• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

জমজমাট কাউখালীর আমন চারার ভাসমান হাট

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০১৯  

 

 

 

  পিরোজপুরের কাউখালীতে জমে উঠেছে আমন ধানের চারার হাট। উপজেলার চিরাপাড়া নদীর ব্রিজের নিচে ভাসমান এই হাট বসে প্রতি শুক্রবার ও সোমবার। এই দুই দিন ভোর থেকেই আমন চারা বেচাকেনায় জমজমাট হয়ে ওঠে হাট।

গত বছরের তুলনায় এ বছর আমন ধানের চারার দাম একটু বেশি। তারপরও অনেকটা বাধ্য হয়েই বেশি দামে চারা কিনছেন কৃষকেরা। 

গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, সকালেই বসেছে চারা বেচাকেনার হাট। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষকেরা বিক্রির জন্য শত শত নৌকায় করে নিয়ে আসছেন ধানের চারা।
 

কাউখালী উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় এখন চলছে আমন ধান আবাদের মৌসুম। কৃষকেরা মাঠের পরিচর্যা করে চারা লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমের শুরুতে টানা বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া ও বীজতলায় জলাবদ্ধতার কারণে অধিকাংশ কৃষক সময়মতো চারা উৎপাদন করতে পারেননি। তবে, সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে নতুন উদ্যোমে শুরু হয়েছে আমনের আবাদ। তাই, কৃষকেরা আমন ধানের চারা কিনতে ছুটছেন কাউখালীর চারার হাটে।

কাউখালী উপজেলার বেশিরভাগ জমি অন্য এলাকার তুলনায় উঁচু ও নদীবেষ্টিত হওয়ায় এখানে জলাবদ্ধতা নেই বললেই চলে। তাই বীজতলাও নষ্ট হয় না। এ কারণে অন্য এলাকার কৃষকেরাও আমন ধানের চারার সংকট কাটাতে কাউখালীর হাটে আসেন।

কাউখালীর স্থানীয় জাতের আমনের চারা ভালো মানের ও বেশি লম্বা হওয়ায় অন্য এলাকার কৃষকেরা ভিড় করেন এ হাটে। কাউখালী চারার হাট থেকে ভান্ডারিয়া, নাজিরপুর, নেছারাবাদ, রাজাপুর, ঝালকাঠী, পিরোজপুর উপজেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ধানের চারা কিনে নিয়ে যান। এই হাটে আমন ধানের চারা পোন (৮০ মুঠো) হিসেবে বিক্রি হয়। প্রতি পোন চারার মূল্য আটশ’ থেকে ১২শ’ টাকা।

জেলার নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের বুইচাকাঠী থেকে চারা কিনতে আসা কৃষক মো. নিজাম হাওলাদার  বলেন, আমন চাষের জন্য বীজতলা তৈরির বীজ-ধান সংগ্রহ করা, তা দিয়ে বীজতলা তৈরি করে চারা উৎপাদনে বেশ সময় লাগে। তাই কৃষকেরা এই হাটে এসে প্রয়োজনীয় চারা কিনে নিয়ে জমিতে রোপণ করেন। এতে জমির মালিকদের অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হয়।

কাউখালীর হাটে আমনের চারা কিনতে ভিড় করেন কৃষকেরা। ছবি: বাংলানিউজ

চারা কিনতে আসা ঝালকাঠী জেলার রাজাপুর উপজেলার কৃষক মৃণাল কান্তি রায়  বলেন, এখন ধানের জমি চাষ করতে শ্রমিক পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও তাদের দৈনিক মজুরি ছয় থেকে সাতশ’ টাকা দিতে হয়। এত টাকা খরচ করে বীজতলা তৈরির চেয়ে চারা কিনে চাষাবাদ করলে খরচ অনেক কম হয়। সদর উপজেলার থেকে আসা কৃষক মো. সাইফুল ইসলাম কাজী বলেন, আমাদের এলাকার জমি নিচু। এজন্য জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। তাই, সময়মতো বীজতলা তৈরি করতে পারি না। এই হাটের চারাগুলো লম্বা ও ভালো মানের। তাই, সবসময় এখান থেকে চারা কিনেই জমিতে রোপণ করি।কাউখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলী আজিম শরীফ  বলেন, এই এলাকার জমি একটু উঁচু ও নদীবেষ্টিত হওয়ায় পানি জমতে পারে না। তাই এখানকার কৃষকেরা সময়মতো আমন ধানের চারার বীজতলা তৈরি করতে পারেন। কাউখালীর আমন ধানের চারা ভালো ও লম্বা হওয়ায় পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়। তাই, কৃষকদের কাউখালীর আমন ধানের চারার প্রতি আগ্রহ বেশি।