• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

শিল্প খাতে সুদ ৯ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনতে বিশেষ কমিটি

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯  

শিল্প খাতে সুদ ৯ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনতে বিশেষ কমিটি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।এমন সুপারিশ করে ঋণের সুদ হার কমানো সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। বুধবার প্রতিবেদনটি গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত বিশেষ কমিটি। এছাড়া সরকারী আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারী ব্যাংকে রাখার বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি বাস্তবায়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে কমিটির প্রতিবেদনে। এদিকে আমানতের সুদ হার নির্ধারণ করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, সুদের হার ৯ শতাংশের মধ্যে বা সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকবার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এছাড়া বর্তমান ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ৯ বার নির্দেশনা দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানদের ডেকে এ বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। সুদের হার কমানোর শর্তে ব্যাংকগুলোকে ৫ ধরনের বিশেষ ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কিন্তু এসব সুবিধা নিয়েও তারা সুদ হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামাননি। এই অবস্থায় সম্প্রতি ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে ‘নয়-ছয়’ সুদ হার বাতিল করে নির্দিষ্ট খাতের ঋণে সর্বোচ্চ (সীমা) ৯ শতাংশ সুদহার বেঁধে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেন, জানুয়ারি থেকে সিঙ্গেল ডিজিট কার্যকর হবে। কীভাবে কার্যকর হবে তা নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করার ঘোষণা তিনি। অর্থমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামানকে প্রধান করে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিলো গত মঙ্গলবার। কিন্তু প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত হওয়ার পরও ভাষাগত কিছু পরিবর্তন এনে তা বুধবার জমা দেয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত বিশেষ কমিটির অধিকাংশ সদস্যই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মত দেন। তারা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সিঙ্গেল ডিজিট চাপিয়ে দিলে ব্যাংকগুলো তা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। কারণ স্বল্প সুদে আমানত পাওয়া না গেলে তা স্বল্পসুদে বিতরণ করা সম্ভব নয়। কয়েকটি খাতের ঋণে সিঙ্গেল ডিজিট বেঁধে দিলে ব্যাংক সেই খাতে ঋণ দিতে অনীহা প্রকাশ করবে। তখন শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) প্রেসিডেন্ট ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, স্বল্পসুদে আমানত পাওয়া গেলে ঋণের সুদ কমে যাবে। কমিটি আলোচনার মাধ্যমে চেষ্টা করেছে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য। সুদহার কমানোর পূর্বশর্ত হিসেবে ফের কিছু দাবি-দাওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিরা। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃহৎ শিল্প খাতের ঋণের সুদহার ৭ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। দু-একটি উপখাতে ঋণের সুদহার ১৬ শতাংশ পর্যন্ত আছে। অন্যদিকে, এসএমই খাতের ঋণের সুদহার অনেক বেশি। ব্যাংক ভেদে এসএমই খাতের ঋণের সুদহার ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত। বৃহৎ শিল্প খাতে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার বাস্তবায়ন করা অপেক্ষাকৃত সহজ। তাইতো সে পথেই হাঁটতে চায় কমিটি।