• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

চীনের নাগরিক হত্যাকান্ডের ঘটনায় উন্নয়ন কাজে কোন সমস্যা হবে না

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০২০  

পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের কঁচা নদীর উপর নির্মানাধীন ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর প্রকল্প এলাকায় চীনের এক টেকনিশিয়ান হত্যাকান্ডের ঘটনায় বাংলাদেশে চীনের সহায়তায় চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডে কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুর সার্কিট হাউসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধ পরিকর। তবে পিরোজপুরে যে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে পদক্ষেপ গ্রহন করেছে প্রকল্প এলাকায় কর্মরত চীনের নাগরিকবৃন্দ এবং চীনের হাই কমিশন সন্তোষ প্রকাশ করেছে বলেও জানান মন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক আবু আলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান, র‌্যাব- ৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর জাহাঙ্গীর আলম, ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রকল্পের ২ কর্মকর্তা, কোস্ট গার্ড ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় পুলিশ সুপার জানান, চীনের নাগরিককে হত্যার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি পুলিশ সুপার।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর ব্যারাক থেকে স্থানীয় শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য নির্মানাধীন ব্রিজের দিকে সাইকেলযোগে আড়াই লক্ষ টাকা নিয়ে একা যাচ্ছিলেন প্যান ইউং জুন (৫৮) নামের ওই টেকনিশিয়ান। এসময় পথিমধ্যে প্যানকে ছুরিকাঘাত টাকা ছিনতাই করে নিয়ে পালিয়ে যায় এক ছিনতাইকারী। গুরুতর জখম প্যানকে সেখান থেকে উদ্ধার করে সহকর্মীরা পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। এ ঘটনার পর থেকে সদর উপজেলার কুমিরমারা গ্রামে প্রকল্প এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছে পুলিশ। এছাড়া র‌্যাব ও পুলিশের পাশাপাশি কোস্ট গার্ডের ২ টি টিম রাত থেকেই প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করছেন। তবে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে প্রকল্প এলাকা ও এর আশপাশে।

এরপরই রাতেই এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ সিরাজ শেখ (৩৫) ও রানা (২৫) নামের দুই যুবককে আটক করে। গ্রেফতারকৃত সিরাজ সদর উপজেলার গুয়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস ছত্তার শেখ এর ছেলে এবং রানা কুমারখালী এলাকার বাবুল শেখ এর ছেলে। বুধবার রাতে পুলিশ তাদেরকে পিরোজপুর শহরের একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করে।

হত্যাকান্ডের এ ঘটনায় বুধবার রাতে প্রকল্পের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা চাও চিং হুয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে পিরোজপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা সড়কের কঁচা নদীতে ৮২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন এ ব্রিজের কাজ ২০১৭ সালে শুরু হয় যা আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগীতায় নির্মানাধীন সেতুটির কাজ সম্পন্ন হলে পুরো দক্ষিণাঞ্চল সরাসরি সড়ক যোগাযোগের আওতায় আসবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চলমান এ প্রকল্পে বর্তমানে ৩৮ জন চীনের নাগরিক অবস্থান করছেন। আর কাজটি বাস্তবায়ন করছে চীনের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।