• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

যে কারণে ভারতের দুই কোম্পানির রেনিটিডিন নিষিদ্ধ

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ রেনিটিডিনের কাঁচামালে ক্যানসারের জন্য দায়ী উপাদান এন-নাইট্রোসোডিমেথলোমিন (এনডিএমএ) উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। তবে কী পরিমাণে পাওয়া গেছে এবং মানবদেহের জন্য তা কতটা ক্ষতিকর, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি সংস্থাটি। তবে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে ওষুধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে)। ভারতের সারাকা ল্যাবরেটরিজ থেকে রেনিটিডিনের কাঁচামাল সংগ্রহ করতো প্রতিষ্ঠানটি। সারাকার মানসনদ ইউরোপের ওষুধমান-সংক্রান্ত মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় আরেক কোম্পানি ডক্টর রেড্ডি’স ল্যাবরেটরিজ নিজেরাই রেনিটিডিন উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কেবল ভারতীয় এই দুই কোম্পানির রেনিটিডিনের কাঁচামাল আমদানি নিষিদ্ধ করা হলো।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর এবং ওষুধ শিল্প সমিতিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ’র প্রতিবেদনে রেনিটিডিনে এনডিএমএ পাওয়ার কথা জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। তবে কী পরিমাণে পাওয়া গেছে এবং তা মানবদেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, রেনিটিডিনের মধ্যে এনডিএমএ আসার উৎস খুঁজছে তারা।
তবে এফডিএ এ-ও বলেছে, এই মুহূর্তে তারা কাউকে ওষুধটি সেবনে নিষেধ করছে না। তবে কেউ যদি নিজের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক মনে করে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অন্য ওষুধ নেবেন। এছাড়া রেনিটিডিনের কারণে কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার হলে তা গ্রাহকসহ স্বাস্থ্যসেবা বিশেজ্ঞদের কাছ থেকে অনলাইনে এ বিষয়ে তথ্য পাওয়ার আশা করেছে এফডিএ।
এফডিএ’র প্রতিবেদনটি গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হয়। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জিএসকে বিশ্বের সব দেশের বাজার থেকে রেনিটিডিন ওষুধ প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেয়। সেই সঙ্গে এর বিপণন ও উৎপাদন বন্ধ রাখার কথাও জানায় তারা। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর স্ট্রাইড ফার্মা সায়েন্স লিমিটেড যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে তাদের রেনিটিডিন গ্রুপের ওষুধ বাজার থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এরই মধ্যে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে রেনিটিডিন উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ডক্টর রেড্ডি ফার্মাসিউটিক্যালস।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর বলছে, ওষুধ শিল্প সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে ভারতীয় দুই কোম্পানি ডক্টর রেড্ডি’স ল্যাবরেটরিজ ও মেসার্স সারাকা ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের রেনিটিডিন হাইড্রোক্লোরাইড কাঁচামাল আমদানিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জিএসকে বাজার থেকে রেনিটিডিন সরিয়ে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে। তারা সারাকা থেকে কাঁচামাল নিতো। আর রেড্ডি নিজেরাই উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। তাই আমরা এই দুই কোম্পানির কাঁচামাল আমদানি এবং তা ব্যবহার করে উৎপাদনে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি।’ তবে ভারতের অন্য কোম্পানি ও চীন থেকে ওষুধ ও কাঁচামাল আনা যাবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহসচিব এস এম শফিউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ৫০টিরও বেশি কোম্পানি ভারতের সারাকা ল্যাবরেটরিজ থেকে রেনিটিডিন আমদানি করতো। তবে যে মাত্রাতিরিক্তের কথা বলা হচ্ছে সেটা কিন্তু পানি, বাতাস, গাছে, ফলে সবকিছুতেই রয়েছে। এটা এমন কোনও ক্ষতিকারক নয় যে সেটা খেলে মানুষ মারা যাবে।’
এফডিএ এখনও রেনিটিডিন বাতিল করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় দুই কোম্পানি এবং ব্রিটিশ কোম্পানি জিএসকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাদের প্রোডাক্ট তুলে নিয়েছে প্যানাল্টির ভয়ে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও রেগুলেটরি, অথরিটি এই ওষুধ খাওয়া যাবে না বলে মত দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘রবিবারের সভায় আমরা বলেছি, কোনও পরীক্ষা ছাড়া আমরা মতামত দিতে পারি না। ওষুধ শিল্প সমিতি নিজেদের মতো করে পরীক্ষা করবে। বড় কোম্পানিগুলো সিঙ্গাপুরে এর স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আনবে। পরে এর ফলাফল নিয়েও ঔষধ প্রশাসনের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ তবে এফডিএ যদি এটা তুলে নেয় তাহলে দেশেও তা একেবারে বাতিল করে দেওয়া হবে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালে রেনিটিডিন আবিষ্কার করে জিএসকে। ১৯৮১ সালে প্রথম বাজারে ছাড়ে ওষুধটি। জিএসকে বাংলাদেশেও এই ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন করেছে। বাংলাদেশি ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো, স্কয়ার, একমি, এসেন্সিয়াল ড্রাগসসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি বিভিন্ন নামে এই গ্রুপের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন করে। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রায় ৫ শতাংশ রোগী এই গ্রুপের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খান।