• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

পিরোজপুর সংবাদ

নিজে খুন থেকে বাঁচতে আরেক খুন!

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০২৩  

সোনা চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার লেনদেন নিয়ে ছিল মনোমালিন্য। এরমধ্যে মাদকের আড্ডায় দিয়েছিলেন সোনা কিনতে যাওয়ার প্রস্তাব। কিন্তু সেই প্রস্তাবে জেগে উঠে হত্যার পরিকল্পনার সন্দেহ। ফলে ব্যাচেলর বাসায় দলবল নিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয় ব্যবসায়িক অংশীদার সুমন সাহাকে। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নগর পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। একইদিন ভোরে নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে, রোববার রাতে কোতোয়ালি থানার রিয়াজউদ্দিন বাজারের আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী রোডের আরএস টাওয়ার নামের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা করেন নিহতের মা।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চন্দনাইশ উপজেলার ইছহাক মিয়ার বাড়ির ইছহাক মিয়ার ছেলে মফিজুর রহমান দুলু, কোতোয়ালি থানার লোকমান সওদাগর বাড়ির মো. গোলাম মোস্তফার ছেলে মো. মামুন ও একই থানার আব্দুল সওদাগর বাড়ির আব্দুল আলী সওদাগরের ছেলে নুর হাসান রিটু।

ডিসি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মাদকের আড্ডায় বসে দুলুকে সোনা কেনার জন্য টেকনাফ নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন নিহত সুমন। সেই বিষয়টি মামুন জানতে পেরে দুলুর মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেন, বলেন- দুলুকে মারার জন্য লোক ঠিক করেছেন সুমন। এমনকি কয়েকজন লোক দিয়ে দুলুর রিয়াজউদ্দিন বাজারস্থ অফিসে করিয়েছেন রেকিও।

এ বিষয়ে সন্দেহ জাগায় রোববার রাতে দুলুর সেই রিয়াজউদ্দিন বাজারস্থ অফিসের কক্ষে মাদকসেবন করতে গেলে সেখানে সুমনকে আটকে রাখেন দুলু এবং তাকে মারার জন্য কাকে ঠিক করেছেন, অফিস কেন রেকি করিয়েছেন- এসব বিষয়ে বারবার জিজ্ঞেস করতে থাকেন। কিন্তু সুমন কোনো তথ্য না দেওয়ায় দুলু ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি, লোহার রড, প্লাস্টিকের পাইপ, লোহার প্লাস দিয়ে তাকে মারধর করে তথ্য বের করার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে মামুন ও রিটুদের দিয়ে মারধর করিয়েও সুমনের কাছ থেকে তথ্য বের করার চেষ্টা করেন দুলু। এতেও ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে সুমনের হাত-পা বেঁধে এলোপাতাড়ি মারধর করে তাকে হত্যা করেন।

ডিসি বলেন, নিহত সুমন ও গ্রেফতারকৃতরা রিয়াজউদ্দিন বাজারস্থ ঐ ভবনের একটি কক্ষে মাদকসেবন করতেন। সেই কক্ষেই সুমনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার ভোরে তাদের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তখনও তারা নেশাগ্রস্ত ছিলেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান- দীর্ঘদিন ধরে দুলুর সেই ভাড়াকৃত কক্ষে যাওয়া-আসা করতেন সুমন। সেখানে সবাই একসেঙ্গে মাদকসেবন ও আড্ডা দিতেন। দুলু ও সুমন সোনা চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে লেনদেন হয়। লেনদেনের জেরে হয় বাগবিতণ্ডা। সুমনের কাছ থেকে টাকা পাওনা ছিলেন দুলু। সেই টাকা না দেওয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল।