• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

সূরাতুল ফাতিহা থেকে আমরা যা শিখিনি

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৮ আগস্ট ২০১৯  

 

রসূলুল্লাহ (সা.) যখন সাড়ে চৌদ্দশত বছর পূর্বে মুশরিকানে মক্কার নিকট তাঁর প্রতি নির্দেশিত ফরজ পালনে আল-কুরআন পাঠ করে শোনাতেন। 


 
لَقَدۡ مَنَّ اللّٰہُ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اِذۡ بَعَثَ فِیۡہِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡ اَنۡفُسِہِمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِہٖ وَ یُزَکِّیۡہِمۡ وَ یُعَلِّمُہُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ ۚ وَ  اِنۡ کَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۱۶۴﴾ 

অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের প্রতি একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেয়। 

যদিও তারা ইতিপূর্বে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে ছিল। (৩ ইমরান ১৬৪ আরও দেখুন, ১৮ ইসরা ১০৬, ২৮ কাসাস ৫৯, ৬২ জুমুআ ২, ৬২ তালক ১১) তখন তার পাঠ শ্রবণ করে সাধারণত দুই প্রকার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতো যেমন :

(১) এটা কী অসাধারণ কালাম! এমন করে কখনো আমরা আরবি ভাষা ব্যবহারের কথা ভাবিনি তো? আমাদের কবি-সাহিত্যিকরাও তো এমন অসাধারণ বাক্য গঠন ও চয়ন করতে পারে না! এমন কঠিন কালাম, এভাবে হৃদয়স্পর্শী করে কাউকে কোনোদিন বলতে শুনিনি! এমন কালামতো মানুষের পক্ষে বানানো সম্ভব নয়। নিশ্চিত এ কালাম تنزيل رب العلمين রব্বুল আলামীনের বাণী। অতএব আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি لااله الا الله আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। 

(২) সর্বনাশ, নিশ্চিত এটা কোনো জাদু! এটা কোনো মানুষের পক্ষে তৈরি করা অসম্ভব। বোঝা যাচ্ছে এটা নিশ্চিত ঐশিবাণী। তবে এটা গ্রহণ করে নিলে আমরা আর পৌত্তলিক থাকতে পারব না। নেশা করতে পারব না, জুয়া আর লটারি খেলতে পারব না, দাসগুলোর সাথে যা ইচ্ছে তা করতে পারব না। এ বাণী মান্য করলে আমাদের ঘর ও গোত্রের লোকেরা আমাদের বের করে দেবে। আমাদের ইজ্জত, সম্মান, প্রভাব, পতিপত্তি ধুলোয় মিশে যাবে। এ পথে আহ্বানকারীকে যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করতে হবে। আজকেই আমি আমার সঙ্গপঙ্গ নিয়ে এই লোকটাকে.......!

কুরআন কারীমের অনুবাদ বাংলা অথবা ইংরেজিসহ অন্য যেকোনো ভাষায় পড়ে এমন প্রতিক্রিয়া আপনাদের অন্তরে হয়েছে কি? হয়নি। কারণ কোনো তর্জমা মহান রবের বাণীর মর্যাদা, গম্ভীর্য, অলৌকিকতা প্রকাশ করতে সক্ষম নয়। কিতাবুল্লাহর প্রত্যেকটি শব্দ এবং আয়াতের অর্থ ব্যপকর্থক, প্রত্যেক শব্দ চয়ন কত যে সূক্ষ্ম, তা আমরা অনুধাবন করেতে পারি না। 

রাব্বুল আলামীন যদি আমাদের মাতৃভাষায় তাঁর কিতাব অবতীর্ণ করতেন তাহলে আমরা তাঁর এক একটি শব্দ শুনতাম আর হতচকিত হতাম। দেশের কবি সাহিত্যিকরা তার নিকটতম কিছু তৈরি করতে পারত না। তখন দেখা যেত আরবরা আমাদের বাংলা ভাষার কিতাবের বাণী শুনে হাই তুলত। 

যেমনটি এখন আরবি ভাষায় কুরআন শুনে এখন আমরা করি। এজন্যই আল-ফাতিহা প্রত্যহ সালাতে অনেকবার শুনে-পড়েও আমরা তার গভীরতা অনুভব করতে পারি না। কারণ 'তাদাব্বুর' তথা বুঝে পড়া আর না-বুঝে পারার মাঝে আকাশ-পাতাল প্রভেদ আছে।