• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

শুভেচ্ছা নিয়ে রাশিয়ার পথে বঙ্গবন্ধু

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

 

বন্ধু রাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো আর দেশ পুনর্নির্মাণে সহযোগিতার পথ তৈরি করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোভিয়েত ইউনিয়নে সফরে যান। ১৯৭২ সালের এইদিনে (২৯ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু চার দিনের সফরে সোভিয়েত ইউনিয়নের উদ্দেশে যাত্রা করেন। রাশিয়ার জনগণ বঙ্গবন্ধুকে অভিবাদন জানাতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল। তারা আগ্রহ ভরে বঙ্গবন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিল বলেও সেই সময়ের সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়। এছাড়া, এদিনের পত্রিকায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের বাংলাদেশ সফর ও সেই সময়ে ঢাকায় তার অবস্থানের বিষয়েও খবর প্রকাশিত হয়। পাঠ্যপুস্তক নিয়েও জরুরি সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হয়।
বঙ্গবন্ধু রাশিয়া গেলেন
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মস্কো যাত্রা করেন এই দিনে। তিনি গভীর রাতে সেখানে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিশেষ বিমানটি তাকে নিয়ে রাত সোয়া আটটার দিকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে মস্কোর পথে যাত্রা করে। বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অনেক লোক সন্ধ্যার পর থেকে বিমানবন্দরের প্রবেশ পথে অপেক্ষা করতে থাকে। বিমানে উঠে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা, বাংলাদেশ-সোভিয়েত মৈত্রী জিন্দাবাদ’ শ্লোগান দেন।
 প্রত্যুত্তরে অপেক্ষামান জনতা মুহুর্মুহু ধ্বনি দিতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর পরনে কালো রঙের স্যুট ছিল। বিমানবন্দরে অপেক্ষমান নেতারা ও বিদেশি কূটনীতিক প্রতিনিধিদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেওয়ার পর অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের দিকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি কথা বলবো।’ এরপর তিনি বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও জনগণের জন্য বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের শুভেচ্ছা নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সমর্থন ও সাহায্য দানের জন্য আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের সরকার ও জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ।’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর বড় ছেলে শেখ কামাল, পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামসহ আরও অনেকে ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র রাসেল পিতাকে বিদায় জানানোর জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনা দিতে প্রস্তুত রাশিয়া
সোভিয়েত জনগণ বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা অভিবাদন জানানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল। এতদিন তারা তাঁর আগমনের এই দিনটির অপেক্ষায় ছিল বলে দৈনিক বাংলার খবরে প্রকাশ করা হয়। গত কয়েকমাস ধরে সোভিয়েত জনগণ নয়া প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ উদ্ভবের বিভিন্ন ঘটনাবলী লক্ষ্য করে আসছিল আগ্রহের সঙ্গে। সোভিয়েত সংবাদপত্রগুলোতেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমনের নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারের প্রাথমিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন এবং পররাষ্ট্রনীতির ওপর ব্যাপক খবরাখবর প্রকাশিত হয়। বঙ্গবন্ধুর সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর উভয় দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক ঘটনা।
 নজরুল যে বাড়িতে থাকবেন
কবি কাজী নজরুল ইসলামের আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সময় ঢাকায় তার থাকার জন্য একটি বাড়ি ঠিক করা হয়েছে। সেটির বিষয়ে সংবাদপত্রে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশিত হয়। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার দুই নম্বর রোডে অবস্থিত একটি দোতলা বাড়ি, এর মেরামত করা হচ্ছে যথাযথভাবে। বাড়িটির সামনে উন্মুক্ত স্থানটি একটি বাগানে রূপান্তরিত করা হবে। কবির দুই ছেলে কাজী সব্যসাচী এবং কাজী অনিরুদ্ধ ও মিসেস অনিরুদ্ধ ভবনটি পরিদর্শন করেছেন এবং স্থান নির্বাচনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পাঠ্যপুস্তক আমদানির সিদ্ধান্ত
ফেব্রুয়ারির এক তারিখে বাংলাদেশ সরকার পুস্তক আমদানিকারক লাইসেন্স হোল্ডারদের কোটা অনুসারে আমদানির জন্য দরখাস্ত করতে বলেন। আগের মতো এবারও শতকরা ১০ ভাগ ফিকশন, ২৫ ভাগ রেফারেন্স এবং বাকি ৬৫ ভাগ পাঠ্যবইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এবছর পুস্তক আমদানির ব্যাপারে সরকার কিছুটা উদার নীতি গ্রহণ করতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছিল। ছাত্রদের অমূল্য সময়ের দিকে দৃষ্টি রেখে সরকার দ্রুত আমদানির যে ব্যবস্থা করেন, তার বরাদ্দ টাকা থেকে আজেবাজে অর্থ অপচয় যাতে না হয়, সেজন্য আমদানিকারকদেরও সতর্ক হতে বলা হয়।
৩ মার্চ বিপ্লব দিবস
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ১৯৭২ সালের ৩ মার্চকে বিপ্লব দিবস হিসেবে পালনের জন্য ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানায় বলে খবরে প্রকাশ করা হয়। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে ঐতিহাসিক জনসভায় বঙ্গবন্ধুকে সামনে রেখে স্বাধীনতার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। স্বাধীন বাংলার পতাকা শোভিত ওই জনসভা থেকেই মূলত স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু হয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীসহ ছাত্রনেতারা এই দিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সভা অনুষ্ঠানের জন্য সংগঠনের সব শাখার প্রতি আহ্বান জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় একটি ছাত্র সভার আয়োজন করা হয়।