• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:

পাওনা ২০ হাজার টাকা না দেওয়ায় হত্যা করা হয় চা দোকানিকে

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২  

একসঙ্গে এলইডি লাইটের ব্যবসা করতেন জাকির হোসেন ও ইয়াছিন আলী। কিছু দিন পর দুই জনই ব্যবসা ছেড়ে দেন। তবে ব্যবসায়িক লেনদেনের ২০ হাজার টাকা ইয়াছিনের কাছে পাওনা ছিল তার। কয়েকবার তাগাদা দিয়েও টাকা পাননি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ইয়াছিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। কাজ আছে বলে রাতে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে মাথা বিচ্ছিন্ন করেন জাকির। এরপর দেহ ও বিচ্ছিন্ন মাথা আলাদা জায়গায় ফেলে যান।

হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন শনিবার দিবাগত রাতে জাকিরকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর এলাকার একটি সেতুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়। সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৬ এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোসতাক আহমদ। জাকির হোসেন খুলনা শহরের বাচ্চু শেখের ছেলে। সাতক্ষীরা শহরের গড়েরকান্দা এলাকার বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানেই বসবাস করে আসছিলেন।

মোসতাক আহমদ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জাকির জানিয়েছেন, পাঁচ বছর আগে ইয়াছিনের সঙ্গে ভ্যানে ঘুরে ঘুরে এলইডি লাইট বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু সারাদিনে মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকা লাভ হওয়ায় ব্যবসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন জাকির। ইয়াছিন কিছু দিন ব্যবসা করে আবারও চায়ের দোকান দেন। ব্যবসার সুবাদে তার কাছে ২০ হাজার টাকা পেতেন জাকির। কয়েকবার তাগাদা দেওয়ার পরও ওই টাকা পরিশোধ করেননি। এ কারণে তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩০ আগস্ট রাত ৯টার দিকে ঘর তোলার কাজ আছে বলে ভ্যানে করে ইয়াছিনকে শহরের বাইপাস সড়কে নিয়ে যান। গল্প করে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন জাকির। রাত গভীর হলে ১২টার পর সুযোগ বুঝে ইয়াছিনের গলায় দা দিয়ে আঘাত করেন। পড়ে গেলে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। একপর্যায়ে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন লাশ টেনে সড়কের পাশে জলাশয়ে ফেলে দেন। আর মাথা নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি কালভার্টের নিচে বস্তাবন্দি করে ফেলে চলে যান জাকির।

র‍্যাব-৬ এর পরিচালক আরও জানান, পরদিন ৩১ আগস্ট এলাকার লোকজন রাস্তার পাশে মস্তকবিহীন জলাশয়ে লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ইয়াছিলেন স্ত্রী বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করেন র‍্যাব সদস্যরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার দিবাগত রাতে জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সকালে ইয়াছিনের খণ্ডিত মস্তক ও হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ আগস্ট সকালে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ শহরের বকচরা এলাকায় বাইপাস সড়কের পাশে একটি জলাশয় থেকে চা বিক্রেতা ইয়াছিনের মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাসলিমা খাতুন বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।