• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

সরকার জনগণকে সম্পৃক্ত করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০২১  

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে শব্দ সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) পরিবেশ অধিদফতরে আয়োজিত শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প বিষয়ে আয়োজিত কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করা হবে। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় শব্দদূষণ সহনীয় পর্যায় নেমে আসবে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর বিআরটিএ তিন থেকে চার লক্ষ নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন প্রদান করছে। ক্রমবর্ধমান যানবাহনে অহেতুক হর্ন, যত্রতত্র সাউন্ড বক্স, মাইকের মাধ্যমে উচ্চশব্দ সৃষ্টি করে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করা হচ্ছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে অন্যান্য দূষণের পাশাপাশি শব্দদূষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার এখনই সময়। ক্ষতিকর দিকগুলি বিবেচনা করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন/বিধি বাস্তবায়ন ও অতিরিক্ত শব্দ করা থেকে বিরত থাকার সংস্কৃতি সৃষ্টির জন্য পরিবেশমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ আবাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘শব্দদূষণমুক্ত পরিবেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’গড়ে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মাহমুদ হাসান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত।

সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে শব্দদূষণের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। তিনি এসময় সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ম মেনে প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশনা প্রদান করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, জনগণকে ব্যাপকভাবে বধির হওয়া থেকে রক্ষা করতে শব্দদূষণ বন্ধ করতেই হবে। এ লক্ষ্যে পঞ্চম, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমে শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।

প্রকল্পের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির জানান, পরিবেশ অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় পরিবহন শ্রমিক/চালক, শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মচারী, কারখানার নির্মাণশ্রমিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, ইমাম, পেশাজীবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মোট ৯৫ হাজার ২০০ জনকে শব্দ সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এছাড়াও টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতারে ধারাবাহিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া, মোবাইল ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টিভিসি, ক্ষুদে বার্তা ও বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হবে। সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১২৮টি বিলবোর্ড ও ৬০টি সাইনবোর্ড স্থাপন, সাত লক্ষ লিফলেট, সাত লক্ষ স্টিকার, এক হাজার ফোল্ডার এবং এক হাজার প্রশিক্ষণ ম্যানূয়াল মূদ্রণ ও বিতরণ করা হবে। সারাদেশে দুই হাজার ভ্রাম্যমাণ আদালত/যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ সংশোধনক্রমে সময়োপযোগী বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, ৬৪টি জেলায় শব্দের মাত্রা পরিমাপবিষয়ক জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা এবং তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে শব্দদূষণের স্বাস্থ্যঝুঁকির ওপর সমীক্ষা এবং বিধিমালা সংক্রান্ত ও দিবসভিত্তিক নয়টি সভার আয়োজন করা হবে। একটি এলাকায় পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের আওতায় শব্দমাত্রার সার্বক্ষণিক অনলাইন পরিবীক্ষণ এবং রোড সাইড ডিসপ্লে স্থাপন করা হবে। কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের জন্য নির্ধারিত এলাকায় ক্যাম্পেইন আয়োজন, ৫১২টি এয়ারমাফ, ৪ হাজার এয়ারপ্লাগ সংগ্রহ ও বিতরণ এবং তিন বছর আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস উদযাপন করা হবে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহাম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন পরিবেশ অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও প্রকল্পের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির।