• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

সর্বোচ্চ ফ্রিল্যান্সার সরবরাহ সূচকে বিশ্বে দ্বিতীয় বাংলাদেশ

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৯  

ফ্রিল্যান্সিং সূচকে বাংলাদেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। সংস্থাটি বলছে, সর্বোচ্চ ফ্রিল্যান্সার সরবরাহ করে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসেছে। বাংলাদেশে ৫ লাখের অধিক ফ্রিল্যান্সার কাজ করছেন এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন বলে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ফ্রিল্যান্সার বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ হচ্ছে। যার সংখ্যা ৫ লাখেরও অধিক। ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে বাংলাদেশের তরুণরা প্রতিবছর ১০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে। দ্রুত ডিজিটালাইজেশন, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ও সরকারি-বেসরকারি উদ্যােগের কারণে ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বাড়ছে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।

তথ্যসূত্র বলছে, এর আগে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন মাসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের বৈশ্বিক ধারা (ট্রেন্ড) প্রকাশ করেছিল ফ্রিল্যান্সারদের অর্থ লেনদেনের জনপ্রিয় অনলাইন মাধ্যম পেওনিয়ার। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক গিগ অর্থনীতির সূচক প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের স্থান অষ্টম।

গিগ অর্থনীতির সংজ্ঞায় বলা হয়েছিল, এটি এমন একটি পরিবেশ, যেখানে অস্থায়ী চাকরি বেশি থাকবে আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্বল্পমেয়াদি চুক্তিতে স্বতন্ত্র কর্মীদের (ইনডিপেনডেন্ট ওয়ার্কার্স) নিয়োগ দেবে। তারা পূর্ণকালীন কর্মীর চেয়ে মুক্ত পেশাজীবী ফ্রিল্যান্সারদের গুরুত্ব বেশি দেবে।

পেওনিয়ার জানাচ্ছে, তাদের নেটওয়ার্কে থাকা বিশ্বব্যাপী তিন লাখের বেশি ফ্রিল্যান্সার, সেবাদাতা ও আউটসোর্সিং পেশাজীবীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে ফ্রিল্যান্সিং অর্থনীতির সূচকটি তৈরি করা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী সেবাদাতারা অন্য বয়সের কর্মীদের তুলনায় আয় করেন বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের পেশাজীবীদের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং জীবনযাপনে আগ্রহ বাড়ায় গিগ অর্থনীতি বড় হচ্ছে ও অনলাইনে মার্কেটপ্লেসের আকার বাড়ছে। গত বছরের এ সময়ের তুলনায় চলতি বছরে এশিয়ার ফ্রিল্যান্সারদের আয় দ্বিগুণ বেড়েছে। ইউক্রেনে প্রচুর শিক্ষিত তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী দেশটির আউটসোর্সিং পেশাকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন এবং সেখানকার অর্থনীতি আরও মজবুত হয়েছে। পেওনিয়ারের প্রতিবেদনে আয় বৃদ্ধির দিক থেকে গত বছরের তুলনায় এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২৭ শতাংশ। সে কারণে বাংলাদেশ অষ্টম স্থানে রয়েছে। গত এক বছরে ফ্রিল্যান্সিংয়ে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি ৭৮ শতাংশ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। এরপর ৫৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে আছে যুক্তরাজ্য। ব্রাজিলের প্রবৃদ্ধি ৪৮ শতাংশ। এক বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে পাকিস্তান, ইউক্রেন ও ফিলিপাইনের। ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ায় বাংলাদেশের ঠিক ওপরে আছে ভারত। বাংলাদেশের পর ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে রাশিয়া ও ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে অবস্থান করছে সার্বিয়া।

অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমানের ভাষ্য, নতুন প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে গিগ অর্থনীতির মতো বিষয়ে আগ্রহ বাড়ছে। গিগ অর্থনীতিতে কাজের বিষয়গুলো কতটা সংগতিপূর্ণ বা টেকসই হচ্ছে কি না, তা ভেবে দেখতে হবে। ফ্রিল্যান্সারদের হাত ধরে বাংলাদেশে গিগ ইকোনমির ধারাটি শুরু হয়েছে। এটা কতটা প্রভাব ফেলবে, তা গবেষণা জরুরি।

পেওনিয়ারের বাংলাদেশে ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিদ হাসান বলেন, প্রতিবেদন অনুযায়ী বৈশ্বিক গিগ ইকনোমি সূচকে বাংলাদেশ শীর্ষ দশ দেশের মধ্যে স্থান পেয়েছে। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক দুর্দান্তভাবে কাটানোয় বিশ্বের ফ্রিল্যান্সার হাব হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। গিগ অর্থনীতি ছাড়াও অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বৈশ্বিক বাজারে পণ্য বিক্রি করছে। তাদের কাজে সহযোগিতা করছে পেওনিয়ার। উন্নয়নশীল বাজার হিসেবে বাংলাদেশ দারুণ প্রবৃদ্ধি করছে।