• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

রূপপুর প্রকল্পের যন্ত্রপাতি রাশিয়া থেকে নির্ধারিত সময়ে আসবে

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২০  

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য যন্ত্রপাতি নির্মাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি তদারকি করতে রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান মস্কোর বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করেছেন।

রাশিয়ার কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব যন্ত্রপাতি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশে পাঠানো হবে। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) রাশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান গত ২৮ জুলাই মস্কোর পিজেএসসি জিও পোডোলস্ক এবং ২৯ জুলাই জেএসসি রাসু দুটি কারখানা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।

পিজেএসসি জিও পোডোলস্ক কারখানা পরিদর্শনের শুরুতে রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আনাতোলি এম স্মিরভ নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এই প্রকল্পটির কাজ আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে যথাসময়ে সম্পন্ন করার ওপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। সভা শেষে কারখানাটির বিভিন্ন বিভাগে রূপপুর প্রকল্পের জন্য নির্মাণাধীন যন্ত্রাংশ পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূত ।

জিও পোডোলস্ক কারখানায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে। কারখানাটি থেকে ইতোমধ্যে প্রথম ইউনিটের ময়েশ্চার সেপারেটর রিহিটারের চারটি সেট, হাই প্রেশার হিটারের চারটি সেট এবং প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের বাবলার ট্যাঙ্ক রূপপুর প্রকল্প এলাকায় সরবরাহ করা হয়েছে। কারখানাটিতে এখন দ্বিতীয় ইউনিটের ময়েশ্চার সেপারেটর রিহিটার, হাই প্রেশার হিটার এবং ইমার্জেন্সি কোর কুলিং সিস্টেম হাইড্রো-একুমুলেটর নির্মাণের কাজ চলছে। যন্ত্রপাতিগুলোর নির্মাণ কাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের আগেই সম্পন্ন এবং প্রকল্প এলাকায় সরবরাহ করা হবে বলে কারখানাটির পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।

এখানে উল্লেখ্য একটি সেপারেটর এবং দুইটি রিহিটার নিয়ে ময়েশ্চার সেপারেটর রিহিটারের একটি সেট গঠিত। বাষ্পকে শুষ্ক করা এবং গতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য পুনরায় উত্তপ্ত করার কাজে এটি ব্যবহৃত হয়।

জিও পোডোলস্ক কারখানাটি শতাধিক বছর ধরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেল ও গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এবং পারমাণবিক শক্তি চালিত জাহাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ তৈরি করছে। এটি রোসাটম এর কারিগরি বিভাগ অ্যাটম-এনার্গোম্যাশ এর অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান।

জেএসসি রাসু কারখানা পরিদর্শনের শুরুতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আন্দ্রেই বুতকোর সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। করোনা মহামারির মধ্যেও বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল রাখা হয়েছিল বলে কারখানাটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে অবহিত করে। বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সফলভাবে সম্পাদনের প্রত্যাশায় দেশের সকল স্তরের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ আছে বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।  
এ সময় কামরুল আহসান রাশিয়ার বিভিন্ন কারখানায় যন্ত্রপাতি উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং প্রকল্প এলাকায় নির্মাণ কাজের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

জেএসসি রাসু কারখানায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এর আপার-লেভেল কন্ট্রোল সিস্টেমের বিভিন্ন অংশের একত্রীকরণ এবং পরীক্ষার কাজ চলছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এর সকল কাজ সম্পন্ন হবে এবং কারিগরি মূল্যায়ন শেষে যন্ত্রপাতিসমূহ বাংলাদেশে পাঠানো হবে।

পরিদর্শনকালে কারখানা দুটির মহাপরিচালক এবং প্রকল্পের জেনারেল কন্ট্রাক্টর জেএসসি অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের প্রতিনিধি রূপপুর প্রকল্পের সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং অগ্রগতি তদারকির জন্য রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানকে ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান এ সময় বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি স্বপ্নের প্রকল্প ছিল যা তার সুযোগ্যকন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ৩০টি দেশের এক বিশেষ সম্মানজনক তালিকায় স্থান করে নেবে।