• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ৫০ হাজার ৭৩০টি ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প স্থাপিত

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০১৯  

পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ব্যাংক ক্লাস্টার এ্যাপ্রোচ‘ পদ্ধতি ব্যবহারের জন্যে ব্যাংক গুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। অর্থাৎ যে এলাকায় যে শিল্পের জন্যে বিখ্যাত বা ভৌগোলিক কারণে যে এলাকায় যে শিল্প গড়ে উঠেছে সে এলাকার ব্যাংক গুলোকে ঐ শিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে এসএমই ঋণ বিতরণ করতে হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কিছু কিছু বিশেষ শিল্পপণ্য উৎপাদনের জন্য অনুকুল পরিবেশ, আবার কিছু এলাকা বিশেষ শিল্পপণ্য উৎপাদনের জন্যে বিখ্যাত। এগুলোকে খুঁজে বের করে এলাকাভিত্তিক শিল্প ক্লাস্টার উন্নয়ন করার লক্ষে সরকার সর্বত্র আর্থিক সহায়তা করছেন। এছাড়াও বিসিক তথ্যানুযায়ী দেখা যায় যে, গত পাঁচ বছরে অর্থাৎ ২০০৯-১০ থেকে ২০১৩-১৪ সাল পর্যন্ত বিসিকে ঋণ সহায়তা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের নিজস্ব বিনিয়োগ ও সরকারের পৃষ্টাপোষকতায় দেশব্যাপী ৫০ হাজার ৭৩০টি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পইউনিট স্থাপিত হয়েছে। এসব শিল্পইউনিটে মোট বিনিয়োগ হয়েছে ৯ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭৫৩ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সম্ভব হয়েছে। এর আওতায় পিরোজপুরের স্বরুপকাঠি বিসিক শিল্প নগরীতে বিভিন্ন কুটির শিল্পে প্রত্যক্ষ-পরক্ষ ভাবে প্রায় ২৩ হাজার নারী-পুরুষ কর্মসংস্থান খুজে পেয়েছেন। দারিদ্র ও বৈষম্য হ্রাসকরণের লক্ষে ষাটের দশকে স্থাপিত শিল্পনগরী সমূহে শিল্প স্থাপন, উৎপাদন ও কর্মসংস্থান তৈরীতে বিভিন্ন শ্রেনীর ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিসিক শিল্পে উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা করছে সরকার। এরই আওতায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জনপদের শিল্প নগরী হিসেবে ঐতিহ্যবাহী উপজেলাটির নাম স্বরূপকাঠি। এক সময় বিভিন্ন ধরণের কুঠিরশিল্প আর কাঠব্যবসার উপর নির্ভর করতো এ উপজেলায় ৯০ শতাংশ শ্রমজীবি মানুষের জীবিকা। একযুগ আগেও এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কাঠশিল্পসহ বাশঁ বেতের তৈরি তেজসপত্র ও পাটি তৈরীর কারখানায় ছিল ভরপুর। দেশী-বিদেশী অত্যাধনিক প্রযুক্তির প্লাষ্টিক সামগ্রী আর ম্যালামাইনের দাপটে স্বরুপকাঠির শতাধিক কুটিরশিল্প বিলুপ্তির পথে। বর্তমান সরকারের ক্ষুদ্রঋনের আওতায় স্বরুকাঠি বিসিক শিল্পনগরীতে যেসব শিল্পকারখানায় বন্ধ রয়েছে সেসব শিল্প কারখানাগুলো পূণরায় চালুর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। স্বরুপকাঠি বিসিক শিল্প নগরীতে কুটিরশিল্প কারখানাগুলো চালু রাখতে ও বাজারজাত পণ্য উৎপাদনে কাঁচামালের পর্যাপ্ত চাহিদা অনুযায়ী অর্থনৈতিক সহায়তা করছে সরকার। এরপরেও স্বরুপকাঠি(নেছারাবাদ) বিসিক শিল্পনগরীতে বিভিন্ন প্রতিকুলতার মধ্যে যেসব কুটিরশিল্প চালু রয়েছে এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলোঃ পাটিশিল্প, চাটাইশিল্প, প্লাস্টিক বোতল রিসাইক্লিংশিল্প, কাঠশিল্প, বেতশিল্প, বাঁশশিল্প, ছোবড়াশিল্প, ঝাড়–শিল্প।
আগামী ২০২১ সালের মধ্যে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষে সাম্প্রতিক ঘোষিত হয়েছে রূপকল্প ২০২১। এ লক্ষ্য অর্জনের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি ও পরিকল্পিত শিল্পায়ন এবং কুটিরশিল্প বাস্তবায়ন। দেশের শিল্পায়ন অর্থনীতির ও কাঠামোগত রূপান্তর, অর্থনৈতিক ভিত্তির বৈচিত্রায়ন, ক্রমবর্ধমান উৎপাদনশীলতা অর্জন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জনগণের আয় ও জীবন যাত্রার মানোন্নয়নের মাধ্যমে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন নিশ্চিত করতে অবদান রাখছে বর্তমান সরকার। সরকার শিল্পায়নকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচনা করছে এবং উপযোগীয় সব ধরণের শিল্পের পরিবেশবান্ধব বিকাশ ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে সরকার।