• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

বিশ্ব এইডস দিবস: সচেতনতাই বাঁচাতে পারে

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৯  

আজ বিশ্ব এইডস দিবস। পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভবের পর থেকেই শুরু হয়েছে বেঁচে থাকার সংগ্রাম। এ সংগ্রামে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং নানা রোগব্যাধি মোকাবেলা করতে হচ্ছে মানবসমাজকে। এইডস একটি ভয়ানক সংক্রামক রোগ। এইচআইভি নামক ভাইরাস রক্তে প্রবেশ করলে মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। তখন অনেক রোগ একত্রে আক্রমণ করে ওই মানুষকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। এই ঘাতক ব্যাধি পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সহজে ছড়িয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে শতকরা সিংহভাগ নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে উন্নয়নশীল দেশে। এটি আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের মানুষের জন্য উদ্বেগজনক। জানা যায়, প্রতি ১০ সেকেন্ডে ২৫ বছরের কমবয়সী একজন তরুণ বা তরুণী এইচআইভি দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে এইচআইভি আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৯ লাখ (২০১৮)। ২০০৮ সাল থেকে প্রতিদিন নতুনভাবে এক হাজারেরও বেশি শিশু এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছে। UNAIDS-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১১ হাজারের কিছু বেশি। এক সমীক্ষা অনুযায়ী, এইডস/এইচআইভিতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ১ হাজার ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। উল্লেখ্য, এইচআইভি জীবাণু মানবদেহে প্রবেশ করার পর এইডস রোগ দেখা দেয়। এইচআইভির জীবাণু বহনকারী ব্যক্তির এইডস হতে ৮ মাস থেকে ১০ বছর সময় লাগে। এইচআইভি জীবাণু চার উপায়ে মানবদেহে প্রবেশ করে।

১. এইডস আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সংসর্গের মাধ্যমে।

২. এইডস আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির রক্ত বা রক্তজাত উপাদান সুস্থ ব্যক্তির দেহে পরিসঞ্চালনের মাধ্যমে।

৩. এইচআইভি সংক্রমিত ইনজেকশনের ছুঁচ, সিরিঞ্জ, দাঁতের চিকিৎসায় ব্যবহার্য যন্ত্রপাতি এবং অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির মাধ্যমে।

৪. এইডস ভাইরাস আক্রান্ত মা থেকে গর্ভস্থ শিশুর দেহে এবং বুকের দুধ খায়ানোর মাধ্যমে।

এইডসের চিকিৎসার কার্যকর ওষুধ এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। তাই প্রতিরোধই প্রধান উপায়। উপরে উল্লেখিত চার বিষয়ে সচেতন থেকে এইডস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

উদ্বেগের বিষয় হল, দেশের তরুণ তথা যুবক শ্রেণি এইডস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। নতুন সমাজ গড়ে তুলতে তারুণ্যের বিকল্প নেই। ঘাতক ব্যাধি এইডস আমাদের তরুণ সমাজকে শেষ করে দিক, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এইডস থেকে নিজেকে এবং সমাজ ও মানবসভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে। এজন্য ব্যক্তি সচেতনতার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা আমাদের আবাসভূমি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সব ধরনের রোগব্যাধি থেকে নিরাপদ রাখব, এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।