• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

বুকে ব্যথা মানেই হৃদরোগ নয়

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২০  

বুকে ব্যথা অনুভূত হলে অনেকেই হৃদরোগের ভয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। কিন্তু বুকে শুধু হৃৎপিণ্ডই নেই, এখানে রয়েছে ফুসফুস, শ্বাসনালি, খাদ্যনালি, পাঁজরের হাড়-মাংস ইত্যাদি। আর এসবের কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে। তাই বুকে ব্যথা হলেই তা হৃদ্রোগ বলে ধরে নেওয়া ঠিক নয়।

পাঁজরের হাড়ের সন্ধিস্থলে প্রদাহ, বুকের মাংসপেশির প্রদাহ, অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম বা ভারী কাজ, বুকে আঘাত, গলা থেকে পাকস্থলী পর্যন্ত খাদ্যনালির যেকোনো জায়গায় ক্ষত বা প্রদাহ, পাকস্থলীর প্রদাহ ও ক্ষত, অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ ইত্যাদি কারণে বুকে ব্যথা হতে পারে।

মানসিক সমস্যায় শতকরা ৪০ ভাগ ক্ষেত্রে একজন রোগী বুকে ব্যথার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। হিস্টিরিয়া নামে সমধিক পরিচিত এসব মানসিক রোগীর সাধারণ সমস্যাই হলো বুকে ব্যথা।

হৃদরোগের ব্যথা কিভাবে চিনবেন?

অনেক রোগীই হৃদরোগ হওয়ার কিছুদিন বা সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই সামান্য বুকে ব্যথা বা চাপ চাপ ভাব অনুভব করেন। পরিশ্রম বা হাঁটাচলা, এমনকি খাওয়ার সময়ও বুকে ব্যথা বা চাপ বাড়ে।

এ ব্যথা আবার বিশ্রাম নিলে কমে যায়। হঠাৎ বুকের মাঝে খুব বেশি ব্যথা অনুভূত হওয়া, বিশ্রাম নিলে ব্যথা না কমা, হঠাৎ কাশি বা তীব্রতর শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হওয়া ইত্যাদি হলো হৃদরোগের উপসর্গ।

বুকে ব্যথা হলেই আতঙ্কগ্রস্ত হওয়া উচিত নয়। তবে এ ধরনের সমস্যায় অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

হৃদরোগের কয়েকটি লক্ষণ আগেই জেনে রাখুন। এ লক্ষণগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন-

অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণ
বিনা কারণে ঘাম হওয়া মোটেই স্বাভাবিক বিষয় নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হৃদরোগের কারণে হঠাৎ করে ঘাম শুরু হতে পারে। বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ ঘেমে যাওয়া। হৃৎপিণ্ড অতিরিক্ত কাজ করা শুরু করলে ঘাম হতে পারে। এছাড়া ডায়াবেটিস মেলিটাস জটিলতায় যদি রক্তের শর্করার মাত্রা কমে যায় কিংবা থাইরয়েডের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে এ সমস্যা হতে পারে। এছাড়া রক্তচাপ হঠাৎ কমে গেলেও অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।

বদহজম ও বমি
অনেকেরই জানা নেই যে, হজমে গণ্ডগোলের কারণ হতে পারে হৃদরোগ। এছাড়া হঠাৎ করে বমি হওয়াও হৃদরোগের লক্ষণ হতে পারে। খাবারে গণ্ডগোলের কারণে বদহজম ও বমি হওয়া স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে যদি ফুড পয়জনিংয়ের কারণে বদহজম ও বমি না হয় তাহলে হৃদরোগের বিষয়টি অনুসন্ধান করতে হবে।

রুচি না হওয়া
খাবারে রুচি না হওয়া হৃদরোগের লক্ষণ হতে পারে। এর অবশ্য আরও বহু কারণ রয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হৃদরোগের কারণে খাবারের রুচি নষ্ট হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। এ লক্ষণ দেখা দিলে তাই হেলাফেলা করবেন না।

চোয়াল ব্যথা
হৃদরোগ হলে সাধারণত বুকে ব্যথা হয়ে থাকে। কিন্তু সবার ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে। চোয়লে যদি হঠাৎ ব্যথা শুরু হয় তাহলেও হৃদরোগের বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশিগুলো যদি পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পায় তাহলে অন্যান্য অঙ্গের পাশাপাশি চোয়ালেও ব্যথা হতে পারে।

হঠাৎ অজ্ঞান
হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পাওয়া হৃদরোগের লক্ষণ। হৃৎপিণ্ড যদি প্রয়োজনের তুলনায় জোরে কিংবা আস্তে চলতে থাকে তাহলে রক্তচাপেও পরিবর্তন হয়। এ অবস্থায় নানা প্রভাবের পাশাপাশি চেতনাও লোপ পেতে পারে। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে হৃদরোগের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।

ঘুমের সমস্যা
আপনার যদি হঠাৎ করে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয় কিংবা রাতে ঘুম না হয় তাহলে এর কারণ হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ কিংবা হৃদরোগ।