• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

ঘোড়ার উন্নত জাত উদ্ভাবনে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীর সাফল্য

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০১৯  

জাপানের ইতিহাসে প্রথমবারের মত ভ্রুণ স্থানান্তর প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘোড়ার বাচ্চা প্রসব করানো হয়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে গরু ও মহিষের উন্নত জাত উদ্ভাবন এবং উৎপাদন বাড়াতে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। এ সংক্রান্ত গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশি তরুণ বিজ্ঞানী, সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিনহাজ এ হান্নান।

গবেষণায় ইউরোপীয় একটি ঘোড়ার শুক্রাণু দিয়ে জাপানি মাদি ঘোড়ার কৃত্রিম প্রজনন করানো হয়। সেখান থেকে ভ্রূণ সংগ্রহ করে অন্য একটি মাদি ঘোড়ার গর্ভে রাখা হয়, যা ১০ এপ্রিল একটি সুস্থ বাচ্চা প্রসব করে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজ্ঞানী হান্নান বলেন, 'ভ্রুণ স্থানান্তরের মাধ্যমে জাপানে আমরা ঘোড়ার যে প্রজনন করেছি, আমি এটা বাংলাদেশে গরুর ক্ষেত্রে করতে চাই। বাংলাদেশে উন্নত জাতের গরুর সঙ্কট আছে। সেজন্য এ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বেশি উৎপাদনশীল উন্নত গরুর জাত উদ্ভাবন সম্ভব। বাংলাদেশে গরু ও মহিষের উপর এ প্রযুক্তির ব্যবহার করা যাবে।

জাপানের অবিহিরো ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচার এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াসুও নামবোর তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি হয়েছে। গবেষণার ফলাফল আন্তর্জাতিক জার্নাল দ্য জার্নাল অব ভেটেরিনারি মেডিসিন সায়েন্স - এ প্রকাশিত হয়েছে। জাপানের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকেও এ সংক্রান্ত খবর ছাপা হয়েছে। তিন বছর ধরে এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘোড়ার প্রজনন নিয়ে গবেষণা হচ্ছিল। কিন্তু গর্ভে থাকা অবস্থায় দুই থেকে আড়াই মাসেই বাচ্চাগুলো মারা যাচ্ছিলো। এই প্রথম একটি সুস্থ বাচ্চা প্রসব হলো।

জাপানে গবেষণা সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা বলছেন, এই প্রযুক্তিতে বাচ্চা উৎপাদনে নানা উপকারিতা রয়েছে। প্রচলিত পদ্ধতিতে একটি গরু, ঘোড়া বা মহিষ থেকে বছরে একটি বাচ্চা পাওয়া সম্ভব। কিন্তু ভ্রূণ স্থানান্তর প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি প্রাণী থেকে বছরে একাধিক বাচ্চা পাওয়া সম্ভব।

ময়মনসিংহের সন্তান অধ্যাপক হান্নান বর্তমানে জাপানে রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) থেকে স্নাতক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন থেকে যৌথ প্রোগ্রামে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরে জাপানের ওসাকা প্রিফেকচার ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন এবং বাংলাদেশে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি শিক্ষা ছুটিতে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষক হিসেবে জাপানে কর্মরত।