।

নোভেল করোনাভাইরাস সাধারণ কোন ফ্লু ভাইরাস নয়, জিনের গঠন বদলে প্রতিনিয়ত এই ভাইরাস নিজের চরিত্রই বদলে ফেলছে। সংক্রমণ রোখার ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়াও তাই বিলম্বিত হচ্ছে। আপাতত কিভাবে এটার সংক্রমণ রুখা যায় সেটার সন্ধান করতেই ব্যস্ত ডাক্তাররা। বিভিন্ন রকম ওষুধ দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।

কয়েক বছর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির ফুসফুস বিশেষজ্ঞ ডা. নাফতলি কামিনস্কি ফুসফুসের ফাইব্রোসিসের জন্য একটি ড্রাগ তৈরি শুরু করেছিলেন, যা এখন কোভিড-১৯-এর নির্দিষ্ট জীবন-হুমকির প্রভাবগুলির বিরুদ্ধে কার্যকর বলে মনে হচ্ছে। সোবেটিরোম নামক ওষুধটি ক্ষতচিহ্নকে নিরাময় করে এবং ফুসফুসে কোষের কার্যকারিতা উন্নত করে।

একটি নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, সোবেটিরোম তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ সিনড্রোম (এআরডিএস) প্রতিরোধ ও চিকিৎসা করার ক্ষেত্রেও কার্যকর। প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ ভাইরাস ফুসফুসে ফুটো করে দেয়, ফলে তরল বেরিয়ে আসে। আর এ কারণে রোগীদের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, বিশেষত কোভিড-১৯ আক্রান্ত বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।

ডা. নাফতালি কামিনস্কি বলেছিলেন, 'ইঁদুরের ওপর চালানো পরীক্ষায় সোবেটিরোম কার্যকারিতা অবাক করার মতো ছিল। ইঁদুরগুলির মাঝে আমরা উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখেছি। ওষুধটি এখনও মানুষের এআরডিএসের জন্য পরীক্ষা করা হয়নি। তবে প্রয়োজনীয় তহবিল পেলে দ্রুত এটিকে মানুষের ওপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হবে। ইয়েল-নিউ হ্যাভেন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে ২০-৩০ জন রোগী রয়েছে, যে কোন দিন তাদের ওপর পরীক্ষা চালানো হতে পারে।'

রোগীদের শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস এবং শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যর্থতা অনুভব করা শুরু করার আগে কোভিড -১৯ এর একটি" লুকানো সময়কাল থাকে। অভ্যন্তরীণভাবে, শরীরে যা ঘটছে তা 'সাইটোকাইন ঝড়' হিসাবে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রচুর পরিমাণে বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন। যা ফুসফুসে প্রতিরোধক কোষ এবং তরল বৃদ্ধি করে কোভিড-১৯ ভাইরাসকে পরাজিত করতে পারে। সোবেটিরোম ফুসফুসের ক্ষত সারিয়ে সেই তরল বৃদ্ধিতে কাজ করে। ফলে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।

আমরা যদি কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক উপসর্গ নিয়ে লুকোচুরি না করি তাহলে সহজেই এই প্রাণঘাতী রোগের হাত থেকে বাঁচতে পারি। প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা সম্ভব হলে ফুসফুসের ক্ষতিড়গ্রস্থ কোষ মেরামত করে করোনা প্রতিরোধ করতে পারি। সেবোটিরোম এরই মধ্যে মানুষের উপর পরীক্ষা করা হয়েছে এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে।

কামিনস্কির মতে, এটি কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য ড্রাগ হিসাবে অনুমোদন পেলে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারবে।