• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাড়ে তিন হাজার জঙ্গি: ডয়েচে ভেলে

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

 


বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় সাড়ে তিন হাজার এআরএসএ জঙ্গি আশ্রয় নিয়ে আছে। গোপনে তারা ক্যাম্পের ভিতরে গুম, খুন, ধর্ষণ, মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে চলেছে। মঙ্গলবার জার্মানভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের একটি প্রতিবেদনে উদ্বেগজনক এ তথ্য উঠে এসেছে।

এআরএসএ গ্রুপের একজন সদস্যের বরাত দিয়ে ডয়েচে ভেলে জানায়, বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে এ মূহুর্তে অন্তত সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা জঙ্গি অবস্থান করছে। তাদের মধ্যে অনেকে সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মায়ানমারে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই জঙ্গি সদস্য আরও বলেন, ‘আমাদের কেউ সহায়তা দিচ্ছে না। যদি আমরা অস্ত্র-সহায়তা পেতাম, তাহলে সেখানে (মায়ানমারে) গিয়ে যুদ্ধ করতে পারতাম।’

এদিকে এআরএসএ এর অন্তত ৩০টি গ্রুপ ক্যাম্পগুলোতে সক্রিয় আছে বলে জানা গেছে। ক্যাম্পের মধ্যে তারা অন্যান্য রোহিঙ্গাকে নিজেদের দলে ভেড়ানোর জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। নিজেদের দল ভারিই শুধু নয়, বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও তারা গোপনে ক্যাম্পগুলোতে চালিয়ে যাচ্ছে। ধর্ষণ, হত্যা, গুম, মাদক পাচার এগুলো সেখানকার প্রায় নিয়মিত ঘটনা। তাদের ভয়ে সাধারণ রোহিঙ্গারাও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

ক্যাম্পগুলোতে প্রকাশ্যে তাদের নাম নেওয়ার ব্যাপারেও আছে নিষেধাজ্ঞা। কাউকে সন্দেহ হলেই তাকে হয় গুম করে ফেলা হচ্ছে, নয় খুন। পরিত্রাণ পান না তার পরিবারের কোনো নারী বা শিশুও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোহিঙ্গা নারী ডয়েচে ভেলেকে জানান, গত মাসেই এক সন্ধ্যায় হারাকাহ আল-ইয়াকিন গ্রুপের কয়েকজন সদস্য তার স্বামীকে হত্যা করেছে। তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কেউ তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এই হারাকাহ আল-ইয়াকিনই ২০১৬ সালে তাদের নাম পরিবর্তন করে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (এআরএসএ) নাম ধারণ করে। সংগঠনের সদস্যরা সৌদি আরব ও পাকিস্তানের ইসলামিস্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে পৃষ্ঠপোষকতা পায় বলে জানান স্বামীহারা ওই নারী।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল কালাম আবদুল মোমেনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি দেশে কোনো রোহিঙ্গা জঙ্গি নেই বলে দাবি করেন। আবদুল মোমেন বলেন, ‘দেশে কোনো রোহিঙ্গা জঙ্গি নেই। যদি কাউকে পাওয়া যায়, তবে তাকে গ্রেফতার করে মায়ানমারে ফেলে দিয়ে আসা হবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে এআরএসএ বাহিনী মিয়ানমারে ৩০টি সেনা ক্যাম্পে একযোগে হামলা চালালে ১২ জন সেনা মারা যায়। এরপরই মায়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশের সীমান্তে ঠেলে দেয়। ১০ দিনের মধ্যে প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিক এদেশে কক্সবাজার, উখিয়ায় এসে আশ্রয় নেয়। তাদের বদৌলতে বাংলাদেশ বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে পরিণত হয়েছে। নিজেদের মধ্যেই কেবল নয়, তারা প্রায়ই ছোট-খাটো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন বাংলাদেশী নাগরিকদের সঙ্গেও।