• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

পদ্মাসেতুর ওয়েল্ডিং কাজ করে ফেলতে পারে রোবট

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৫ এপ্রিল ২০২০  

 

 

চীনে আটকাপড়া শ্রমিকের অপেক্ষায় না থেকে রোবট এনে পদ্মাসেতুর স্প্যানের কাজ চলছে। প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, এ সব মেশিন রোবট বা সেমি রোবট। সুইচে টিপ দিলে উপরে নিচে এবং নির্দিষ্ট দূরত্বে গিয়ে সেতুর ওয়েল্ডিং কাজ করে ফেলতে পারে রোবট।

চলতি এপ্রিল মাসে পদ্মা সেতুতে আরও দুটি স্প্যান বসিয়ে দেওয়া হবে। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতে ২০ ও ২১ নম্বর খুঁটির উপর ২৮তম স্প্যান ও মাসের শেষ দিকে ১৯ ও ২০ নম্বর খুঁটির উপর ২৯তম স্প্যান বসানো হবে।

চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মকর্তারা জানান, একেকটি রোবট মেশিন কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিকের কাজ করে ফেলতে পারে। তার সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রমিক যারা এতদিন চীনা শ্রমিকের সঙ্গে মিশে এ কাজ করেছিলেন তারাও দক্ষ হয়ে উঠেছেন। এখন রোবটের পাশাপাশি দক্ষ কিছু বাংলাদেশি শ্রমিক এই ওয়েল্ডিং কাজ করছেন।

চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির একজন প্রকৌশলী জানান, পদ্মাসেতু প্রকল্পে স্প্যান ওয়েল্ডিং কাজের জন্য মূলত মেশিন রোবটগুলো আনা হয়েছিল। প্রায় মাসখানেক সময় ধরে মেশিনগুলো স্পেন ফেব্রিকেশন ইয়ার্ডের ভেতরে কাজ করছে।

স্পেন ফেব্রিকেশন ইয়ার্ডে আগে যেসব চীনা শ্রমিক কাজ করতেন তাদের অনেকেই ছুটিতে চীনে গিয়ে ফিরতে পারেননি। তাদের শূন্যতায় এ রোবট মেশিন আনা হয় এবং তার সঙ্গে যেসব বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করতেন তারাও কাজ করছেন। অনেক বাংলাদেশের শ্রমিক এখন সেতুর স্প্যান জায়ান্টদের কাজে দক্ষ হয়ে উঠেছেন। তারাই মূলত এখন মূল কাজ করছেন।

বর্ণনা দিয়ে এই প্রকৌশলী বলেন, ‘ট্রেন লাইনের মতো জায়গায় এই মেশিনগুলো সেট করে দেওয়া হলে এগুলো চলতে থাকে এবং কাজ করতে থাকে। প্রয়োজন মতো উপর নিচে ওঠে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেতুর স্প্যান জায়ান্ট বিল্ডিং কাজ করে ফেলতে পারে। তারপর আবার সুইচ বন্ধ করলে মেশিনগুলো কার্যক্রম বন্ধ করে।’

পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, মূল সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে মাওয়া এসেছে ৩৯টি। ২৭টি স্থাপন করা হয়েছে। যার দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৫০ মিটার। অবশিষ্ট ২টি স্প্যান চীনে নির্মাণ সম্পন্ন করে রাখা। এখন সে দুটির ব্লাস্টিং ও পেইন্টিং কাজ চলছে। আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে চীন থেকে এ দুটি বাংলাদেশে রওনা দেবে।

আর এখন স্পেন ফেব্রিকেশন ইয়ার্ডে ১২টি স্পেনের কাজ চলছে। এরমধ্যে ২টি প্রস্তুত আকারে রয়েছে। বাকিগুলোর কাজ ১৫ টি সেমি রোবট মেশিনের সাহায্যে চলছে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। আগে ক্রেন বা মেশিন পরিচালনায় যে চীনা শ্রমিক কাজ করতেন তার জায়গায় বাংলাদেশিরা কাজ করছেন।

গত ৩১ মার্চ শেষ হয়েছে পদ্মা সেতুর সবশেষ খুটি নির্মাণ কাজ। মুল নদীতে ৪২টি খুঁটিসহ নদীর দুই পাড়ে ১৩৩টি খুঁটির সবগুলো এখন প্রস্তুত। বাকি রয়েছে ১৪টি স্প্যান উঠানো। জাজিরা প্রান্ত থেকে প্রায় এক কিলোমিটার এগিয়েছে সড়কপথ নির্মাণ।