• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরো বাড়ছে

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২০  

করোনাভাইরাস মহামারি বিস্তার রোধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অক্টোবর মাসের সিংহভাগ সময় পার হয়ে গেলেও নভেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কোনো ইতিবাচক নির্দেশনা নেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি’র। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ‌্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি আরো বাড়ানো হবে। বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের অনলাইন, টেলিভিশিন, রেডিও পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম আল হোসেন বলেছেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। তাই ছুটি আরও বাড়াতে হবে। আগামী ২৯ অক্টোবর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। পরিস্থিতি উন্নতি হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যদি নভেম্বরে স্কুল খোলা না যায় তাহলে প্রধানমন্ত্রী যেটি বলেছেন, আমাদের অটো পাস ছাড়া উপায় নেই।’

এর আগে সিনিয়র সচিব জানিয়েছিলেন, করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা সিঙ্গেল ডিজিটে এলে খোলা যেতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মৃত্যুর হার ডাবল ডিজিটে রয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়তে পারে। তবে ছুটি কতদিন বাড়বে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত এ বিষয়ে জানানো হবে।

অন্যদিকে আগামী ১ নভেম্বর থেকে ৩৯ দিনের জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ-পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিল জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা অ্যাকাডেমি (ন্যাপ)। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী নভেম্বরেও সম্ভবত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না। আর সে কারণেই নভেম্বর থেকে পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে না। নভেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৫ দিন আগেই প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নিতে হতো। সে হিসেবে গত ১৫ অক্টোবর এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়ার কথা। কিন্তু কোনও ধরনের নির্দেশনা নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।

আগামী ১ নভেম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর টার্গেটে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা অ্যাকাডেমির (ন্যাপ) তৈরি করা ৩৯ দিনের সংক্ষিপ্ত পাঠ-পরিকল্পনায় দেখা গেছে, বিদ্যালয় খোলা সম্ভব হলে ১ নভেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৯ দিন চলবে পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বরের শেষ দিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে প্রস্তুতি লাগবে ১৫ দিন। কিন্তু সেই সময় খোলা গেলেও শুধু পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রমও বাস্তবায়ন করা যাবে না। ফলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব মূল্যায়নে অটোপাস দিতে হবে।

সংক্ষিপ্ত এই পাঠ-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা না গেলে শ্রেণি মূল্যায়নেরও সুযোগ থাকবে না বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন। ফলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অটো পাস দিতে হবে। একইসঙ্গে অন্যান্য শ্রেণিতেও দেওয়া হবে অটো প্রমোশন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জেএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে বার্ষিক পরীক্ষাও।

গত বুধবার মাধ্যমিকের বার্ষিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করা যায়, এমন সিলেবাস প্রণয়ন করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আগামী নভেম্বরে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের পাঠদান শুরু হবে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ক্লাস শেষ করা হবে। সেটের ভিত্তিতে মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ করে দেওয়া হবে। জানুয়ারিতে নতুন ক্লাসে ভর্তি হতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থীর যদি বিশেষ দুর্বলতা থাকে, সেটি পরবর্তী ক্লাসে বিশেষ বিবেচনায় রাখা হবে। তার দুর্বলতা কাটাতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবেন শিক্ষকরা। সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।