• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:

গুজবকে ‘সব বাজে কথা’ বললেন বঙ্গবন্ধু

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২০  

 

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ছড়ানো গুজবকে ‘সব বাজে কথা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। ‘দেশের জনগণের প্রতি আমার দায়িত্ব আছে’ উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু তাঁকে ঘিরে যেসব গুজব রটেছে, সেগুলো কায়েমী স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অভিযানের অংশ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার জন্য এসব গুজব রটানো হচ্ছে।’
বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য ও গুজবকে ‘সব বাজে কথা’ বলে উল্লেখ করে ১৯৭২ সালের ২৮ মে বাসস এই খবর পরিবেশন করে। দেশে নানান ধরনের যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে, সে সম্পর্কে অভিমত চাওয়া হলে বঙ্গবন্ধু এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার দেশের জনগণের প্রতি আমার দায়িত্ব রয়েছে। এটা সবার বোঝা উচিত।’ বঙ্গবন্ধু শাসনতন্ত্র বিবেচনার জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠক এবং দেশের জনসংখ্যার সমস্যা সমাধানের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। সরকারের কতগুলো সিদ্ধান্ত স্বার্থবাদী মহলকে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে। অপরদিকে জনগণের কল্যাণে প্রতিশ্রুতবদ্ধ নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা নাখোশ হয়েছে বলে এধরনের ঘটনা ঘটছে বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।


এদিন (২৮ মে) এক অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছিল। তাঁর সংগ্রহশালা থেকে হারিয়ে যাওয়া বই ফেরত পেয়ে বঙ্গবন্ধু আবেগে হারুন-অর-রশীদ নামে এক যুবককে বুকে টেনে নেন। ২৯ মে’র পত্রিকায় এই আবেগঘন মুহূর্তের ছবি প্রকাশিত হয়। ১৯৭১ সালের মার্চের পর বঙ্গবন্ধুর অনেক মূল্যবান বই হারিয়ে যায়। তাঁর বাড়িতে লুটপাটের খবর পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু প্রাণে রক্ষা পেয়ে ফিরে আসলে তাকে বইগুলো তিনি ফেরত দেবেন— এই আশাতে সেগুলো কিনে রাখেন হারুন অর রশীদ। তার সেই আশার শেষ দিন ছিল ২৮ মে। এদিন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে তাঁর বইগুলো ফেরত দেন তিনি। এসময় এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।
‘সামাজিক শত্রু দমন পক্ষ’
‘সামাজিক শত্রু দমন পক্ষ’ সফল করতে ডাকসুর বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মাখন একটি বিবৃতি দেন। সব দেশপ্রেমিক ছাত্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বিবৃতিতে বলেন, ‘সামাজিক শত্রু দমনের সিদ্ধান্তকে মুজিববাদের ভিত্তিতে সুখী সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গঠনে মানুষের একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।’ এর আগে ২৭ মে এক ঘোষণায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (নূরে আলম ও মাখনের নেতৃত্বাধীন) দেশে সমাজবিরোধীদের দমন করার জন্য ১৯৭২ সালের ৮ জুন থেকে ‘সামাজিক শত্রু দমন পক্ষ’ পালন করার কথা জানায়। সংগঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রলীগ সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে তাদের কর্মসূচি সফল করার জন্য আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী, লাল বাহিনী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নসহ সব দেশপ্রেমিক শক্তির সহযোগিতা আহ্বান করেছে।


রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পে ধর্মঘট নিষিদ্ধ
২৮ মে রাতে প্রেসিডেন্টের জারি করা এক আদেশে ছয় মাসের জন্য জাতীয়করণ করা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মঘট এবং শ্রমিকদের অযৌক্তিক তৎপরতা বেআইনি ঘোষণা করা হয়। আদেশে বলা হয়, আদেশ লঙ্ঘন করলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পাঁচ বছর কারাদণ্ড অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। শ্রমিকদের তৎপরতা নিষিদ্ধ করে সরকার জানিয়েছে যে, শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখার জন্য সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, এসব শিল্প কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করার যেকোনও ষড়যন্ত্র সরকার কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে।