• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

ভাসমান বাজারে চাহিদা বাড়ছে লেবু আর কলার

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০১৯  

 


বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের ভাসমান হাট-বাজারগুলো পেয়ারা, আমড়া ও বোম্বাই মরিচের জন্য বিখ্যাত। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভিন্ন ফসলের চাহিদা বাড়ায় বাজারগুলোতে সেগুলোর আমদানিও বেড়েছে। এর ফলে স্থানীয় চাষিরা পেয়ারা, আমড়ার পাশাপাশি লেবু, কলা, কচু, মিষ্টিকুমড়া, পেঁপেসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে ঝুঁকছেন।
আর আবাদের ভিন্নতার কারণে বর্ষার এ সময়টাতে ভাসমান হাট-বাজারগুলো পেয়ারার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের লেবু ও কলার দখলে রয়েছে।
স্থানীয় চাষিদের মতে, পিরোজপুর জেলার আটঘর-কুড়িয়ানা ও ঝালকাঠির ভিমরুলীর ভাসমান বাজার মূলত চাষিকেন্দ্রিক। এসব বাজারে সরাসরি চাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে আসেন, যেখান থেকে পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা তাদের পছন্দের পণ্য কেনেন। আর সেসব পণ্যই গোটা দেশে সড়ক ও নৌ-পথে বিপণন হয় ব্যবসায়ীদের হাত ধরে।

চাষিরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে পেয়ারা ও আমড়ার চাষির সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে বেড়েছে বোম্বাই মরিচ, লেবু, কচু, মিষ্টিকুমড়া, শসাসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ। বর্তমানে ভাসমান বাজারে পেয়ারার পাশাপাশি লেবু ও কলার আধিপত্য বিস্তার করছে। 
জানা গেছে, ঝালকাঠির বাউকাঠি, শতদশকাঠি, ভিমরুলী, গাভারামচন্দ্রপুর, কির্ত্তীপাশাসহ ২২টি গ্রাম এবং পিরোজপুরের আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়নজুড়ে পেয়ারার পাশাপাশি লেবু ও কলার আবাদ যেমন হয়েছে, তেমনি ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। প্রতিদিন এসব গ্রামের কৃষকরা গাছ থেকে লেবু ও কলা সংগ্রহ করে নৌকায় ভিমরুলী বাজারে আসেন এবং সপ্তাহে দুইদিন আটঘরের হাটে যান।  আর নৌকায় ভাসমান কিংবা খালের পাশের টোং ঘরে থাকা অপেক্ষমান পাইকাররা কৃষকদের কাছ থেকে ওইসব পণ্য কিনে রাখছেন।

 জানান, গত বছরের তুলনায় এবার ফলন কম হওয়ায় লেবুর দর কিছুটা ভালো পাচ্ছেন। গত বছর এক পোন (৮০টি) লেবুর দাম ছিল আকার ও জাতভেদে ৬০ থেকে দেড়শ’ টাকা। এবার তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ২শ’ টাকা দরে। আর আটঘর ও ভীমরুলির বাজারে পাওয়া লেবু বরিশাল, ঢাকাসহ দেশের বিভন্ন জেলায় যায়।  

লেবুচাষি সুভাষ জানান, এক বিঘা জমিতে কাঁদি করে লেবু চাষ করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। উৎপাদন ভালো হলে, আর বাজার ঠিক থাকলে ওই এক কাঁদি থেকে ২ লাখ টাকার ওপরে লেবু বিক্রি করা সম্ভব হয়।

অপরদিকে কলাচাষিরা জানান, এ অঞ্চলে বেশিরভাগ লোকই আমড়ার কাঁদির ফাঁকে ফাঁকে কলার গাছ লাগান। আবার অনেকে বসতবাড়ি ঘিরে কিংবা রাস্তার দুপাশ ধরে বিভিন্ন জাতের কলার গাছ লাগিয়ে যান। তবে এ অঞ্চলে আনাজি (সবজির জন্য) কলা, কাঁঠালি কলা ও সবরি কলার চাষ বেশি হয়। এবছর এসব কলা আকার ও জাতভেদে পোন (৮০ পিস) প্রতি দেড় থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় পাইকার মিলন বেপারি জানান, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আটঘর ও ভীমরুলি কেন্দ্রীক ভাসমান বাজারকে ঘিরে নৌ-পথের পাশাপাশি সড়ক পথের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। তাই দিনে দিনে পাইকারদের সংখ্যা বাড়ছে, স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের চাহিদা বাড়ছে। এতে দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। পেয়ারা বা আমড়া নয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন ফসলের চাহিদা বাড়ছে। যেমন এখন পেয়ারার পাশাপাশি লেবু, কলা ও পেঁপের চাহিদা রয়েছে।

তবে কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও সহজ শর্তে ঋণের সুফল পেলে এ অঞ্চলে আরো বেশি ও আধুনিক কৃষি ব্যবস্থায় ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।