• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

যুদ্ধবন্দিদের মুক্তির প্রশ্নে পাকিস্তানই অন্তরায়

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৬ মার্চ ২০২১  

যুদ্ধবন্দিদের মুক্তির ক্ষেত্রে পাকিস্তানই অন্তরায় সৃষ্টি করছে বলে মনে করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তিনি বলেন যে, ‘যুদ্ধবন্দিদের মুক্তিদানের প্রশ্ন আগে যেভাবে চিন্তা করা হয়েছিল,বিষয়টি তার চেয়ে অনেক বেশি জটিল এবং বিষয়টি সমাধানের পথে পাকিস্তান নিজেই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।’ ১৯৭৩ সালের ৬ মার্চ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তিদানের আবেদন ও পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের বিষয়ে ভারতের পক্ষে কথা বলার জন্য আগত চার জন ভারতীয় লেখকের কাছে তিনি একথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানে আটক বাঙালিরা যে অসীম দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে অতিবাহিত করছে, তাদেরকে নিয়ে বিশ্ব জনমত কিছুই বলছে না দেখে তিনি বিস্মিত। প্রধানমন্ত্রী লেখকদের বলেন,তারা যুদ্ধবন্দি প্রশ্নটাকে অতি সহজ দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করছে বলে মনে হয়।’

ইন্দিরা গান্ধী বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিয়ে আলাপ-আলোচনার পথে বাধা সৃষ্টি করে পাকিস্তান নিজেই এই সমস্যা সমাধানের পথ বন্ধ করছে।’ তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, ‘এ ব্যাপারে ভারতের একা আর কিছুই করার নেই।’

 দৈনিক বাংলা, ৭ মার্চ ১৯৭৩

বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত তহবিলে শ্রমিকদের অনুদান

শ্রমিকরা বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত তহবিলে  এক লাখ ৩০ হাজার ৬শ’ টাকার চেক প্রদান করেছেন। ৫ মার্চ বিকালে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্ত ১১৮টি ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তারা তাদের একদিনের বেতনের  চেক বঙ্গবন্ধুর  ব্যক্তিগত তহবিলে প্রদান করেন। শ্রমিক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন তেজগাঁও আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি শেখ ফজলুল হক মনি।

এ সময় বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার টাকার কোনও প্রয়োজন নেই। আপনাদের কল্যাণের জন্য কোনও কাজেই আমি টাকাটা লাগাবো।’

সহযোগিতা চাইলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার

স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি ইদ্রিস শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান।  তিনি এদিন রাতে প্রদত্ত বেতার ও টেলিভিশন ভাষণে এই আহ্বান জানান। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, সারা বিশ্বের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের নির্বাচনে নিবদ্ধ।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই মর্মে আশ্বাস প্রদান করেন যে, নির্বাচন এবং সারা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নির্বাচনি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভোটগ্রহণ পর্বের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কার্যক্রম শেষ হতে যাচ্ছে। সেটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা অবগত আছেন যে, ৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন দাখিলের পর থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্বের কাজ শুরু হয়, ৬ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন বাছাই ও এর পরপরই মনোনয়ন প্রত্যাহার শেষ করে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা দেওয়া হয়।’

 বাংলাদেশ অবজারভার, ৭ মার্চ ১৯৭৩

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘জাতীয় সংসদে ২৮৮টি আসনের সদস্য নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আপনারা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেছেন নির্বাচন কার্যক্রম শেষ।’

তিনি বলেন,‘নির্বাচনের  পূর্বের কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে এক উল্লেখযোগ্য জনশক্তি নিয়োগ করতে হয়। নির্বাচনি এলাকাগুলোতে নির্বাচন পরিচালনার জন্য মহকুমা অফিসার, অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার পর্যায়ে ৭৭ জন অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারদের সাহায্যে থানা পর্যায়ে ৫/৬ জন করে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও  বলেন, ‘স্বাধীনতা প্রাপ্তির এক বছরের মধ্যেই দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পবিত্র ও গুরু দায়িত্ব আমার ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। স্বাধীনতা-উত্তরকালে অনেক প্রতিকূল অবস্থার ভেতর দিয়ে অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। এই কার্যক্রমের পেছনে দেশবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠা রয়েছে। মনে রাখবেন, এই নির্বাচনের দিকে সারা পৃথিবীর দৃষ্টি আছে। আমি বিশ্বাস করি,আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে জাতিকে বিশ্বের সামনে মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করবো। আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানের মুহূর্তে এই সংকল্প করি যে, আমরা সকলে নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবো’