• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

বছরে সাত লাখ মানুষকে হত্যা করছে ব্রয়লার মুরগি

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৯  

অবাক করার মতো ব্যপার, পাঁচ সপ্তাহেই ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়! মাত্র ১৮০০ গ্রাম ম্যাশ খাওয়ালেই এক কেজির নিট মাংস! দুই কেজি ওজনের মুরগি জবাইয়ের আগে ম্যাশ খাচ্ছে সাড়ে ৩ কেজি! রহস্যটা কী? ম্যাশের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম। ইনজেকশন পুশ করে দেয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। চড়চড় করে বড় হচ্ছে মুরগি, হু হু করে বাড়ছে ওজন। এই ব্রয়লারের মুরগিই বিক্রি হচ্ছে বাজারে। তারপর আরাম করে চেটেপুটে খাচ্ছি। কিন্তু কী খাচ্ছি সেটা জানি আমরা? না! জানলে বছরে সাত লাখ মানুষকে হত্যার সুযোগ পেত না ব্রয়লার মুরগি!

একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে, বেশি মাংস পাওয়ার লোভে মুরগিকে খাওয়ানো হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। এই লোভে যেভাবে মুরগিদের মোটা করা হয় তা একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। এসব মুরগি খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং ক্যান্সার দানা বাঁধে শরীরে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবুল হোসেন তার গবেষণায় দেখতে পান প্রতি ১০০০ গ্রাম মুরগীর মাংসে ক্রমিয়াম আছে ৩৫০মাইক্রোগ্রাম। হাড়ে ক্রমিয়াম আছে ২০০০ মাইক্রো গ্রাম। কলিজায় ক্রমিয়াম আছে ৬১২ মাইক্রো গ্রাম, মগজে ৪৫২০ ও রক্তে আছে ৭৯০ মাইক্রো গ্রাম।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিওএইচও)-এর মতে, একজন মানুষ ৩৫ মাইক্রোগ্রাম ক্রমিয়াম গ্রহণ করতে পারে। এর বেশি হলে তা দেহের জন্যে ক্ষতিকর। আমরা যদি ২৫০গ্রাম ওজনের এক টুকরা মাংস খাই তবে আমদের দেহে প্রবেশ করছে ৮৭.৫ মাইক্রোগ্রাম ক্রমিয়াম যা অনেক বেশি ।

কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মতে, ব্রয়লার মুরগির মাংসে এবং ডিমে এসব এন্টিবায়োটিক থাকে। যা খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে প্রবেশ করে এবং আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে অনেকেরই ছোটখাটো পেটের রোগ, গ্যাস, অম্বল, সর্দিকাশি, ইনফেকশনের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রয়োজন হয়। কারো কারো নগন্য রোগ সারাতে ডাক্তারদের দারস্থ হতে হয়। এর কারণে আমাদের শরীরে যে অ্যান্টিবায়োটিকের একাধিক কুপ্রভাব পড়বে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

ব্রয়লার মুরগিকে খাওয়ানোর জন্য সারাবিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৬৩ হাজার ১৫১ টন অ্যান্টিবায়োটিক লাগে। এসব মুরগি খেলে ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাছাড়া এসব কাঁচা মাংসে প্রচুর মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তাহলে আর রক্ষা নেই। যা বছরে ৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে।