• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

‘সিআইডি’ দেখে প্রবাসীদের বাড়িতে ডাকাতি করত তারা

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১ এপ্রিল ২০২১  

আঙুলের ছাপ ও চেহারা যাতে দেখা না যায় সেই কৌশল অবলম্বন করে ডাকাতির সময় হাতে ও মুখে গ্লাভস পরে নিত ডাকাত চক্রটি। ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখে তারা এই কোৗশল শিখেছিল। গত ১০ বছর ধরে খুলনা ও রংপুর এলাকায় ডাকাতি করার এক পর্যায়ে একাধিক মামলার আসামি হওয়ায় তারা ডাকাতি শুরু করে ঢাকার আশেপাশের জেলায়।

ডাকাতির আগে ও পরে চক্রটির সদস্যরা বিভিন্ন আ্যপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করত। তারা ঢাকার কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও দোহারের প্রবাসীদের বাড়িতে ডাকাতি করত। এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রুবেল ফরাজী ওরফে রিফাত হাওলাদার (২৮), সোহাগ শেখ ওরফে রুবেল ও মো. সোহেল (২৪)।

রাজধানীর খিলগাঁও ও শাহজাহানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুধবার (৩১ মার্চ) রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির সময় ব্যবহৃত হাফ প্যান্ট, গেঞ্জি, গ্রীল ভাঙার যন্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন।

তিনি বলেন, ‘ডাকাত চক্রটি গত কয়েক বছর ধরে ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে প্রবাসীদের বাসা-বাড়িতে অভিনব কৌশলে ডাকাতি করে আসছিল। এই চক্রের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইল সিমের পরিবর্তে বিভিন্ন আ্যপস ব্যবহার করত। এছাড়া তারা বাসা-বাড়ির গ্রীল ও জানালা কেটে মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ডাকাতি করত। ডাকাতির কোনো ছাপ যাতে না থাকে মূলত সেজন্যই তারা ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখে মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করত।’

jagonews24

তিনি বলেন, ‘ঢাকার দোহার, কেরানীগঞ্জ ও নবাবগঞ্জের অনেকেই প্রবাসে থাকে। মূলত প্রবাসীদের বাড়ি টার্গেট করে ডাকাতি করত তারা। যাতে টাকা, স্বর্ণালংকার ও ডলার পাওয়া যায়।’

অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘গ্রেফতার হওয়া রুবেল ফরাজী ওরফে রিফাত হাওলাদারের বিরুদ্ধে রংপুরের বিভিন্ন থানায় সাতটি মামলা রয়েছে। সোহাগ শেখ ওরফে রুবেল ঝালকাঠিতে অস্ত্র আইনে মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং সোহেলের বিরুদ্ধে খুলনা, যশোর ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’

তিনি জানান, এই চক্রের একজন মূলহোতা রয়েছে। সে অনেক চতুর। কবে, কোথায়, কোন বাসায় ডাকাতি করতে হবে তিনিই মূলত নেতৃত্ব দিতেন। যাকে এখনও আমরা গ্রেফতার করতে পারিনি। তবে তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডাকাতদের গ্রেফতারের বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘গত ৪ মার্চ রাত ৩টার দিকে সাত-আটজন ডাকাত কেরানীগঞ্জের রামেরকান্দা গ্রামে শাহবুদ্দিন ওরফে সাহার বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে ধারালো চাপাতি ও দায়ের ভয় দেখিয়ে ১১ লাখ টাকা, ৩০০ ইউএস ডলার ও ৩৩ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হয়। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ডাকাত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘এ চক্রের মূলহোতাসহ বাকি সদস্যদেরকেও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’