• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

ভারতের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯  

 

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে বিশেষ করে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের উদীয়মান শিল্পখাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় অনুষ্ঠিত দু’দিনব্যাপী ‘বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। বিশ্ব বাংলা সম্মেলন কেন্দ্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এ সম্মেলনের আয়োজন করে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী প্রধান অতিথি হিসেবে এর উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ, শিল্প, বাণিজ্য ও এমএসএমই বিষয়ক মন্ত্রী ড. অমিত মিত্রসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা বক্তব্য রাখেন।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ প্রায় নয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বর্তমানে ভারতের অনুকূলে রয়েছে। এজন্য বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পুনঃরপ্তানির মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে এনে বন্ধুপ্রতীম উভয় রাষ্ট্রই লাভবান হতে পারে।

শিল্পমন্ত্রী বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থসামাজিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে যেখানে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, তা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেড়ে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। দেশের তরুণ শিক্ষার্থীরা হাইটেক প্রযুক্তি ও সৃজনশীল উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। সফটওয়্যার শিল্পখাত থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ আটশ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। এ খাতে ২০২১ সাল নাগাদ পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সরকার কাজ করছে।

তিনি বলেন, ঐতিহাসিক, নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মেল-বন্ধনের ফলে ভারত ও বাংলাদেশের ক্রেতাগোষ্ঠীর চাহিদা প্রায় অভিন্ন। এজন্য বাংলাদেশ সবসময় দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। দু’দেশেরই বিশাল ভোক্তাগোষ্ঠী থাকায় শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যে পারস্পরিক লেন-দেন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত সমৃদ্ধি অর্জনে একে অপরকে সহায়তা করতে পারে। 

তিনি ভারতকে বাংলাদেশের অন্যতম কৌশলগত অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বাণিজ্য বৃদ্ধিতে দু’দেশের পণ্য ও শিল্পায়নে বৈচিত্র্য আনার পরামর্শ দেন। 

শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য। বাংলাদেশ সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে সরকার হাইটেক শিল্পের প্রসারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে বাংলাদেশ উদার শিল্প ও বিনিয়োগনীতি গ্রহণ করেছে। এ নীতির আলোকে বিদেশি উদ্যোক্তাদের প্রচুর আকর্ষণীয় প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। 

এসময় তিনি বাংলাদেশের জ্বালানি, খনিজ সম্পদ, আইসিটি, হেলথ কেয়ার, ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস, উচ্চশিক্ষা, অটোমোবাইলসহ উদীয়মান শিল্পখাতে ভারতীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

সম্মেলনে বিশ্বের ৩৬টি দেশ থেকে রাজনৈতিক নেতা, উচ্চ পর্যায়ের কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব, ঊর্ধ্বতন কূটনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শিল্প উদ্যোক্তা, প্রযুক্তিবিদসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। এছাড়া, বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটের আওতাভুক্ত দেশগুলো থেকে ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা সংগঠনের প্রতিনিধিরাও এতে যোগ দিয়েছেন।