• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

রমজানে ওজন যেভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২১  

রমজানে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে অনেকেই ইফতারের পর অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন। যা আপনার ওজন বাড়িয়ে দেয়ার জন্য দায়ী।

আবার অনেকেই মনে করেন রোজার মাসে সারা দিন না খেয়ে থাকার কারণে ওজন কমে যায়। কিন্তু ধারণাটি ভুল। রমজান মাসে অনেকের জন্য একই ডায়েট প্ল্যান মেনে চলা কঠিন হয়ে পড়ে। রোজা রাখার পর ইফতারের সময় সামনে বিভিন্ন খাবার দেখলে তখন আর নির্দিষ্ট ডায়েট প্ল্যানের কথা মনে থাকেনা। তাই সবকিছু ভেবেই আপনাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে রমজানে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার একটি সহায়ক ডায়েট প্ল্যান।

চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কীভেবে রমজানে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে-    

ইফতারে যা খাবেন

>> খালি পেটে তেলে ভাজা খাবার খেলে এর ফল ভয়াবহ হতে পারে। তাই ইফতারে সবার আগে এক গ্লাস পানি পান করবেন তারপর অন্য কিছু খাবেন।

>> ইফতারে এদেশে পেঁয়াজু ও বেগুনী থাকবেই। ১টি পেঁয়াজু আর একটি বেগুনী, একটি বেগুনী আর একটি কাবাব এভাবেও মিলিয়ে খেতে পারেন। খেয়াল রাখবেন যেন এ ধরনের খাবার ২টির বেশি খাওয়া না হয়। কারণ প্রতিটি পেঁয়াজু, বেগুনী বা অন্য যেকোনো তেলে ভাজা খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ ৫০ থেকে ৭০ এর মত হতে পারে। একটি টিকিয়া কাবাবে ক্যালরি হলো ৮০ আর চপে ৮৫। যদি সিঙ্গারা খান তাহলে অবশ্যই একটি খাবেন কারণ তাতে ১৪০ ক্যালরি থাকে যা ২টি রুটির সমান। আর সিঙ্গারা খেলে পেঁয়াজু/ বেগুনী/ কাবাব খাবেননা।

>> এক বাটি ভরে হালিম না খেয়ে আধা বাটি হালিম খান। হালিমে বিভিন্ন রকমের ডাল আর মাংস মেশানো থাকে তাই এতে প্রচুর ক্যালরি থাকে। দোকানের হালিম না খেয়ে বাসায় তৈরি করুন।

>> যদি হালিম না খান তাহলে এক বাটি ছোলা মুড়ি খান। কিন্তু যদি আধা বাটি হালিম খান তাহলে আধা বাটি ছোলা মুড়ি খান। কারণ এক কাপ মুড়িতে ৭০ ক্যালরি। আপনি যদি একই সঙ্গে হালিম আর এক বাটি ছোলা মুড়ি খান তাহলে সেটাতে অনেক ক্যালরি হবে।

>> অতিরিক্ত চিনি দিয়ে শরবত না তৈরি করে ডাবের পানি পান করুন। ৩ বা ৪ দিন পর পর চিনি মেশানো লেবুর শরবত বা অন্য কোনো ফলের শরবত খেতে পারেন। তবে বাইরে থেকে রঙ মেশানো শরবত এনে খাবেন না।

>> ১ টুকরো শশা খেতে পারেন।

>> একটি আপেল/ একটি ছোট কলা/ ৩ বা ৪ টি লিচু (প্রায় ৪০ ক্যালরি) খেতে পারেন।  

রাতে যা খাবেন

>> একটি রুটি/ আধা কাপ ভাত/ অর্ধেক পরোটা (যেকোনো একটি খাবেন)।

>> ২ টুকরো মাছ অথবা মাংস। ২টি মাছ আর ২টি মাংসের টুকরো এক সঙ্গে খাওয়া যাবেনা।

>> যেকোনো শাক।

>> ২ বা ৩ চা চামচ টক দই।

সেহরিতে যা খাবেন

অনেকেই সেহরিতে কিছু খান না। কেউবা এক বা দুই কাপ চা খান। কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই খারাপ। আপনি সেহরিতে কম খাবেন কিন্তু নিয়ম মেনে খাবেন। যেমন –

>> আধা কাপ ভাত অথবা একটি রুটি।

>> ১ টুকরো মুরগির মাংস।

>> সবজি ১ কাপ।

>> টক দই ১ কাপ। যারা টক দই খেতে পারেন না তারা ১ কাপ সর ছাড়া দুধ খেতে পারেন।

নজর রাখুন কিছু বিষয়ে

>> যদি পিজ্জা খেতে চান তাহলে এক স্লাইসের বেশি খাবেননা। এক স্লাইসে প্রায় ৩০০ ক্যালরি থাকে।

>> বিভিন্ন দোকানে ফ্রাই করা মুরগির প্রতিটি টুকরোতে প্রায় ২০০ ক্যালরি থাকে। তাই বুঝে শুনে খাবেন।

>> একটি ছোট প্যাকেটের ফ্রেঞ্চ ফ্রাইতে ২৭০ ক্যালরির মতো থাকে।

>> ঝাল খাবার খাবেন না।

>> প্রচুর পানি পান করবেন ইফতারের পর থেকে।

>> মেয়নিজ বেশি না খেয়ে মার্জারিন খেতে পারেন।

>> গ্রিন টি পান করলে ভালো, নাহলে দুধ চিনি ছাড়া চা পান করুন।

>> ইফতারের পর অন্তত ২০ থেকে ২৫ মিনিট হাঁটুন।

>> সেহরিতে খাওয়া শেষ করে ১৫ মিনিট হাঁটুন।

>> সেহরিতে সময় নিয়ে উঠুন যেন শেষ মুহূর্তে তাড়াতাড়ি খেতে গিয়ে বেশি খেয়ে না ফেলেন।

>> যাদের ওজন বেশি তারা বাসার বাইরে খেলে এমন ভাবে খাবেন যেন আপনার ক্যালরি গ্রহণ ১৪০০ এর মধ্যে থাকে।