• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
আধুনিক প্রযুক্তির মেট্রোরেল যেভাবে ধ্বংস করেছে, মানতে পারছি না যে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে, দেশবাসীকেই বিচার করতে হবে মেট্রো স্টেশন যেভাবে ধ্বংস করেছে, মানতে পারছি না: প্রধানমন্ত্রী নাশকতার ঘটনায় অপরাধীদের ছাড় না দেয়ার দাবি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের ধারণা ছিল একটা আঘাত আসবে: প্রধানমন্ত্রী তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ২১ জুলাই স্পেন যাবেন প্রধানমন্ত্রী আমার বিশ্বাস শিক্ষার্থীরা আদালতে ন্যায়বিচারই পাবে: প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রাণহানি ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতে হবে : প্রধানমন্ত্রী পবিত্র আশুরা মুসলিম উম্মার জন্য তাৎপর্যময় ও শোকের দিন

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২৪  

ঘূর্ণিঝড় রেমাল বাংলাদেশে আঘাত হানার পর মোট ৪০ ঘণ্টা স্থল নিম্নচাপ আকারে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে অবস্থান করেছে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই ঝড়ের তাণ্ডবের পর এখন বেরিয়ে আসছে ক্ষত।  রেমালের আঘাতে মঙ্গলবার (২৮ মে) পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০।

খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ২৬৩টি স্থানে বেড়িবাঁধের ৪১ কিলোমিটার এলাকা বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ও পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে দেড় লাখ ঘরবাড়ি। ভেসে গেছে কয়েক হাজার মাছের ঘের ও পুকুর। দক্ষিণাঞ্চলের অনেক উপজেলা মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন ছিল।

এবারও ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল গতিবেগ ও জলোচ্ছ্বাসের চাপ ঢাল হয়ে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। কিন্তু হরিণ, বন্য শূকরসহ মারা গেছে সুন্দরবনের বেশ কিছু বন্য প্রাণী। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে ৩৯টি হরিণের মরদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। আর অসুস্থ ১৭টি হরিণকে চিকিৎসা দিয়ে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে গাছ ও ঘরচাপা পড়ে গতকাল ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ভোলায় তিনজন, পটুয়াখালীতে দুজন, ঝালকাঠি, কুষ্টিয়া, খাগড়াছড়ি, বাগেরহাট ও নোয়াখালীর হাতিয়ায় একজন করে মারা গেছেন।

এর আগে গত সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড়ে ১০ জন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন। গত তিন দিনে এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২০। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৬ বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত আটটায় সরকারিভাবে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়ে ১৯টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার সংখ্যা ১০৭। আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৮৫৮টি ঘরবাড়ি। সম্পূর্ণ ঘরবাড়ির সংখ্যা ৪১ হাজার ৩৩৮।

ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার ১৪৩টি স্থানে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের পরিমাণ প্রায় ২১ কিলোমিটার। বাঁধগুলো সংস্কার করতে ২৬ কোটি টাকার মতো খরচ হবে বলে জানিয়েছেন পাউবো খুলনার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সাহা। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে খুলনার কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলায়। ইতিমধ্যে প্রায় সব জায়গায় পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে।

খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ১ লাখ ৩২ হাজার ৭৮৪টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বিভাগের মোট ৪৩২টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভা দুর্যোগকবলিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১২ লাখ ৬৯ হাজার ১৫৪ মানুষ। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে খুলনা জেলায়। এ জেলায় ৭৬ হাজার ৯০৪টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৫২ হাজার ২০০। খুলনা নগরে অসংখ্য গাছ উপড়ে গেছে।

ঘূর্ণিঝড়ে সাতক্ষীরায় ১ হাজার ৪৬৮টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালীগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে সাতক্ষীরা শহরেও অসংখ্য গাছ উপড়ে পড়েছে।

বাগেরহাট জেলায় অন্তত ৪৫ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন সেখানকার জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরিশাল বিভাগে প্রাথমিক হিসাবে কৃষি খাতে ৫০৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বরিশাল জেলায় ক্ষতি হয়েছে ১১০ কোটি ৩৩ লাখ টাকার। বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ে বিভাগের ছয় জেলায় কৃষি খাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ১৮ হাজার ২০৯ হেক্টর জমির ফসল। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মুরাদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১১০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল, ৯ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও শিশুদের জন্য দেড় কোটি ও গবাদিপশুর খাবারের জন্য দেড় কোটি টাকা আলাদাভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।